Skip to main content
অপদার্থের রোজনামচা (BENGALI STORY AND POETRY)

অপদার্থের রোজনামচা (BENGALI STORY AND POETRY)

By Swarnendu Roy

বাংলা ভাষায় বিভিন্ন নতুন লেখকদের লেখা পড়তে আর শুনতে ভালোবাসেন? তাহলে শুনতে পারেন "অপদার্থের রোজনামচা"। সমাজের চোখে, কাছের মানুষের চোখে যারা অপদার্থ মানে ওই good for nothing আর কি। তাদের দিনযাপনের রোজনামচা র টুকরো টুকরো ছবি র কোলাজ আমার এই podcast. বিভিন্ন নতুন ও পুরনো লেখক দের চিন্তা ভাবনা একটু অন্য আঙ্গিকে উপস্থাপন করার একটি অন্যরকম প্রচেষ্টা। ভালো লাগলে পাশে থাকবেন।
- অপদার্থ
Available on
Apple Podcasts Logo
Google Podcasts Logo
Pocket Casts Logo
RadioPublic Logo
Spotify Logo
Currently playing episode

Episode - 39: জাতিস্মর - কলমে : শ্রীজাত । কন্ঠে : অপদার্থ।

অপদার্থের রোজনামচা (BENGALI STORY AND POETRY)Nov 14, 2020

00:00
01:55
Episode - 39: জাতিস্মর - কলমে : শ্রীজাত । কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode - 39: জাতিস্মর - কলমে : শ্রীজাত । কন্ঠে : অপদার্থ।

পুরনো স্মৃতি র রোমন্থন।
Nov 14, 202001:55
Episode : 38 ব্যর্থতা : কলমে - অভীক রায়। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode : 38 ব্যর্থতা : কলমে - অভীক রায়। কন্ঠে : অপদার্থ।

সময়ের সাথে ব্যর্থতা র সংজ্ঞা বদলে যায়।
Nov 07, 202002:00
Episode 37 : শেষ বসন্ত । কলমে : সালেহ্ মজুমদার। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 37 : শেষ বসন্ত । কলমে : সালেহ্ মজুমদার। কন্ঠে : অপদার্থ।

একটি শেষ হয়ে যাওয়া বসন্তের গল্প।
Oct 12, 202001:17
Episode 36: ঘুম । কলমে : অভীক রায়। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 36: ঘুম । কলমে : অভীক রায়। কন্ঠে : অপদার্থ।

একটি অন্যরকম উপস্থাপন।
Oct 09, 202001:16
Episode 35: Cell Phone । কলমে : শ্রীজাত। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 35: Cell Phone । কলমে : শ্রীজাত। কন্ঠে : অপদার্থ।

একটি প্রেমের গল্প।
Oct 08, 202001:13
Episode 34 : একা । কলমে : অভীক রায় । কন্ঠে : অপদার্থ

Episode 34 : একা । কলমে : অভীক রায় । কন্ঠে : অপদার্থ

একা থাকার গল্প।
Oct 06, 202001:00
Episode 33: Depression । কলমে : কৃপা বসু। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 33: Depression । কলমে : কৃপা বসু। কন্ঠে : অপদার্থ।

Depression এ হার না মানার গল্প।
Oct 02, 202003:14
Episode 32: কথা। কলমে : অভীক রায়। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 32: কথা। কলমে : অভীক রায়। কন্ঠে : অপদার্থ।

সামান্য একটা কথা, অথচ দেখ তোমাকে দিয়ে বলাতে পারলাম না।
Oct 01, 202002:21
Episode 31: অসুখ । কলমে: অভীক রায়। কন্ঠে: অপদার্থ।

Episode 31: অসুখ । কলমে: অভীক রায়। কন্ঠে: অপদার্থ।

মিথ্যে বলাটা কি একটা অসুখ? অভীক রায় এর লেখা অসাধারণ একটি অনুগল্প।
Sep 29, 202001:17
Episode 30: চোখ ।। কলমে : রুদ্র গোস্বামী। কন্ঠে : অপদার্থ

Episode 30: চোখ ।। কলমে : রুদ্র গোস্বামী। কন্ঠে : অপদার্থ

শুনে দেখুন আশা করি ভাল লাগবে।
Sep 03, 202001:01
Episode 29: প্রথম অধ্যায়। কলমে: অনুব্রতা গুপ্ত। কন্ঠে: পারমিতা।

Episode 29: প্রথম অধ্যায়। কলমে: অনুব্রতা গুপ্ত। কন্ঠে: পারমিতা।

অনুব্রতা গুপ্তর কলমে একটি অন্যরকম লেখা।
Aug 25, 202003:31
Episode 28: এক তরফা ভালোবাসা। কন্ঠে: পারমিতা । কলমে : অভিষেক কর।

Episode 28: এক তরফা ভালোবাসা। কন্ঠে: পারমিতা । কলমে : অভিষেক কর।

একটি এক তরফা ভালোবাসার গল্প।
Aug 24, 202002:52
Episode 27: হঠাৎ দেখা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কন্ঠে: অপদার্থ।

Episode 27: হঠাৎ দেখা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কন্ঠে: অপদার্থ।

রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা। ভাবিনি সম্ভব হবে কোনো দিন....
Aug 21, 202003:10
Episode 26: বিচ্ছেদ। কলমে : সৌরভ মিত্র। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 26: বিচ্ছেদ। কলমে : সৌরভ মিত্র। কন্ঠে : অপদার্থ।

বিচ্ছেদের পর ভালো থাকার গল্প। শুনে দেখুন আশা করি ভাল লাগবে।
Aug 05, 202001:29
Episode 25: দেখা হল বছর চারেক পর : কলমে : সৃজা ঘোষ। কন্ঠে : পল্লবী কুন্ডু।

Episode 25: দেখা হল বছর চারেক পর : কলমে : সৃজা ঘোষ। কন্ঠে : পল্লবী কুন্ডু।

একটি অন্যরকম উপস্থাপন। আশাকরি ভাল লাগবে।
Jul 19, 202005:40
Episode : 24 তিন বছর পর - কলমে: কৃপা বসু। কন্ঠে: অর্চিতা ও অপদার্থ। গানে: রত্নদীপ।

Episode : 24 তিন বছর পর - কলমে: কৃপা বসু। কন্ঠে: অর্চিতা ও অপদার্থ। গানে: রত্নদীপ।

তিন বছর পর। হঠাৎ দেখা ট্রাফিক জ্যাম এ। তারপর কি হল? জানতে হলে গল্পটা সবটা শুনতে হবে।
Jul 17, 202006:32
Episode : 23 আকুতি । কলমে : মাহরাম সুলতানা। কন্ঠে : প্রজ্ঞা রায়।

Episode : 23 আকুতি । কলমে : মাহরাম সুলতানা। কন্ঠে : প্রজ্ঞা রায়।

অন্যরকম লেখনী ও ভিন্ন স্বাদের উপস্থাপন।
Jun 25, 202002:18
Episode 22 : শেষ তাকে দেখেছি কখন? কলমে : বর্ণালী মিত্র। কন্ঠে : অপদার্থ।

Episode 22 : শেষ তাকে দেখেছি কখন? কলমে : বর্ণালী মিত্র। কন্ঠে : অপদার্থ।

#শেষ_তাকে_দেখেছি_কখোন???
#বর্ণালী

সে আমার প্রতিবেশী ছিলো ,
একলা থাকতো , দামী চাকরি করতো ।
ফেসবুক ,ইন্সটা দাপিয়ে বেড়াতো
রঙিন স্বাধীনচেতা ফুরফুরে প্রজাতির মতো ।
আজ এই ফুডচেনে তো কাল ওই পাবে ,
পরশু বন্ধুর পার্টিতে ওয়াইনের গ্লাস হাতে ।
শুধু বন্ধু আর বন্ধু !!
প্রতিবেশীরা বলতো অসম্ভব অহংকারী ,
কথাই বলে নি কখনো , বলে ও না কখনো ।
কেউ কেউ আবার বলতো কি জানি বাবা
এতো খুশি আসে কোথা থেকে ??
তবে আমি ওর রাত জাগা চোখের নীচে
গাঢ় কালিমা দেখেছিলাম ।
লিফটে ,বা প্যাসেজে দেখেছি ওকে কখনো সখনো।
কথা হয়নি , চোখ নামিয়ে ,মুখ ফিরিয়েছে সে
আমি শুধু ওর বড় বড় পল্লব ঘেরা চোখের নীচে
অমাবস্যার আঁধার দেখেছিলাম !!

হঠাৎ সেদিন শুনি সে আর নেই ।
নিজের জীবনের ইতি টেনে দিয়েছে নিজের হাতেই,
তারার ট্যাটু আঁকা কব্জির ওপর
এঁকে দিয়েছে জীবনের গল্প শেষের গভীর এক ক্ষত!
অবাক হয়ে ভাবি
যে দিনে রাতে ব্যস্ত থাকতো অফিসে ,পার্টিতে ,পাবে
কখোন তার জীবনে এতো শূন্যতাও বাসা বাঁধলো ??
যে প্রতিদিন নিত্যনতুন জামাকাপড়ে ,প্রসাধনে
নিজেকে সাজাতো
তার কি নিজের শরীরটার ওপর
একটুও মমতা ছিলো না ??

মুখে মুখে গবেষণা চলছে , গবেষণা !!
আ্যপার্টমেন্টে পুলিশ !!
জিজ্ঞাসা বাদ চলছে ।
প্রথম দেখেছে কাজের মেয়েটি ।
স্যোশাল মিডিয়ায় তার হাজার চারেক বন্ধুর
শ 'চারেক অন্তত গভীর শোক প্রকাশ করেছে ,
কেউ কেউ পোস্ট দিয়েছে
"হতাশায় ভুগলে আমার সাথে গল্প করুন ,পাশে আছি

আসলে সে ছিলো কেমন ??
সুইসাইড নোটে লিখে গেছে অবশ্য তার কিছু কিছু
নিজের সাথে নিজে একা হতে ভয় পেতো সে।
একা হয়ে পড়ার ভয়ে আর নিদ্রাহীন
রাতগুলোকে আ্যভয়েড করতে
খুব সহজ একটা রাস্তা উদ্ভাবন করেছিলো
রাতজাগা বিনোদনের রাস্তা !!

আমরা তখন ওকে ভীষন হিংসে করেছি ,
ফেসবুকে ,ইন্সটাতে হাসি মুখের এডিটিং ছবিতে
চোখের তলায় লুকিয়ে থাকা অন্ধকার খুঁজিনি ,
গবলেটের আগুন রঙা তরলের মধ্যে
ওর নিঃসঙ্গতার ছায়া দেখিনি ।
বুঝিনি , একসাথে হুল্লোড় করা
ছেলেমেয়ে গুলো কেউ ওর কাছের জন নয় ।
ওরা পাল্টেছে প্রতিদিন ,প্রতিরাতে !!
আমরা কেউ ওর পিঠে হাত রেখে বলিনি
"এমন কেনো করো ??
একে কি ভালো থাকা বলে ??"
ওর মাথাটা বুকে টেনে নিয়ে আমরা কেউ বলি নি
"তুমি ভালো নেই । আমি জানি তুমি ভালো নেই ।"

হয়তো কাঁদতো , হয়তো হতাশ হতো , অথবা বিরক্ত
যদি রাগে ফেটে পড়ে আছড়ে ভাঙতো
ওর কাঁচের হৃদয়টা টুকরো টুকরো করে !
আমার ই সামনে ।
বা যদি গায়ে পড়া উপদেশের জন্য অপমান করতো ।নেহাতই প্রতিবেশীর অধিকারে ধমক দিয়ে যদি
বলতাম রোজরোজ যাও কোথায় ??
চোখের নীচে এতো ঘন অন্ধকার কেনো ??
খুব কি রাগ করতো ??
যদি বলতাম ,এসো না বোস দুমিনিট আমার কাছে ।
আমি তো তোমার মায়েরই বয়সী ।

আপসোস হয় আজ , এক গভীর আপসোস !!
পুলিশের "শেষ তাকে দেখেছি কখোন"
প্রশ্নটাকি এড়ানো এতোটাই অসম্ভব ছিলো ???

***************************************
Jun 19, 202004:34
Episode 21 : গীতবিতান: নন্দনা ও রণজয়ের গল্প-পন্ঞ্চম পর্ব। কলমে :অভিষেক কর।কন্ঠে :অর্চিতা ও অপদার্থ।

Episode 21 : গীতবিতান: নন্দনা ও রণজয়ের গল্প-পন্ঞ্চম পর্ব। কলমে :অভিষেক কর।কন্ঠে :অর্চিতা ও অপদার্থ।


রণজয়— খেয়ে আসো যাও। জানি ইচ্ছা করবে না, মনে হবে ভাতের থালা ছুঁড়ে ফেলি দাও... তবু জেনো নিজের ইচ্ছেপূরণের চেয়ে খাওয়ার নষ্ট না করার দায়িত্ব তোমার আজ অনেক বেশি। এইসময় যখন অনেক মানুষ অর্ধেকপেট খেয়ে ঘুমোতে যাচ্ছে! যাতে পরের দিনের চালটা বাঁচাতে পারে! সেই তখন তোমার খাবারের উপর দুঃখবিলাসিতা মানায় না।


নন্দনা— ও চলে গিয়েও এত কষ্ট দিচ্ছে কেন? আমি তো ওর সাতে-পাঁচে থাকি না! ওকে ফোন করিনা, মেসেজ করি না, ওর সাথে ছবিগুলোও লুকিয়ে ফেলেছি... তাও বারংবার আমার নাকের নিচে এসেই প্রেমিকা নিয়ে ঘুরঘুর কেন করছে?


রণজয়— ও যদি তোমাকে লুকিয়ে প্রেম করতো তাহলে কি কষ্টটা কম পেতে? ও নির্লজ্জর মতো প্রেমটা করছে কারণ ওর কাছে তোমাদের সম্পর্কের দামটা আর নেই নন্দনা! যেই মানুষটি বিচ্ছেদের পর সামান্য মানবিকতা পালন করে না প্রাক্তনের প্রতি, তার জন্য তুমি না খেয়ে থাকবে? তুমি ভাবো তো এই একই জিনিস যদি অন্যকারোর সাথে ও করতো! তুমি সেই অন্য মানুষটাকে কী বলতে? বলো কী বলতে?


নন্দনা— ভুলে যেতে।


রণজয়— ভুলে যাও নন্দনা। আমি সবসময় আছি তোমাকে সাহায্য করতে, তবে তোমাকে তো আমার সাথে কোওপেরেট করতে হবে! ডাক্তার যতই ভালো ওষুধ লিখে দিক, ওষুধটা তো খেতে হবে! নাহলে অসুখ সারবে কী করে?


নন্দনা— আপনার এত ধৈর্য্য কী করে? একজনকে এত ভালবাসেন কী করে, যে আপনার ভালবাসার প্রত্যেকটিদিন এমন অতীত নিয়ে শোকপ্রকাশ করে নষ্ট করে দেয়! এত ভালোবাসা যায় আমায়?


রণজয়— কারণ নন্দনা ভালবাসলে আর অন্য কোনো কারণেই ভালবাসা থেকে বিমুখ হওয়া যায় না। “ভেবেছিনু মনে মনে দূরে দূরে থাকি

চিরজন্ম সঙ্গোপনে পূজিব একাকি--

কেহ জানিবে না মোর গভীর প্রণয়,

কেহ দেখিবে না মোর অশ্রুবারিচয়।

আপনি আজিকে যবে শুধাইছ আসি,

কেমনে প্রকাশি কব কত ভালোবাসি।”

: Obhishek Kar


Jun 03, 202002:42
Episode 20 : গীতবিতান। নন্দনা ও রণজয়ের গল্প-চতুর্থ পর্ব। কলমে :অভিষেক কর। কন্ঠে: অর্চিতা ও অপদার্থ।

Episode 20 : গীতবিতান। নন্দনা ও রণজয়ের গল্প-চতুর্থ পর্ব। কলমে :অভিষেক কর। কন্ঠে: অর্চিতা ও অপদার্থ।

#গীতবিতান_২৬

নন্দনা— ভেরী গুড মর্ণিং... ঘুম কেমন হলো?

রণজয়— ঘুমাইনি। সারাক্ষণ তোমার মেসেঞ্জার প্রোফাইলের দিকে তাকিয়েছিলাম। এখন চোখ জ্বালা করছে। হারিয়ে গিয়ে কেউ ফিরে আসলে, তাকে হারিয়ে ফেলার ভয় আর দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

নন্দনা— যে নিজে অনেককিছু হারিয়েছে, সে অন্যকাউকে হেরে যেতে দেয়না। আমি তো নিজে এসে ধরা দিয়েছি রণজয়...

রণজয়— জানি নন্দনা, তবু এই ভয় হওয়া ভালো। এই ভয়টা যতদিন থাকবে, ততদিন তোমাকে সহজলভ্য ভাবতে পারবনা। মানুষ তার দামী সবকিছুকেই ভীষণ যত্ন করে, আগলাতে চায়। তোমার অনেক যত্ন পাওয়া বাকী নন্দনা, ভাবো তোমার রূপকথা এখান থেকেই শুরু। আমি রাজপূত্র নই, তবে রাজকীয় ভালবাসা দিতে রাজী, তুমি শুধু সুযোগ করে দিও।

নন্দনা— এতটা উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি করবেন না যাতে অতীত ভুলে যাই; অতীত আমায় সেই ছোট থেকে কাদাজলে ঘুম পাড়িয়ে এসেছে, হঠাৎ করে মেঘে অভ্যস্ত হতে পারবো না।ঝড়ে কিন্তু আগে বাবুইপাখির বাসাই ভাঙে।

রণজয়— স্বপ্ন দেখানোর মতো আড়ম্বরপূর্ণ কাজ কবিরা পারে, সাধারণ পুরুষরা ঘামে-ভেজা সুখ কিনে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ভাগ্যিস আমি কবিতা লিখিনা! নাহলে তোমার জন্য উপন্যাস লিখতে হতো; এর চেয়ে অনেক সহজ তোমাকে একটা সংসার করে দেবো। সরীঃ দুজনে দুজনকে সংসার গড়ে দেবো।

নন্দনা— ফোন নম্বরটা দিয়েছিলাম অনেকদিন আগেই, ফোন করেননি কেন?

রণজয়— একটা ডিজিট কম টাইপ করেছিলে। চেষ্টা করতেই পারতাম এক এক করে সবকটা নম্বর একবার করে বসিয়ে সঠিকে পৌঁছাতে... তবে মনে হয়েছিল তোমার অনিচ্ছা কে সম্মান জানানোটা আমার ভালবাসার কর্তব্য। মনে হলো ইচ্ছে করেই কম নম্বর দিয়েছো...

নন্দনা— গাধা।
“বাণী নাহি, তবু কানে কানে কী যে শুনি তাহা কেবা জানে।
এই হিয়াভরা বেদনাতে, বারি-ছলোছলো আঁখিপাতে,
ছায়া দোলে তারি ছায়া দোলে
ছায়া দোলে দিবানিশি ধরি মরি মরি॥”
: Obhishek Kar
May 26, 202003:37
Episode 19: গীতবিতান। নন্দনা ও রণজয়ের গল্প - তৃতীয় পর্ব কলমে :অভিষেক কর। কন্ঠে: অর্চিতা ও অপদার্থ।

Episode 19: গীতবিতান। নন্দনা ও রণজয়ের গল্প - তৃতীয় পর্ব কলমে :অভিষেক কর। কন্ঠে: অর্চিতা ও অপদার্থ।

#গীতবিতান_২৫

নন্দনা— আছেন?

রণজয়— ব্লক করে দিয়েছিলে! কোথাও ছিলে না, না ফোন, না ফেসবুক না হোয়াট্স্যাপ... কখনও এতটা পাগলামি করিনি জানো! মায়ের ফোন নম্বর দেবো? মা বাধ্য হয়ে আমাকে মারধর করছিল, তবু আমি একটা শব্দ সেদিনের পর থেকে কারোর সাথে বলিনি। লকডাউনের জন্য বাড়ি থেকোও বেরোনো যায় না যে কিছুক্ষণের জন্য কোথাও নিরূদ্দেশ হয়ে জোরে-জোরে কান্নাকাটি করি... ভালবাসতে পারোনি ঠিক আছে,তবে অপরাধটা জানিয়ে যেতে পারতে নন্দনা। তোমার রজতের মতো স্মার্ট নই হয়তো, তবে আমার মতো সাধারণ মানুষের তোমার মতো গুনী মহিলার প্রেমে পড়াটা যে অপরাধ... সেটাই নাহয় জানিয়ে যেতে! তুমি তো হিউমান রাইট্স নিয়ে পড়েছো তাই না? একজনকে তার দোষ না জানিয়ে শাস্তি দেওয়া কোন দেশের মনুষত্ব?

নন্দনা— আর যাবো না

রণজয়— গেছিলে কেন?

নন্দনা— আশার আলো দেখেছিলাম। ও মেসেজ করেছিল, ভেবেছিলাম ফেরাতে পারবো। আপনিও যেমন আমায় ফেরানোর চেষ্টা করে গেছেন এই পনেরো-ষোলো দিন! আমারও তো অধিকার আছে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার! ভালোবাসি তাকে, তাই ফেরানোর শেষ চেষ্টা...

রণজয়— আবার ছেড়ে চলে গেছে?

নন্দনা— আমি না হেরে এলে আপনি জিততেন কী করে? রজত ফেরেই নি কখনও। অরো বেশি অপমান করতে এসেছিল, বুঝিয়ে দিতে এসেছিল যে আমরা সাধারণ সবাই, অসাধারণ হওয়ার ক্ষমতাটা আমাদের হাতে নেই; সামনের মানুষের রূচিবোধের উপর আমাদের মান-অপমানের ভবিতব্য নির্ভর করে... আর আমি ওর কাছে মানুষ বলেই গণ্য নই।

রণজয়— আমি কি আবার হারিয়ে ফেলবো তোমায় নন্দনা?

নন্দনা— এবার হারালে নিজের প্রেমিকা হিসেবে হারাবেন, যেখানে ছেড়ে যাওয়ার আগে আমি আপনার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবো। রণজয় আমি কি আপনার সাথে থেকে, আরেকবার নিজেকে প্রেমিকা প্রমাণ করতে পারি? এবারও যদি হেরে যাই, আপনিও কি ওর মতোই অত অপমান করবেন?

রণজয়— একটা গান শিখেছি শোনো,
“তুমি মোর আনন্দ হয়ে ছিলে আমার খেলায়–
আনন্দে তাই ভুলেছিলেম, কেটেছে দিন হেলায়।
গোপন রহি গভীর প্রাণে আমার দু:খসুখের গানে
সুর দিয়েছ তুমি, আমি তোমার গান তো গাই নি॥”
: Obhishek Kar
May 18, 202004:45
Episode 18: আলাপ। কলমে : সূর্য। কন্ঠে : অর্চিতা ও অপদার্থ।

Episode 18: আলাপ। কলমে : সূর্য। কন্ঠে : অর্চিতা ও অপদার্থ।

🍀

- আচ্ছা! এই এতখানি পথ আপনি একা একা যাবেন!
- কেন! কারও সঙ্গী হওয়ার কথা ছিলো বুঝি!
- নাঃ। মানে যদি আমি যেতে চাই! সঙ্গে!
- বারণ কী করেছি কখনো!
- নাঃ। তবে কখনো ইচ্ছাপ্রকাশ'ও তো করেননি...
- এই বুঝিয়ে বলাটা আমার দ্বারা হয়ে ওঠে না কোনোকালেই।
- আর যদি আজ আমিও মুখ ফুটে না বলতাম!
- আমার একা একা ফিরতে তো ভয় করে না কখনোই!
- আচ্ছা! আর আমার উপস্থিতিটুকু!
সেটার বুঝি কোনো মূল্য নেই!
- আছে তো। আমার তো এর আগে কখনোই এই ঢেউগুলিকে এই সূর্যাস্তের সময় এতখানি অদ্ভুত লাগেনি! অন্ধকারে এই ব্রিজের ধারেও আজ অবধি দাঁড়িয়েও থাকিনি কখনো। আজ আপনি আছেন বলেই হয়তো আমিও এতক্ষণ...
- কিন্তু আপনি যে বললেন আপনি আজ এই ঘাটে প্রথমবার!
- এই নদীর প্রত্যেকটা ঢেউ আমার চেনা। তবে এতবার আসবো ভেবেও এই ঘাটে আসা হয়ে ওঠেনি কোনোদিন।
- আপনি কী জানেন যে আমি আজ এই জীবনে প্রথমবার কোনো নদীর ঘাটে এলাম!
- হুমম। জানি তো...
- জানেন! সেটা কীভাবে!
- আপনি জলের ধারে পা ডুবিয়ে বসে ঢেউগুলোর সাথে যেভাবে খেলা করছিলেন, তাতেই বুঝেছিলাম যে ওদের সাথে আপনার এই সদ্য আলাপ। আর তাছাড়াও কাল যেভাবে আপনি বন্ধুদের মুগ্ধ হয়ে আপনার এই নদীর প্রতি টানের গল্প বলছিলেন তাতেও খানিকটা বুঝেছিলাম বৈকি!
- তার মানে আপনি আমায় সারপ্রাইজ দিতেই আজ এখানে!
- সারপ্রাইজ! তা খানিকটা বলতেই পারেন।
- এই গোটা শহরটাই আমার কাছে বড্ডো নতুন জানেন! কিন্তু এখন এই আপনার হাত ধরে যত চিনছি শহরটাকে ততই যেন আপনি নিজেই আমার কাছে এই শহরটির সমার্থক হয়ে উঠছেন। এই এত অল্পদিনের আলাপ তবু যেন মনে হয় কতযুগের চেনা...
- হয়তো আমাদের দুজনের জীবনেই না পাওয়ার জায়গাগুলো এতখানি এক বলেই...
- আচ্ছা আমি এই যে সর্বক্ষণ এত বকবক করি! আপনার বিরক্তবোধ হয় না!
- এই অতি ব্যস্ততার জীবনে দু'দন্ড জিরিয়ে বসে কথা বলার মানুষের যে বড্ডো অভাব। এই যে দেখুন না আমাদের চারিপাশে তো কত মানুষই বসে রয়েছেন সেই বিকাল থেকে। এনাদের কারোর চোখ গঙ্গার দিকে আর নয়তো নিজের মোবাইলে। অথচ দেখুন, আপনি প্রায় শেষ দশ মিনিট ঠায় আমার চোখের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। মাঝে কথা বলতে বলতেই তিনবার পলক ফেলেছেন যদিও।
- আমি! আপনার চোখের দিকে! কই! না তো! মানে!
- থাক থাক। আর লজ্জা পেতে হবে না। আমি কিন্তু কিছু মনে করিনি তাতে।
- না আসলে আপনি না এত গুছিয়ে কথা বলেন যে আমার তো মনে হয় যে দুই গালে হাত দিয়ে বসে কেবল শুনি।
- হ্যাঁ সে তো নিশ্চয়ই শুনবেন, কিন্তু এইবেলা যে আমাদের রওনা দিতে হবে বাড়ির দিকে।
- এ'বাবা দেখেছেন গল্প করতে করতে সময়ের খেয়ালই নেই! ইশশ! কতটা দেরী করিয়ে দিলাম আপনার!
- না, আসলে এখানে দাঁড়িয়ে এই নদীর হাওয়া গায়ে মাখতে যে আমারও খুব একটা খারাপ লাগছে তা কিন্তু নয়। তবে...
- তবে আর কী! কাল তবে আরেকবার এই নদীর হাওয়া গায়ে মাখতে তো আসাই যায়, তাই না! আমিও বরং দুই গালে হাত দিয়ে বসে বাকীকথাগুলো... না মানে, অবশ্যই আপনি যদি রাজি থাকেন তবেই...
- হুমম! তা যায়। কিন্তু কাল আসার জন্যে তো আমাদের আজকে বাড়ি ফিরতে হবে মশাই
- ওহঃ হ্যাঁ হ্যাঁ! চলুন, হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি বরং...

...

- আচ্ছা আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো!
- নিশ্চয়। করুন না।
- আপনি এই যে এতবার আসতে চেয়েও এই ঘাটে আপনার আসা হয়ে ওঠেনি কখনোই। অথচ দেখুন আজ আমার জীবনের প্রথমবারের নদীভ্রমণের সাক্ষী হয়ে রইলেন আপনি, এবং সেটাও কিনা কোথায়! সেই একই ঘাটে। পুরোটাই কী কাকতলীয় বলে মনে হয় আপনার!
- হুমম নাঃ। হয়তো সম্পূর্ণভাবে না...
- না বলছেন! তবে কী!
- আসলে কী জানেন তো! আমাদের জীবনের কিছু কিছু জায়গা আজীবন কোনো একজন মানুষের জন্যেই তোলা থাকে। আমার জীবনে এই নদীর ঘাটটিও হয়তো আপনার জন্যই তোলা ছিলো... 🙂

- Surya Surelia
May 17, 202005:58
Episode 17: গীতবিতান । নন্দনা আর রণজয়ের গল্প । দ্বিতীয় পর্ব। অর্চিতা ও অপদার্থ।

Episode 17: গীতবিতান । নন্দনা আর রণজয়ের গল্প । দ্বিতীয় পর্ব। অর্চিতা ও অপদার্থ।

#গীতবিতান_২৪

রণজয়— যখন তোমার রবীন্দ্রনাথ মুক্তি দিতে পারেন না, কান্না থামাতে পারেনা... তখন কী করো?

নন্দনা— ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুমিয়ে পড়ে সেইগুলোই স্বপ্ন দেখি যেগুলো বাস্তবে আশা করি কিন্তু পেয়ে ওঠা হয়না

রণজয়— স্বপ্ন ভেঙে গেলে তো আরো বেশি কষ্ট হয়! বাস্তবে ফিরলে আর বেশি ব্যথা লাগে।

নন্দনা— আমি যে সেটা স্বপ্ন জেনেই দেখি। আগে থেকেই মেনে নিই যে সেটা ভেঙে যাবেই, বাস্তবের মানুষগুলো মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে বাঁধি না। মিথ্যো যতই মসৃণ হোক আদতে তা ধূসরই— তাই মিথ্যের নাম যদি স্বপ্ন রাখা যায় তাহলে মিথ্যেবাদী হওয়ার অপবাদ নিতে হয়না।

রণজয়— আর যদি ঘুম না আসে?

নন্দনা— নিজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিই, টিভির থেকে শেখা ঘুমপাড়ানি গানগুলো গেয়ে-গেয়ে নিজেকে শোনাই। আমরা যারা মায়ের আদর পাইনি,শ তারা ভীষণ ভালো মা-বাবা হতে পারবো— কারণ আমরা শূন্যতাটা বুঝি এবং সে শূন্যস্থান পূরণ করার হাজারখানা সুরাহা জেনে রাখি। কিছু একটা তো করতে হবে! কান্না যতই শুদ্ধ করুক— কান্না কারোর অভ্যাস হতে পারেনা।

রণজয়— আচ্ছা। তাহলে ঘুমোনোর চেষ্টা করি

নন্দনা— খুব মনখারাপ?

রণজয়— জানি না কতটা, তবে যেকোনো পাতা হাতড়াচ্ছি তোমার প্রাণের ঠাকুর খুব কাঁদাচ্ছে; ওই মানুষটাও খুব কেঁদেছে তাই না?

নন্দনা— জিজ্ঞাসা করার দুঃসাহস করিনি। হয়তো এটাই ঈশ্বর আর ভক্তের মাঝখানকার সীমান্ত! আমরা নিজেদের কথা বলি, তার কথা জিজ্ঞাসা করিনা।

রণজয়— আমাকে তো জিজ্ঞাসা করতে পারো? নাকি তোমার কাছে সেই দামটুকু চাওয়াও উচিত না?

নন্দনা— যখন আমি জানি আমি নিজেই আপনার দুঃখের কারণ তখন কোন মুখে সে প্রশ্ন করি? কোন মানুষ নিজ কানে নিজের অপরাধ শুনতে চায় যখন সে জানে সে সত্যই অপরাধী!

রণজয়— অপরাধী বটেই, তবে অপরাধটা জানো কী?

নন্দনা— আপনাকে ভালোবাসতে অক্ষম।

রণজয় — নাঃ নিজেকে ভালো রাখতে চাইছো না। যদি কখনও আমার উপর দয়াটুকু হয়ে থাকে— তাহলে এবার থামো, এবার ভালো থাকতে হবে নন্দনা। এতদিন তো নিজের প্রেমিকাসত্ত্বার উপর অহংকার করেছো! এবার নিজের ভাগ্যের উপর করো— যে তুমি সেই কুড়ি দশমিক সাত শতাংশ নারীদের মধ্যে পড়ো, যাকে পুরুষ প্রেমিকাসুলভ আকুতি দিয়ে ভালোবাসে। এবার একটু বোঝো!

নন্দনা— "তারি লাগি যত ফেলেছি অশ্রুজল
বীণাবাদিনীর শতদলদলে করিছে সে টলোমল।
মোর গানে গানে পলকে পলকে ঝলসি উঠিছে ঝলকে ঝলকে,
শান্ত হাসির করুণ আলোকে ভাতিছে নয়নপাতে॥"

: Obhishek Kar
May 11, 202004:28
Episode 16: মৃতদেহ । অভীক রায় । অপদার্থ

Episode 16: মৃতদেহ । অভীক রায় । অপদার্থ

একটু অন্যরকম একটি উপস্থাপন। ভালো লাগলে পাশে থাকবেন।
May 10, 202001:44
Episode 15: কবিগুরু । অভীক রায়। অপদার্থ।

Episode 15: কবিগুরু । অভীক রায়। অপদার্থ।

ছোট একটা আটফুট বাই দশফুটের ঘর। দেওয়ালের শরীর থেকে চুনের আস্তরণ খসে গিয়েছে অনেক জায়গায়। মেঝের উপর বসে আছে দশ-বারোজন তরুণ তরুণী। একটা পুরোনো সিলিং ফ্যান প্রায় না ঘোরার মতো ঘুরছে। এরই মধ্যে‌ ফতুয়া আর পায়জামা পরা এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক হারমোনিয়াম নিয়ে এসে বসলেন। গালে দাড়ি, উস্কোখুস্কো চুল। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর একমাস গান শেখাননি কাউকে। ঘামে ভিজে যাচ্ছে ফতুয়ার পিঠ। হারমোনিয়ামের রিডে আঙুল চালাতে চালাতে ভদ্রলোক গেয়ে চলেছেন- "আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাইনে তোমারে..."

পুরোনো সরকারি স্কুলঘর। তিনটে জানলা। দুটো দরজা। ধুলো ময়লা জমতে জমতে কালো হয়ে যাওয়া বেঞ্চের সারি। তারই মধ্যে ঠেসেঠুসে বসে ছাত্রছাত্রীরা। ক্লাস নিচ্ছেন একজন পার্শ্বশিক্ষিকা। পরণে তাঁতের শাড়ি। ডানহাতে ঘড়ি। কিছুক্ষণ আগে ঘুরে এসেছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার অফিস থেকে। পার্শ্বশিক্ষিকা থেকে পাকাপাকিভাবে সরকারি স্কুলের ইংরেজি শিক্ষিকার পদে উত্তরণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন উনি। তবে মেধার বিনিময়ে নয়। স্কুলে লোডশেডিং। শাড়ির আঁচল দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে তরুণী পড়াচ্ছেন- "Where the mind is without fear and the head is held high..."

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নামটা শুনলেই আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে এইসব ছোট ছোট সাধারণ দৃশ্য। কারণ আমার কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোনওদিনই আতিশয্যে ভরপুর কোনও নাম ছিলেন না। বরং তাঁকে আমি জেনেছি খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে দিয়েই। সে শেখার মধ্যে ঘাম ছিলো। সে শেখার মধ্যে অভাব ছিলো। সে শেখার মধ্যে ছিলো বাঁধন ছিঁড়ে বেরোনোর আপ্রাণ চেষ্টা। তাই আজ যখন মাঝেমধ্যেই‌ কারও কোনও আচরণের দরুণ; চারিদিকে ওঁকে নিয়ে গেলো গেলো‌ রব ওঠে, আমি অবিচল থাকতে পারি। কারণ যে গাছ তার শিকড় মাটির এত গভীর অবধি ছড়িয়ে দিয়েছে, সেই গাছকে উপড়ে ফেলতে হলে ঠিক ততটাই গভীর অবধি মাটি খুঁড়তে হবে। আর আমরা যারা দিন আনা দিন খাওয়া মধ্যবিত্ত, তাঁদের মাটি এতটাও নরম হয় না যে তাতে যে কেউ এসে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করবে!

শুভ জন্মদিন।
May 08, 202003:32
Episode 14: না বলা কথা । দেবজ্যোতি রায়। অপদার্থ।

Episode 14: না বলা কথা । দেবজ্যোতি রায়। অপদার্থ।

যে কটা কথা❤️
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
"এভাবে নিভেছে কথা, নিরবতা ছড়িয়েছে ধীরে,
ভালবাসা পায়নি কেউ, হেরে যাওয়া মৃতের শরীরে।"

আমাদের সব সময় কিছু কথা বাকি থেকেই যায়। বলতে পারিনা।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি, কোনো ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি,

যে কটা কথা আমাদের সব থেকে কাছের,

আমাদের সব সময়, সেই সব কথা গুলো বাকি থেকে যায়। বলতে পারিনা।
ভীষণ স্পর্ধার প্রয়োজন থাকে হয়তো, আমরা সব সময় সাহস করে উঠতে পারিনা।

বলা হয় না।তবু আমরা কি চাইনা বলতে, হ্যা চাই। মনে প্রাণে চাই। সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের হয়ে সবটা বলে দেয়। কোনো ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই...

যে কটা কথা আমাদের সব কিছু দিয়ে বলার থাকে...

আমাদের জীবনের কিছু পর্যায় গিয়ে বলে হয়ে ওঠে না। কিন্তু জানেন তো, জীবন খুব বড়ো নয়, কিন্তু মুহূর্ত গুলো অনেক বড়ো, যারা প্রতিনিয়ত জীবন টা কে বড়ো করে তোলে, তাই বলে দিতে হয়.....

অভিমান অভিযোগ সব বলে দিতে হয়...ভালোবাসা সেটাও বলে দিতে হয়।

কত মানুষ হারিয়ে যায়, আমরা সারাজীবন তাঁদের চিহ্ন খুঁজতে থাকি, মনের কথা গুলো বলব বলে, অথচ....তাঁদের কিন্তু বলতে পারিনি,

ভরসা থাকলে, বিশ্বাস থাকলে প্রত্যেক টা মানুষ প্রত্যেকের কথা শুনবে....

কিন্তু বলাটা খুব জরুরি

যে কটা কথা আমাদের সব থেকে কাছের ....

আমাদের সব সময় চেষ্টা থাকে, না বলা কথা গুলো বয়ে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেওয়া।

ভালোবাসার কথা, ভালো না বাসার কথা,
ছেড়ে যাওয়ার কথা, জুড়ে থাকার কথা,
হাতে হাত রাখার কথা,
নিজের ইচ্ছের কথা, চাহিদার কথা,
বেঁচে থাকার কথা, হেরে যাওয়ার কথা।

এসব বলে ফেলতে হয়.......

কত মানুষ হারিয়ে যায়, কথা শুনতে চেয়ে ছিল যারা, কত স্বপ্ন হারিয়ে যায়, সাথে থাকতে চেয়ে ছিল যারা....

যে কটা কথা আমাদের সব থেকে কাছের
বলে ফেলতে হয়.....🌼

: Debajyoti Roy
May 06, 202002:49
Episode 13: গীতবিতান - নন্দনা ও রণজয়ের গল্প। প্রথম পর্ব । কলমে: অভিষেক কর। অর্চিতা ও অপদার্থ।

Episode 13: গীতবিতান - নন্দনা ও রণজয়ের গল্প। প্রথম পর্ব । কলমে: অভিষেক কর। অর্চিতা ও অপদার্থ।

#গীতবিতান_২৩

নন্দনা— চলুন প্রেমটা করি

রণজয়— করছিই তো।

নন্দনা— না ঠিক এমন না... সবাইকে জানাতে হবে, একসাথে ছবি দিতে হবে, রিলেশনশিপ স্টেটাস

রণজয়— ভালোবাসো?

নন্দনা— ভয় পাচ্ছেন? এই তো এতদিন এত বাতেলা দিলেন, কী হলো?

রণজয়— কী হয়েছে তোমার? কী হয়েছে?

নন্দনা— সবটা অধিকার ছিনিয়ে নিল... ওই ছবিগুলোই তো শেষ সম্বল ছিল, স্মৃতিগুলো তো আমারও ছিল বলুন! এখন বারণ করে দিল! বললো ওর ছবি যেন আমি আর ব্যবহার না করি। ছবিতে তো আমরা ছিলাম, এখন শুধু ওগুলো ওর হয়ে গেল?

রণজয়— নিজে ফোন করেছিল?

নন্দনা— এক ভাইয়ের মাধ্যমে আমার কিছু কথা পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলাম, স্পষ্ট বলে দিল আমাদের নাকি কথা বলাটা প্রাসঙ্গিক নয়! আমাদের মধ্যে আর কিছুই নেই যার জন্য আমাদের যোগাযোগ থাকা উচিত... ভাইটি ওর মেসেজ গুলো ফরওয়ার্ড করলো

রণজয়— যখন ভালবাসি বলতো সবার সামনে বলতো?

নন্দনা— না। ওর মনে হতো ওই আবেগ ভীষণ ব্যক্তিগত, ভীষণ নিজস্ব

রণজয়— তাহলে তাচ্ছিল্য সবার সামনে করছে কী করে? তুমি প্রশ্রয় দিচ্ছো কেন? খারাপ পেয়ো না নন্দনা তোমার প্রাক্তন পুরুষ ভীষণ কাপুরুষ,যেই পুরুষ নিজের সুক্ষ্ম আবেগকে মানুষের সামনে আনতে পারেনা, তার কোনো অধিকার নেই আরেকজনের আবেগকে সর্বসম্মূখে অপমান করার। দরকার ফুরিয়ে গেলে যে পুরুষ কৃতজ্ঞতাবোধ ভুলে যায় তার জন্মদাতাকে আমি নপুংসক মনে করি! নন্দনা এতদিন জানতাম ভুল মানুষকে ভালোবেসেছো, আজ বলছি তুমি পার্থিব নয় এমন কাউকে ভালোবেসেছো।

নন্দনা— আমি আসলে হেলা করার যোগ্য বুঝলে তো!

রণজয়— ঠিক বলেছো, যে নিজের দাম বোঝে না, যে নিজের সম্মানটুকু রক্ষা করার ক্ষমতা রাখে না, তাকে হেলা করাই উচিত। কত মানুষ কিছু না করেই আত্মসম্মান নিয়ে অহংকার করে জানো! আরে তুমি তো বুক চিতিয়ে ভালোবেসেছো, তোমার তো নিজের প্রতি গর্ব হওয়া উচিত! আমি কিন্তু ভীষণ গর্বিত নিজের প্রতি কারণ আমি তোমায় ভালোবাসি। কাল যদি আমাদের সম্পর্ক না গড়ে ওঠে তবু আমি লজ্জিত নই, কারণ আমি ঠিক ততটাই পরিশ্রম করেছি যতটা তুমি করেছো তোমার প্রাক্তনকে ভালোবাসতে। তোমার প্রতি আমার এই অনুভূতিগুলো আমার অহংকার নন্দনা। যাও ঘুমিয়ে পড়ো।

নন্দনা— গান শুনবেন?

রণজয়— ভালবাসো?

নন্দনা— “আকাশে কার বুকের মাঝে ব্যথা বাজে,
দিগন্তে কার কালো আঁখি আঁখির জলে যায় ভাসি॥
সেই সুরে সাগরকূলে বাঁধন খুলে
অতল রোদন উঠে দুলে।”
: Obhishek Kar
May 04, 202003:47
Episode 12: বৃদ্ধ ছায়া । অভীক রায় । অপদার্থ।

Episode 12: বৃদ্ধ ছায়া । অভীক রায় । অপদার্থ।

"কী করো তুমি? সারাদিন বাড়িতে বসে থাকো আর খাও"— এহেন অপমান সহ্য করতে না‌ পেরে যাঁরা সারাজীবনের মতো হারিয়ে গেছিলেন, তাঁরা নেমে আসবেন কাল ভোরে। ধূ-ধূ বাস-স্টপ, নিস্তব্ধ রাজপথ, জনশূন্য পার্ক বা ঝাঁপ বন্ধ করা চায়ের দোকানে ইতস্তত ঘুরে বেড়াবে তাঁদের বৃদ্ধ ছায়া।‌ শহরের মানচিত্রে সেইসব ছায়াদের অগোছালো চলাচল চোখে পড়বে শুধু বিড়াল আর চড়ুই পাখিদের। ঘোরাফেরা শেষ হলে একসময় তাঁরা রওনা দেবেন যে যার নিজের বাড়ির দিকে। সেই বাড়ি যেখানে তরুণ বয়সে একদিন বাজারের ব্যাগ কিংবা অফিসের ফাইল নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকতে দেখা যেত তাঁদের। সেই বাড়ি যার চৌকাঠ পেরিয়ে একদিন চোখের জল মুছতে মুছতে অথবা মানুষের কাঁধে চেপে হারিয়ে গেছিলেন তাঁরা। কাল সেই বাড়িতে চুপচাপ দরজা ঠেলে ঢুকে, তাঁরা দু-চোখ ভরে দেখবে‌ন একদল কাছের মানুষের সারাদিন বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকা ও পেটভরে খাওয়ার দৃশ্য।
May 03, 202001:34
Episode 11: চিঠি । অভীক রায়। অপদার্থ

Episode 11: চিঠি । অভীক রায়। অপদার্থ

হাতেগোনা যে ক'জন মানুষের সাথে আমার ভীষণ কথা বলতে ইচ্ছে করে, তাদের মধ্যে তুই একজন। ডাকবাক্সে জমা হওয়া চিঠির মতো সাধারণ কিন্তু জরুরি।‌ আমি ভালো আছি। যতটা ভালো থাকতে বলেছিলি, সম্ভবত তারচেয়েও। গতসপ্তাহে অফিস পিকনিক ছিলো। সবকটা ছবিতেই দেখতে পেয়েছি আমার দাড়ি কামানো হাসিমুখ। শুধু ল্যান্সডাউন রোডের ওইসব আলো ঝলমলে সন্ধেবেলাগুলোর জন্য মনকেমন করে মাঝেমধ্যে। বহুদিন বাদে বাবার সাথে ভিডিও কলে কথা হলো গতকাল। আমিই করেছিলাম। তারপর হঠাৎ মাঝরাতে ভদ্রলোক হোয়াটসঅ্যাপে কিছু ছবি পাঠালো। আমাদের বাড়ির ছাদে তোর পুঁতে যাওয়া শিউলিচারাটা গাছ হয়ে গেছে এখন। তাতে ফুল হয়। ফুল ঝরে। ছবিগুলো দেখে আমি জানতে চেয়েছিলাম- "মায়ের জন্য মনখারাপ?" সংক্ষিপ্ত একটা উত্তর এসেছিলো শুধু। "তোর জন্য"। জানি, স্বার্থপরের মতো সবকিছু পিছনে ফেলে পালিয়ে এসেছিলাম একদিন। হয়তো থেকে গেলেও ঠিক এভাবেই সবকিছু ঠিক হয়ে যেত একদিন। কিন্তু তখন বয়স অল্প ছিলো, সামলে নেওয়ার মতো ক্ষমতাও ছিলো না এতখানি। তবে আজ তোকে ই-মেইল করতে বসে এই অপার্থিব ক্ষমতার কথা টের পাচ্ছি অক্ষরে অক্ষরে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় আমাদের মধ্যে হওয়া ঝামেলা, অশান্তি, গালিগালাজের কথা আজ কিছুতেই মনে পড়ছে না আর। মনে পড়ছে না কেন আর কথা হয় না তোর সাথে। আজ শুধু ভীষণভাবে মনে পড়ছে মা চলে যাওয়ার পর নভেম্বর মাসের সেই বিকেলবেলাটার কথা। গা পুড়ে যাওয়া জ্বর নিয়ে আমি শুয়ে আছি দোতলার ঘরে। মাথার কাছে‌ তুই। চুপ করে বসে। জ্বরের ঘোরে মাঝেমধ্যে চোখ খুলে তোর দিকে তাকালে, একটা কথাই বলছিস‌ বারবার- "এই তো আমি। আছি। চলে যাই নি।"
আজ এই ই-মেইল যখন তোর কাছে পৌঁছবে, ততক্ষণে সন্ধে নেমেছে ল্যান্সডাউন রোডে। আমার যাবতীয় অপরাধবোধের অন্ধকারকে ছিন্নভিন্ন করে, হাজার হাজার টুনিবাল্ব জ্বলে উঠেছে তোদের বাড়িতে। পাড়ার মোড়ের রিক্সাস্ট্যান্ড থেকে শোনা যাচ্ছে সানাইয়ের শব্দ। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন একটা দিন আসে যেদিন পৃথিবীর সমস্ত দুঃখ একজোট হয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও আমাদের মুখ থেকে হাসি কেড়ে নিতে পারে না। আজ সেই দিন। যেদিন এই ই-মেইলটা খুলবি, পারলে তারপর একদিন সময় সুযোগ বুঝে, একবার‌ ফোন করিস বাবাকে। ভদ্রলোক তোর ব্যাপারে জানতে চায়। মুখ ফুটে বলতে পারে না। আমাকে এই ই-মেইলের কোনও উত্তর দিতে হবে না কোনওদিন। কারণ হাতেগোনা যে ক'জন মানুষের সাথে আমার আর কোনওদিনও কথা হবে না, তাদের মধ্যে তুই একজন।

ভালো থাকিস।
May 02, 202003:52
Episode 10: LunchBox (Tribute to Irfan Khan) । অভীক রায়। অপদার্থ

Episode 10: LunchBox (Tribute to Irfan Khan) । অভীক রায়। অপদার্থ

"আমরা সেই জিনিসগুলোর কথাই ভুলে যাই যেগুলোর সম্পর্কে‌ কথা বলার মতো আমাদের আর কেউ থাকে না।"- সাজন‌ ফার্নান্ডেজ।মুম্বাই শহরের এক বেসরকারি অফিসের ছোট্ট একটা ডেস্ক। ক্লেইমস ডিপার্টমেন্ট। গাদা গাদা ফাইলের মাঝে বসে, মাথা গুঁজে ক্যালকুলেটর টিপে যাচ্ছেন; চশমা পরা কাঁচা পাকা চুলের এক ভদ্রলোক। এই অফিসের সাথে তাঁর সম্পর্ক পঁয়ত্রিশ বছরের। অবশ্য আর কিছুদিন বাদে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ভদ্রলোক চলে যাবেন নাসিকে। পাকাপাকিভাবে। সহকর্মীরা ভদ্রলোককে মি.ফার্নান্ডেজ বলে ডাকলেও, ওঁর একটা সুন্দর নাম আছে। যা প্রায় কেউ মনেই রাখেনি। সাজন। সাজন ফার্নান্ডেজ। এই হলো ভদ্রলোকের পুরো নাম।

বেশ কয়েকবছর আগে স্ত্রীকে হারিয়ে ফেলা ভদ্রলোক আজ একা।‌ প্রতিদিন অফিস থেকে বেরিয়ে প্রথমে ভিড় লোকাল ট্রেন আর তারপর‌ পাবলিক বাসে চেপে বাড়ি ফেরেন একা একাই। চুপচাপ। উগ্র স্বভাবের জন্য কেউই খুব একটা ধারে কাছে ঘেঁষে না। এমনকি বাড়ির ভিতর ঢুকে যাওয়া পাড়ার বাচ্চাদের খেলার বলটাও তিনি ফিরিয়ে দেন না। রাতে কেনা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল হলে তৈরী হয়ে আবার দৌড়। দুপুরের খাবারটাও‌ বাড়ির কাছের একটা ছোট হোটেল থেকে আনিয়ে নেন অফিসে। প্রতিদিন লাঞ্চ টাইমের আগে টিফিন বক্স পৌঁছে যায় ডেস্কে।

মুম্বাই শহরের এক গৃহবধূ রোজ নতুন নতুন রান্না করেন তাঁর স্বামীর জন্য। সেগুলোকে যত্ন করে একটা টিফিন বক্সে সাজিয়ে তিনি তুলে দেন এক ডাব্বাওয়ালার হাতে। এই ডাব্বাওয়ালারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে এইসব টিফিন বক্স সংগ্রহ করে পৌঁছে দেয় শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ছোট বড় অফিসগুলোয়। যাতে অফিসে কাজ করা মানুষগুলো দুপুরবেলা ঘরোয়া খাবারের স্বাদ পান। ঠিকঠাকই চলছিলো সব। তবে একদিন‌ হঠাৎ একটা টিফিনবক্সের ঠিকানা ভুল করে বদলে গেলো। সবুজ কভারে মোড়া টিফিন বক্সটি, ভুল করে পৌঁছে গেলো এক বেসরকারি অফিসের ক্লেইমস ডিপার্টমেন্টের ছোট্ট একটা ডেস্কে। অফিস থেকে ফেরার পর স্বামীর মুখে অন্য একটা তরকারির কৃত্রিম প্রশংসা শুনে ভদ্রমহিলা বুঝতে পারলেন কোথাও একটা ভুল হয়ে গেছে। বদলে গেছে টিফিন বক্সের ঠিকানা। তাই পরেরদিন খাবারের সাথে একটা চিঠি পাঠালেন ভদ্রমহিলা। নিজের নামসহ। টিফিন বক্সের প্রতিটা বাটি চেটেপুটে খাওয়ার জন্য অচেনা মানুষটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে। সেদিন বিকেলে খালি বক্সের সাথে এলো‌ সেই চিঠির উত্তর। "প্রিয় ইলা, আজকের খাবারে নুনটা একটু বেশী ছিলো।" এটুকুই লেখা ছিলো তাতে।

এরপর ধীরে ধীরে এগোতে থাকে দিন। চিঠিতে বাড়তে থাকে শব্দের সংখ্যা আর বদলে যেতে থাকে সাজন ফার্নান্ডেজের জীবন। অপেক্ষা নামক শব্দটি আবার ফিরে আসে তাঁর প্রাত্যাহিকতায়। কোনও চিঠিতে সে লেখে তাঁর স্ত্রীর রেখে যাওয়া দূরদর্শনের ভি.সি.আর ক্যাসেটের কথা। কোনও চিঠিতে সে জানতে পারে ওই অচেনা মহিলাটির বাড়ির উপরে থাকা দেশপান্ডে আন্টি ও তার বিকলাঙ্গ বরের কথা। বয়সের ভারে খিটখিটে হয়ে যাওয়া সাজন ধীরে ধীরে পরিণত হয় প্রেমিকে। ফুটপাত দিয়ে যেতে যেতে কিনে নেয় পেইন্টিং। কোনও অচেনা মহিলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে শুনলে পরের চিঠি আসা না পর্যন্ত সেই অজ্ঞাত পরিচিতার কথা ভেবে চিন্তায় চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়ে। আর যেদিন সে জানতে পারে যে ওই অচেনা ভদ্রমহিলাটির স্বামী পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়েছে, তাই মহিলাটি সবকিছু ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে ভূটান চলে যেতে চায়, সে নির্দ্বিধায় লিখে ফেলে— "What if I come to Bhutan with you?"

এরপর যেদিন ভদ্রমহিলা জানায় সে দেখা করতে চায়।। আচমকা বয়স যেন কমে যায় সাজনের। ঝলমলিয়ে ওঠে। সিদ্ধান্ত নেয় চাকরি না ছাড়ার। কিন্তু দেখা করার দিন সকালে হঠাৎই সাজন টের পায় নিজের বয়সের কথা। নিজের ফুরিয়ে আসা জীবনের কথা। তাই কথা মতো দুপুর ১.০০টায় কুলার ক্যাফেতে পৌঁছেও দূর থেকে চোখ ভরে দেখে তাঁর ভালোবাসাকে। কাছে যায় না। কথা বলে না। একসময় বিদায় নেয়। নিঃশব্দে। তারপর আর কোনওদিন‌‌‌ সাজনের সাথে ইলার দেখা হয় কীনা আমরা কেউ জানতে পারি না। আর আজকের পর জানতেও পারবো না‌ কোনওদিন। তবে এরপর যতবার "লাঞ্চবক্স" ছায়াছবির এই দৃশ্যের মুখোমুখি হবো, এক প্রয়াত ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকার অন্য এক ছায়াছবিতে বলে যাওয়া যে সংলাপটা অদ্ভুতভাবে আমার বারংবার মনে পড়বে তা হলো- "মোহাব্বত হ্যায় ইস লিয়ে জানে দিয়া, জিদ‌ হোতি তো বাহোঁ মে হোতি।"

ভালো‌ থাকুন সাজন ফার্নান্ডেজ। ❤️
May 01, 202006:09
Episode 9: ঝড় । কৃপা বসু। অপদার্থ।

Episode 9: ঝড় । কৃপা বসু। অপদার্থ।

ঝড় হলেই এককালে মুখ বেঁকিয়ে চলে যাওয়া কাছের মানুষগুলোকে আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করে....


হঠাৎ মেঘ ঘন করে আসা বাইরের ঝড়ের চেয়ে বুকের গভীরে জমতে থাকা ঝড়গুলো অনেক বেশি খতরনাক হয়।


টালি ভাঙা ঝড়ে মানুষ ভয় পায়, সাবধান হয়, দূরে ঠেলে দেওয়া মানুষগুলোকে কাছে পেতে চায়, হন্তদন্ত ফোন করে "কোথায়! ছাতা নিয়ে বেরিয়েছো? সাবধানে বাড়ি ফেরো"...


গাল ফুলিয়ে পাক্কা দুদিন কথা না বলা মানুষটাকেও মেসেজ করে "বাড়িতে থাকিস, বাইরে যাসনা"...


কিন্তু বুকের ভেতরের জমতে থাকা ঝড়গুলো মানুষকে তছনছ করে নিঃশব্দে, বাইরে থেকে কোনো শোক বোঝা যায় না, মানুষ খুব রিল্যাক্সড থাকে, নিজেকে কুল দেখানোর চেষ্টা করে, সবার সামনে হাসে, জোরে জোরে হাসে।


যেমন ভাবে রাতের পাড়ায় ধীর গতিতে চোর ঢোকে, দ্রোহকাল ঘনিয়ে আসে, নিরীহ মানুষগুলো টেরও পায়না অপটু হাতে গড়া বালির ঘরে নামছে ধস, কোনো সাইরেন বাজেনা, কেউ সতর্ক করে না.....


সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর কিছু দীর্ঘনিঃশ্বাস পড়ে স্রেফ, পিনড্রপ সাইলেন্সের ভেতর, যে কোনো ভেঙে পড়া মানুষের কাছে দীর্ঘনিঃশ্বাস বড্ড ভারী হয়....


তাই আকাশ ভেঙে একটা দুটো ঝড় নামুক সময়ে অসময়ে, মানুষ ভয় পাক, ঘর ভেঙে যাওয়ার ভয়! সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়....


মানুষ ঝগড়া করুক, খুব কাছে এসে মুখোমুখি বসে ঝগড়া করুক, চোখে চোখ রেখে কথা বলুক।


তারপর একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কাঁদুক, মনের ভেতর সমস্ত বিক্ষোভ শান্ত হোক, নতুন করে ভালোবাসতে শিখুক, মানুষ মানুষকে জাপটে ধরুক....


এই দুনিয়ায় "একা থাকা" একটা যুদ্ধের মতো, সবাই এই যুদ্ধে জিততে পারে না, যারা জিতে যায় তারা সবার কাছে হেরে গেছে অনেক আগেই....


লেখা--কৃপা বসু

Apr 30, 202003:00
Episode 8: ঈশ্বর । কৃপা বসু। অপদার্থ

Episode 8: ঈশ্বর । কৃপা বসু। অপদার্থ

যে মানুষটাকে ঘিরে যত বেশি ভিড় বাড়ে, সেই মানুষটা ততটাই ফাঁকা হয় ভেতর থেকে। বড্ড বেশি একাকিত্ব অনুভব করে, ফাঁকা ঘর পেলেই কান্নাকাটি করে, একটা কাঁধ খোঁজে যেখানে ভেঙে পড়া যায়, কিন্তু আফসোস গোটা জীবন খুঁজেও সেই কাঁধ পায় না কোথাও....

এত ভিড়, এত আলো থাকে মানুষটার চারিদিকে, যে সবাই ধরেই নেয় এই মানুষটার কখনো মনখারাপ হতে পারে না, এই মানুষটার জীবনে কোনো ব্যথা নেই, কোনো কষ্ট নেই, কোনো আক্ষেপ নেই....

এবং যেহুতু সবাই মানুষটাকে একজন শক্ত আদর্শবান মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে, তাই সেই মানুষটাকে ঠোঁটের ভেতর হাসির চড়া মেকআপ করে হেসে যেতে হয় গোটা জীবন। মানুষটার আর ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়ার মতো কোনো আশ্রয় থাকে না....

সে কখনো কাউকে বলতে পারে না, "শোনো আমার খুব কান্না পাচ্ছে"....

রাতের পর রাত পেরোয়, ভোরের পর ভোর হয়, কিন্তু মানুষটার জীবনে সেই যে সন্ধে নামে তার আর কোনোদিন কোনো সকাল হয় না....

সব মানুষের একটা ঘর লাগে, সব মানুষের ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়ার জন্য একটা কোল লাগে, বৃষ্টিতে ভেজার মতো একটা ছাদ লাগে, রেললাইন পেরোনোর মতো একটা শক্ত হাত লাগে, অনেকে গোটা জীবন খুঁজেও পায় না আসলে....

যে মানুষটাকে ঘিরে যত বেশি ভিড় বাড়ে, সেই মানুষটা ততটাই ফাঁকা হয় ভেতর থেকে।

যে মানুষটাকে ঘিরে যত বেশি ভিড় বাড়ে, সেই মানুষটা ততটাই ফাঁকা হয় ভেতর থেকে।

যে মানুষটাকে ঘিরে যত বেশি ভিড় বাড়ে, সেই মানুষটা ততটাই ফাঁকা হয় ভেতর থেকে।

এই যেমন আমরা সবাই....

কৃপা বসু
Apr 29, 202002:05
Episode 7 : টিপ। অভীক রায়। অপদার্থ।

Episode 7 : টিপ। অভীক রায়। অপদার্থ।

যদি কেউ কোনদিন, নিজে থেকে, এগিয়ে এসে জানতে চায় আমার ব্যাপারে। সেদিন তাকে দেখাবো এই মানিব্যাগ, আর বলব। "এই টিপ দুটো যার, যদি পারেন তাকে গিয়ে বলবেন, আমার আর তাকে মনে নেই, আমার আর কিছুই মনে নেই।"
Apr 28, 202002:16
Episode 6: ভালোবাসা । অভিষেক কর। অপদার্থ

Episode 6: ভালোবাসা । অভিষেক কর। অপদার্থ

কতটা ভুল হয়ে গেলে প্রেম ভেঙে যায়?
জানা নেই।
জানলে বোধহয় আজও কথা হতো, টুকিটাকি ঝগড়া হতো, ঝগড়া শেষে মান ভাঙতো, দেখা হতো...
ভুলগুলো জানলে, প্রেম মুচকাতো তবু ভাঙতো না। বোধহয়।

কতটা দোষী হলে ভালবাসার মানুষকে আর ছুঁতে পারা যায় না? তার কন্ঠ শোনা যায় না? তার সদ্যোজাত ছবিদের স্নেহ করা যায় না?
জানি না গো।
জানলে এমন কুঁকড়েকুঁকড়ে মূর্ছা গিয়েও তোমার সহানুভূতি পাওয়া হয়না!
এক ঘাট জলে গলা-পর্যন্ত চুবেচুবে মিনতি করেছি, “এক বাক্য কথা বলবে আমার সাথে?”
দেখেছি তারপর প্রকৃতিও সহনশীল হয়, আমাকে সে যাত্রায় বাঁচিয়ে দিতে রোদ উঠেছিল মাথার ওপর;
তবু তুমি কেমন মুখ ফিরিয়েই হেসে গেছো অন্য কোনো গল্পে।
এমন করে হারিয়ে দেবে এত সাহস শত্রুর হতে পারেনা।
এমন করে খুন করতে পারে শুধু সে, যাকে দুর্গম ভালবাসা যায়।
এমন করে মনে মারতে শুধু তুমিই পারো।
শুধু তুমিই পারো ঠাণ্ডা অবহেলায় নিঃস্ব করে দিতে।

কতখানি অক্ষম হলে মানুষ শরীর খারাপকে কারণ করে প্রেম ফেরাতে চায়?
থার্মোমিটারে পারদ তখন দ্রুত বেগে ওপরের দিকে ছুটছে,
মাথার মধ্যে কে যেন শ্রাদ্ধ বাড়ির ঘন্টা পেটাচ্ছে, গাল বেয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে ক্লেশ...
নির্লজ্জের মতো শহরের সবকটা মানুষ কে চিঠি দিয়ে জানালাম, “আমি হয়তো আর বেশিদিন নেই”;
সবাই রজনীগন্ধা হাতে দেখে গেল আমায়।
ঘোরতর জ্বরের চোখ টানটান হয়ে চৌকাঠে পড়েছিল—
তোমার লেখা ‘আরোগ্য কামনা’টুকু পৌঁছে দেয়নি কেউ।

কতবার মরলে বলো এমন গ্লানি মোছা যায়?
আরেকটিবার জন্ম নেবো, বড় হবো অন্যরকম করে, অন্যরকম চেহারাও হয়তো,
তারপর যদি ঠিক এতটাই উত্তম ভালবাসা নিয়ে সামনে গিয়ে দাঁড়াই—
আমার জ্বর হলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে গো?
Apr 27, 202002:59
Episode 5: একটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া বাংলা কবিতা। দেবারতি গোস্বামী।

Episode 5: একটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া বাংলা কবিতা। দেবারতি গোস্বামী।

একটি অন্যরকম প্রচেষ্টা।
Apr 25, 202005:07
Episode 4 : একটি ভিন্ন স্বাদের প্রেমের কবিতা। অনুব্রতা গুপ্ত।

Episode 4 : একটি ভিন্ন স্বাদের প্রেমের কবিতা। অনুব্রতা গুপ্ত।

অন্যরকম উপস্থাপন।
Apr 24, 202001:10
 Episode 3: বসন্ত বারোমাস। শ্রীজাত

Episode 3: বসন্ত বারোমাস। শ্রীজাত

অন্যরকম উপস্থাপন।
Apr 24, 202001:20
 Episode 2: একটি অন্যরকম প্রেমের কবিতা। অনুব্রতা গুপ্ত।

Episode 2: একটি অন্যরকম প্রেমের কবিতা। অনুব্রতা গুপ্ত।

একটু অন্যরকম উপস্থাপন।
Apr 24, 202002:12
Episode 1 :কোয়ারেন্টাইন। পারমিতা ও অপদার্থ।

Episode 1 :কোয়ারেন্টাইন। পারমিতা ও অপদার্থ।

একটু অন্যরকম একটি উপস্থাপন।
Apr 24, 202004:22