Srijaner Podaboli (Bengali Podcast)
By Srijan Kundu
Namaskar, Ami Srijan Kundu
Jiboner tukro tukro katha, byaktigato anubhuti , sab ek jaygay rakhar jonne ei podcast .
/*
The views and opinions expressed or implied herein are my own and does not reflect those of my employer, who shall not be liable for any action that may result as a consequences of my views / opinions
*/
Srijaner Podaboli (Bengali Podcast)Mar 18, 2023
Bishram
Boi Mela
Kuasha Jakhon
নতুন বছর শুরু হয়ে গেছে। আমি দু তিন সপ্তা এপিসোড বানাইনি বলে সময় কি থেমে থাকবে ? থাকবে না। তাই একটু দেরি করে হলেও আপনাকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। বছরটা আপনার জন্য গোবিন্দ ভোগ চালে নলেন গুড় দিয়ে বানানো পায়েসের মতন বা পাটি সাপটা বা পুলি পিঠের মতন মিষ্টি হয়ে উঠুক। এই এপিসোডটা দু সপ্তা আগে করা উচিৎ ছিল, কিন্তু বেটার লেট দ্যান নেভার। ঘটনাটা সপ্তা দুয়েক আগের , কলকাতা থেকে দিল্লী ফিরছিলাম, সেই ঘটনা বহুল জার্নির কথাই বলব সৃজনের পডাবলীর এবারের এপিসোডে।
ক্রিসমাসের উইকএন্ডটাতে কলকাতা গেছিলাম। ফেরার ট্রেন ছিল রাজধানী। যে দিন ফিরব তার আগের দিন দেখি শেষ তিন চার দিন ধরে রাজধানী প্রায় ছ সাত ঘন্টা লেট করে ঢুকছে। ট্রেন এরকম লেট করলে মুশকিল। ডিসিশন নিলাম, যে নাঃ ট্রেনে যাওয়া রিস্কি হয়ে যাবে। ট্রেনের টিকিট ক্যানসেল করে ইন্ডিগোর সন্ধে ছটার ফ্লাইটের টিকিট কাটলাম। ইন্ডিগোর নাটক সবার জানাই আছে, হাতে অনেক সময় নিয়ে যেতে হয়।
মোটামুটি সাড়ে তিনটের দিকে যখন বেরোচ্ছি, SMS এলো যে ফ্লাইট চল্লিশ মিনিট দেরিতে ছাড়বে। ভাবলাম ভালোই হল, লাউঞ্জে যাওয়া যাবে। এমনিতেই লাউঞ্জএ গেলে ভোগের খিচুড়ির মতন লম্বা লাইন পড়ে । তবে কলকাতার লাউঞ্জটা ভালো, খাওয়া দাওয়া বেশ ভালোই পাওয়া যায়। দিল্লীর টি টু তে যেমন একটা মাত্র ননভেজ অপশন থাকে, কলকাতায় সেরকম না , বেশ কিছু পাওয়া যায়। তার উপর বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে দশটা বাজবে, পেটটা ভরা থাকলে ভালোই হবে। ভাগ্গিস লাউঞ্জে দু টাকা দিয়ে পেট পুরে খেয়েছিলাম। কেন বলছি ? আসছি সে কথায়।
ছটার ফ্লাইট ছটা চল্লিশ করে দিয়েছে আগেই বলেছিলাম, গুগলে দেখাচ্ছিল যে ওই ফ্লাইটটা দিল্লী থেকে গয়া, গয়া থেকে কলকাতা আসছে। ছটা চল্লিশের কিছু আগে সেই ফ্লাইট কলকাতায় এল কিন্তু কলকাতা থেকে দিল্লী যাওয়ার ফ্লাইটের টাইম করে দিয়েছে রাত আটটা। কিছু লোক সেই দেখে ঝামেলা শুরু করে দিয়েছে, কারো পর দিন সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়া আছে, কারো কোথাও এডমিশন আছে, কারো বাচ্চা ছোট।
আমি দেখলাম, কিছু করার নেই কফি খেয়ে আসা যাক। সেই ভেবে কিছুটা সরে অন্যদিকে এসেছি, দেখি এয়ারলাইনসের লোক কয়েকজনকে নিয়ে অন্য কোথাও যাচ্ছে। তাদের কাছে গিয়ে বুঝলাম যাদের এমার্জেন্সি আছে, তাদেরকে সাতটা কুড়ির একটা দিল্লীর ফ্লাইট আছে, সেটার খালি সিটে এডজাস্ট করানোর চেষ্টা করছে। আমি ও চললাম তাদের সাথে। একটা ফাঁকা কাউন্টারে গিয়ে ওই সাতটা কুড়ির ফ্লাইটে ওনারা টিকিট করে দিলেন। যে কজন যাত্রী এনার সাথে এসেছিলেন, সবারই ব্যবস্থা হয়ে গেল। বাড়িতে জানিয়ে দিলাম, আটটা অব্দি অপেক্ষা করতে হবে না, তার আগেই বন্দোবস্ত হয়ে গেছে। ফ্লাইট মোটামুটি টাইমেই ছেড়ে দিল, লাভের লাভ যেটা হল - আগেরটা মাঝের সিট ছিল, এটা উইন্ডোসিট এবং বেশি লেগস্পেসের সিট, নরম্যালি কাটলে অনেকটা টাকা বেশি নিয়ে নিত। সাড়ে নটার দিকে পাইলট এনাউন্স করলেন - দিল্লির কাছাকাছি এসে গেছি। আর মোটামুটি আধ ঘন্টার মধ্যেই দিল্লী পৌঁছে যাব। পরের এনাউন্সমেন্ট দশটার দিকে, দিল্লীতে খুব কুয়াশা, রানওয়ে ব্যাস্ত, ল্যান্ডিং এর অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। এর কিছুক্ষন পরে জানানো হল - দিল্লীতে নামার পারমিশন পাওয়া যায় নি, ফ্লাইট ডাইভার্ট করা হয়েছে ইন্দোরে।
আমার জন্য এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা, ফ্লাইট ইন্দোরে নামল ওই পৌনে এগারোটা নাগাদ। ফ্লাইট থামার পর শুনছি আমার পিছনের রো তে বসা এক মহিলা তার আত্মীয়কে ফোন করে জিজ্ঞেস করছেন, ভালো হোটেল কি আছে। সেটা অবশ্য ওনার দরকার পড়েনি, কারন প্লেন থেকে কাউকে নামানো হয়নি । পাইলট ঘোষণা করলেন, দিল্লীর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে ওনারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন, যত দ্রুত সম্ভব ফ্লাইট দিল্লী উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এরই মধ্যে কেউ একজন অনলাইনে দেখে বললেন, যে ফ্লাইট ডিলে হচ্ছে বলে আমরা কয়েকজন আগের ফ্লাইটে উঠে এলাম, সেটা এগারোটা নাগাদ দিল্লী ল্যান্ড করে গেছে। হইচই করে আগের ফ্লাইট না ধরলে এখন ইন্দোর নয়, দিল্লীতে থাকতাম।
এর পর ইন্ডিগোর তরফে রিফ্রেশমেন্ট এর ব্যবস্থা হল - একটা ওটস বিস্কুট , ড্ৰাই ফ্রুটস কিছু আর একটা ফ্রুট জুসের প্যাকেট। এখন মনে হল, ভাগ্গিস কলকাতা লাউঞ্জে পেট পুরে খেয়ে উঠেছিলাম, না হলে খিদেতে অবস্থা খারাপ হত। এর পর একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস হল - সেটা হল পাইলট পরিবর্তন। আমি যে উইন্ডো সিটে বসেছিলাম, তার পাশের সিট খালি ছিল আর আইল সিটে ছিলেন - অন্য এক এয়ারলাইন্সের একজন পাইলট, যিনি কলকাতায় কাজ সেরে দিল্লীতে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি বেশ কয়েকবার এয়ার হোস্টেসদের কথা বলছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলাম - কি হল কেস টা ? উনি জানালেন - ফ্লাইট ছাড়বে কিছুক্ষনের মধ্যে। এই পাইলটের জিরো ভিজিবিলিটিতে ল্যান্ড করানোর এক্সপার্টাইস আছে। এবার নামতে অসুবিধা হবে না।
সৃজনের পডাবলী থিম সং : অভিষেক দুবে
Chingrir Malaikari
হাজার বছর ধ’রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি;
বনলতা সেন কবিতার সেই মালয় মানে আজকের মালেশিয়াই নাকি মালাইকারির উৎস। মালাই কারির মালাই নাকি নারকেলের দুধের মালাই না, আর মালাই কারি আসলে মালয়কারি। তা উৎস যাই হোক, পৃথিবীশুদ্ধ লোক মালাইকারি বিশুদ্ধ বাঙালি খাবার বলেই জানে।
তো যা বলছিলাম, মোহনবাগান ট্রফি জিতল, সন্ধের দিকে , ভাবলাম সুইগি বা জোম্যাটোতে মালাইকারি অর্ডার করি। ও হরি, নো মালাইকারি। কিন্তু একবার কিছু একটা করব ডিসাইড করলে সেটা তো করতেই হবে। লিসিয়াসে চিংড়ি অর্ডার করলাম। তারপর ইউটিউব খুলে দেখলাম কি করে বানানো যায়। ফার্স্ট স্টেপেই ঝামেলা, নারকেল যদি কিনেও আনি, তার দুধ বার করার কোন সরঞ্জাম নেই আমার কাছে ইউটিউবে দেখলাম, ম্যাগির একটা নারকেল দুধের পাউডার পাওয়া যায়, সেটা নিয়ে এলাম। এই পডকাস্টের মহিলা অডিয়েন্স যেহেতু মাত্র কুড়ি পার্সেন্ট, তাই সাহস করে রেসিপি ও বলব এই এপিসোডে। কে বলতে পারে, আমার মতন কোন বিদেশ বিভুঁইয়ে পড়ে থাকা কারো হয়ত কাজে লেগে গেল। আমি ইউটিউবের রেসিপি দেখে যেভাবে করেছি সেটা বলছি, কি করে মনে আছে ? মনে নেই 😀, এই এপিসোড রেকর্ড করার আগে সেই ভিডিওটা আর একবার দেখে নোট করে নিলাম যাতে বলার সময় ভুল না করি।
প্রথমে ওই নারকেলের গুঁড়ো দুধ নিয়ে তাতে গরম জল দিয়ে দুধটা বানিয়ে নিতে হবে। এবার প্যানে তেল নিয়ে সেটা গরম করে তাতে চিংড়ি অল্প ভাজতে হবে, উল্টে পাল্টে। আমি একটু বেশি ভেজেছিলাম বলে, চিংড়িটা শক্ত হয়ে গেছিল। এই তেলেই আর একটু তেল দিয়ে তাতে তেজপাতা, এলাচ, দারচিনি দিয়ে একটু ভেজে তাতে পেঁয়াজের পেস্ট, আদা রসুন পেস্ট ,টমেটো পেস্ট, হলুদ আর একটু গরম মশলা দিয়ে কয়েক মিনিট ধরে নেড়ে নিলাম যতখন পর্যন্ত্য না তেল ছাড়ছে। তারপর ওই নারকেলের দুধ যেটা বানানো হয়েছে সেটা দিতে হবে। ইউটিউবে পোস্ট বাটা দেওয়ার কথা বলা আছে, সেটা আমার কাছে ছিল না বলে ওটা বাদ। এবার যে ঝোলটা তৈরী হল, সেটাতে একটু চিনি, একটু নুন, আর একটা কি দুটো কাঁচা লঙ্কা দিতে হবে। মিনিট দুয়েক,, ঝোলটা হয়ে গেলে, সেটাতে চিংড়ি গুলো দিয়ে লো হিটে মিনিট দশেক রান্না করলেই হয়ে যাবে। শুধু গ্যাস বন্ধ করার আগে এক চামচ ঘি আর একটু গরম মশলা দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। প্যারালালি ভাত ও রান্না হয়ে যাবে। বা ভাতটা মালাইকারি রান্না শেষ করে তার পরেও করা যায়। খেতে কিন্তু বেশ ভালো হয়েছিল। তার পরেও তিনবার বানিয়েছি এখনো পর্যন্ত্য। বাড়ির মতন না হলেও, খুব একটা খারাপ খেতে হয়নি। rather বেশ ভালো হয়েছিল খেতে। পরের বার গুলোতে আমি আলু ও চার টুকরো করে কেটে, ভালো করে ভেজে মালাইকারিতে দিয়েছিলাম। ভালোই লেগেছিল।
এই এপিসোড আর টেনে বড় করব না। আজ আবার মোহনবাগান হেরে গেল মুম্বাইয়ের কাছে। মুম্বাই ধীরে ধীরে একটা খুব শক্ত গাঁট হয়ে উঠছে আমাদের কাছে। মনটা একটু খারাপ হয়ে আছে। দিল্লীতে ঠান্ডাটাও জম্পেশ পড়েছে। মাঝ রাতে রেকর্ড করাও একটা ঝামেলার কাজ।
যাই হোক, চেষ্টা করব বছর শেষ হওয়ার আগে আর একবার আপনার সাথে ছোট্ট করে আড্ডা দিয়ে যেতে। জানি না, হবে কিনা। ভালো থাকবেন। কথা হবে আবার। আজ চলি, টাটা।
Baro Ghorir Talay ....
Metro Rail .... Kolkata Metro and Delhi Metro
অথচ, যেভাবে প্ল্যান করা হয়েছিল, সেগুলো করা হলে, কলকাতা মেট্রোর নেটওয়ার্ক আজ বহুদূর এগিয়ে থাকতে পারত। ব্রিটিশরা উনিশশোউনিশে প্রথম কলকাতা মেট্রোর প্ল্যান করেছিল বাগমারী থেকে সালকিয়া, শুনে … চন্দ্রবিন্দুর গানের লাইন - কেউ ভালোবেসে যায় হাওড়া বা সালকে মনে পড়তেই পারে, কিন্তু তাতে আমার বিশেষ কিছু করার নেই। যাই হোক সেই প্ল্যান বাজেটের অভাবে আর execute হয়ে উঠল না। স্বাধীনতার পর বিধানচন্দ্র রায় আবার উদ্যোগ নিলেন আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোর কারন কলকাতার বা তৎকালীন ক্যালকাটার রাস্তার ভাগ সামান্যই। এরপর সত্তরের দশকের প্রথম ভাগে আবার উদ্যোগ নেওয়া হল মেট্রোর। সাহায্য নেওয়া হল সোভিয়েত ও পূর্ব জার্মানির ইঞ্জিনিয়ারদের। তারা পাঁচটা রুট সাজেস্ট করলেন, তারমধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হল তিনটে রুট
দমদম থেকে টালিগঞ্জ
সল্টলেক থেকে রামরাজতলা
দক্ষিনেশ্বর থেকে ঠাকুরপুকুর
দমদম থেকে টালিগঞ্জ এই রাস্তায় ভীড় বেশি বলে ফার্স্ট ফেজে এই রুট বেছে নেওয়া হয়েছিল, তবে এখন এটাই দক্ষিনেশ্বর অব্দি চলে গেছে। ওদিকে জোকা থেকে তারাতলা মেট্রো এসপ্ল্যানেডে এসে মিশলে থার্ড রুট টাও হয়ে যাবে। আর সেকেন্ড রুটের সল্টলেক থেকে রামরাজাতলা শেষমেশ হাওড়া ময়দান অব্দি হবে আপাতত, এটার সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদা অব্দি মেট্রো তো চলছেই, শোনা যাচ্ছে হাওড়া থেকে শিয়ালদা জুড়তে পারে শিগগিরই।
এছাড়াও পরে বেশ কয়েকটা রুট বেড়েছে যার কাজ চলছে ফুল ফ্লেজে - যেমন এয়ারপোর্ট থেকে নিউ গড়িয়া। এর নিউ গড়িয়া থেকে রুবি বা সাইন্স সিটি খুব তাড়াতাড়ি খুলে যেতে পারে ইন্টারনেটে দেখলাম। নিউটাউনের সব কটা স্টেশনেও জোরকদমে কাজ চলেছে, সেটা তো নিজে চোখেই দেখেছি। এয়ারপোর্ট থেকে নোয়াপাড়া বোধ হয় কাজ চলছে। বারাসাতের দিকেও একটা মেট্রো যাওয়ার কথা শুনেছি। অনেক কাজ হচ্ছে।
তবে দিল্লীর ক্ষেত্রে মেট্রোর এই নেটওয়ার্ক ঈর্ষণীয়। দশটা লাইন, দুশছাপ্পান্নটা স্টেশন, সাড়ে তিনশ কিলোমিটারের নেটওয়ার্ক। কলকাতায় সেখানে তিনটে লাইন, চল্লিশটা স্টেশন, ছেচল্লিশ কিলোমিটারের নেটওয়ার্ক। অথচ, দিল্লী মেট্রো চালু হয় দুহাজার দুই সালে, আর কলকাতা মেট্রো তার থেকে আঠের বছর আগে। ইনফ্যাক্ট ব্যাঙ্গালোর, হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই ও মেট্রো নেটওয়ার্কে কলকাতার থেকে এগিয়ে গেছে।
এই সব নিয়েই এবারের এই এপিসোড
Dipanwita Lokkhi Pujo
আমার জন্য এটা খুব একটা মজার ব্যাপার ছিল. আমার মামার বাড়িতে হয় কোজাগরী লক্ষী পুজো। এই পুজোটা করা হয় মাটির সড়ায় আঁকা লক্ষীর পটে। যখন ছোট ছিলাম - পুজোর পর মামার বাড়ি যেতাম ওখানে একটা লক্ষীপুজো আর তারপর বসিরহাটে ফিরে বাড়িতে আর একটা লক্ষীপুজো। তার মানে দুবার নাড়ু খাওয়ার সুযোগ।
নমস্কার আমি সৃজন, আজ আমার এই পডকাস্ট, সৃজনের পডাবলীতে শোনাচ্ছি - আমাদের বাড়ির লক্ষীপুজোর গল্প।
আমাদের বাড়িতে পুজোটা মূর্তিতে কিংবা পটে হয় না, হয় আড়িতে। এবার আপনি জানতে চাইবেন, আড়ি জিনিসটা কি। ওটা বেত দিয়ে বানানো গোল একটা পাত্র। তার চার দিক দিয়ে বেতের চারটে স্টিক উঠে উপরে একজায়গায় মিলে যায়। সেখানে, মানে টপটা গোল একটা চাকতি আর চারটে যে হাত উঠেছে তাতেও গোল চাকতি বানানো থাকে। পাত্রটা ধান দিয়ে ভরাতে হয়, তার সাথে একটা সোনার জিনিস, কড়ি এই সব দিয়ে লাল চেলি পরানো হয়, সাথে থাকে সিঁদুর কৌটো । এভাবে আড়ি সাজিয়ে তাকে লক্ষী ঠাকুর হিসাবে পুজো করা হয়। এর সাথে অলক্ষী বিদায়ের একটা ব্যাপার আছে। কলার খোলায় চালের গুঁড়ো দিয়ে অলক্ষী বানিয়ে, বাড়ির বাইরে সেটার পুজো করে ভাঙা কুলো বাজাতে বাজাতে চার রাস্তার মোড়ে রেখে আসতে হয়। আরো ডিটেল নিয়ম কানুন আছে, আমার অতটা জানা নেই।
একদম ছোটবেলায় ভাবতাম ক্যালেন্ডারের লক্ষীপুজোর দিন কেন লক্ষীপুজো হয় না। পরে দেখলাম দুবার পুজোর নাড়ু বা অন্যান্য প্রসাদ খাওয়ার মজাটা বেশি। এখন মনে হয় ধানকে পুজো করার থেকে বড় আর কি হতে পারে একজন বাঙালির কাছে, সাথে সোনা আর কড়ি, মানে সেই আমলের কয়েন। ধন ধান্যে থাকো আলো করে বলার জন্য এর থেকে বেটার উপায় আর কিই বা হতে পারত। আর এই হেমন্ত কালেই তো ঘরে নতুন ধান ওঠে। হয়ত ধান ওঠার জন্য আর একটু সময় পাওয়া যাবে বলে দীপান্বিতা লক্ষী পুজো, কোজাগরী থেকে আর একটু পড়ে হওয়ার রীতি শুরু হয়েছিল।
লক্ষীপুজোর প্রসাদ নিয়ে কিছু না বললে অন্যায় হবে। আমার দাদু মানে বাবার বাবা ওনারা চার ভাই। সবার বাড়ি পরপর, তো ছোটবেলায় দেখতাম এই চার বাড়ির সব মহিলারা এক সাথে একটা বাড়িতে বসে নাড়ু বানাতেন, খইয়ে টাটকা গুড় জ্বালিয়ে মুড়কি বানাতেন। আবার মামার বাড়িতে দেখতাম দিদারা নারকেল দিয়ে একটা জিনিস বানাতেন। নারকেল বাটা, গুড়, কর্পূর, এলাচ - এসব দিয়ে বানানো একটা জিনিস, সেটাকে পাথরের ছাঁচে ফেলে একটা মিষ্টি আইটেম বানানো হত, এটাকে গঙ্গাজলি বা তক্তি এই দুটোর কোন একটা বলা হত, আমার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না এখন। নাড়ু , মুড়কি এসব তো এখন দোকানে পাওয়া যায়, কিন্তু ওই জিনিসটা আর কোথাও দেখিনি। আর দোকানের নাড়ুর স্বাদ নিয়ে কিছু না বলাই ভালো।
দীপান্বিতা লক্ষী পুজোয় আমার বাড়িতে আসার নেমন্তন্ন থাকল। নাড়ু, মুড়কি খাওয়াবো। আসবেন কিন্তু।
ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন, সৃজনের পডাবলী ফলো সাবস্ক্রাইব করা না থাকলে করে রাখবেন। কথা হবে শিগগিরই। আজ চলি। টাটা।
Ichamatir Bijaya - ইছামতির বিজয়া
ছোটবেলা , বিজয়া এসব কথা উঠল যখন তখন আজ, আমি সৃজন, আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীতে, আমার ছোটবেলার বিসর্জন দেখার গল্প শোনাই আপনাকে, শুনবেন ?
আপনি হয়ত টাকির বিসর্জনের কথা শুনে থাকবেন বা টিভিতে দেখে থাকবেন, চাক্ষুস ও হয়ত করে থাকবেন কখনো। আমাদের বসিরহাটের বিজয়া ও একই রকম। তবে টাকির পপুলারিটির একটা বড় কারন ওপারে বাংলাদেশ - সাতক্ষীরা। শেষ কয়েক বছর কড়াকড়ি হচ্ছে অনেক - আগে এরকম ছিল না। এপার বাংলা ওপার বাংলার ইছামতীতে এক হয়ে যেত। দু দেশের নৌকা পাশাপাশি এলে লজেন্স বিনিময় হত। আবার বিসর্জনের পর যে যার পাড়ে, যে যার দেশে। জানেন হিন্দু মেজরিটির ওপারের ওই জায়গাটার কিন্তু বাংলাদেশ, বা বলা ভালো পূর্ব পাকিস্তান হওয়ার কথা ছিল না। র্যাডক্লিফ লাইন কিন্তু খুলনাকে ভারতেই রেখেছিল, সেই গল্প নাহয় অন্য একদিন করা যাবে।
ছোটবেলায় শুনতাম সাতক্ষীরাতেও নাকি আমাদের আত্মীয়স্বজন আছেন। বাংলাদেশের কোনো রিলেটিভ মারা গেলে চার পাঁচদিন পরে হয়ত খবর আসত। তখন অবশ্য বেশ বিরক্তই লাগত। একটা লোক যাকে চিনি না, যার মারা যাওয়ায় আমার কোন ফিলিংসই নেই, থাকে অন্য দেশে - তার জন্য মাছ মাংস বন্ধ কয়েকদিন, ভালো লাগে ? বলুন।
বিসর্জনের কথায় ফিরি। বসিরহাটের বিসর্জন আর টাকির বিসর্জন কিন্তু একই রকম। তবে টাকির সাথে ভারত - বাংলাদেশ ব্যাপারটা যেটা থাকে, বসিরহাটে সেটা নেই। নৌকার সংখ্যা বোধ হয় বেশি বসিরহাটে, আর শুধু প্রতিমার নৌকা তো নয়, সাধারণ মানুষ ও নৌকা করেন নদীতে থেকে এটা এক্সপিরিয়েন্স করার জন্য। তবে সবাই নৌকায় ওঠেন এমনও নয়, নদীর দুপাড়ে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন এই বিসর্জন দেখার জন্য। কভারের ছবিটা দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন আশা করি. এটা বসিরহাট ফেসবুক গ্রূপে অলীক মন্ডলের পোস্ট থেকে নেওয়া।
আমি নিজে নৌকায় উঠেছি দু-তিন বার। একদম ছোট বেলায় পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম। আর কলেজে ওঠার পর বন্ধুরা যখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছি। পুজোর কদিন শুধু বসিরহাটে একসাথে সবাই জড়ো হতাম, তখন ইছামতীর ধারে আমাদের আড্ডা দেওয়ার জায়গা থেকে দেখতাম অনেকটা দূরে নৌকাগুলো ঘুরছে।
কলকাতার বনেদি বাড়ির অনেক পুজোর বিসর্জনও শুনেছি, নৌকায় ঠাকুর নিয়ে গিয়ে তারপর গঙ্গায় নৌকাকে সাতপাক ঘুরিয়ে তারপর বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে বসিরহাট বা টাকিতে যে গ্র্যান্ড স্কেলে ব্যাপারটা হয়, সেটা অন্য কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই।
আজ লক্ষী পুজো সেটা নিয়েই এপিসোড করা উচিৎ ছিল। তাই না ? কিন্তু জানেন, আমাদের বাড়ির লক্ষী পুজো কিন্তু আজ নয়, সেটা হয় অন্য এক দিনে, সেই গল্প বলব আগামী এপিসোডে।
ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন, সৃজনের পডাবলী ফলো সাবস্ক্রাইব করা না থাকলে করে রাখবেন। কথা হবে শিগগিরই। আজ চলি। টাটা।
Ailo Uma Barite / আইলো উমা বাড়িতে
তথ্য সূত্র -
পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি - পর্ব 1,2,3 - বিনয় ঘোষ, দীপ
কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত - বিনয় ঘোষ - দীপ
তেরো পার্বণের ইতিকথা - জহর সরকার - দেজ
চালচিত্র - সুধীর চক্রবর্তী - হরপ্পা
আলি নগরের গোলক ধাঁধা - সৌগত বসু - বুকফার্ম
কলিকাতা বৃত্তান্ত - কচি পাতা থেকে বাবু কলকাতার পুজো পার্বণ - শুভঙ্কর মাজি
দুর্গা পুজোর শুরু কবে ? না প্রশ্নটা ভুল হল। আপনি শ্রীভূমি টাইপের বড় পুজোর লোক হলে বলে বসবেন - হাম যাহা খাড়া হোতে হয়…মানে আমরা পুজো শুরু করলেই পুজোর শুরু। প্রশ্নটা রি ফ্রেজ করি বরং - বাংলায় দুর্গা পুজোর প্রচলন কবে থেকে ? নানা মুনির নানা মত। একটা ছোট বাচ্চার যেমন প্রশ্ন থাকে - আমি এলাম কি করে ? আমাকে কোথা থেকে নিয়ে এলে তোমরা । সেই একই কৌতূহল নিয়ে জানতে চেষ্টা করেছিলাম, বাংলায় দুর্গা পুজোর শুরু কবে? কোথায়? কেন? কীভাবে? উত্তর যে সব পেয়েছি এমন নয় । বরং আরো কিছু প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। আমি সৃজন, আপনার সঙ্গে সেগুলোই শেয়ার করব আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এবারের এপিসোডে। আর এক অলৌকিক দুর্গাপুজোর একটা গল্প বলব শেষে।
প্রথমেই জানাই শারদ শুভেচ্ছা। দুর্গা পুজোর শুভেচ্ছাটা বাসন্তী শুভেচ্ছা ও হতে পারত । মার্কণ্ডেয় পুরাণে প্রথম দেবী দুর্গাকে মহিষাসুর বধ করতে দেখা যায়। আর ফিজিক্যাল মূর্তির কথা বললে - রাজস্থানের নাগরে পাওয়া টেরাকোটার মূর্তির কথা বলতেই হয়। খুব সম্ভবত প্রথম শতাব্দীর সেই মূর্তিতে মহিষ, ত্রিশূল, সিংহ সব পাওয়া যায় - তবে দেবী চতুর্ভুজা। তবে গ্লোবালি দেখলে সিংহবাহিনী দেবীর অভাব নেই। মেসোপটেমিয়ায় 'ইসথার' , গ্রিসে 'আস্তারতেন', ট্রয়ে 'সিবিল' - এনারা কয়েক হাজার বছর ধরেই ছিলেন। তবে এই শরৎকালের অকালবোধনের গল্প প্রথম শোনা যায় কৃত্তিবাসী রামায়নে। কিন্তু তখনো দেবী একা। ছেলে মেয়ে নিয়ে ভরা সংসার দেখা যায়নি। ইন ফ্যাক্ট এই ছেলে মেয়ে নিয়ে দেবী দুর্গা একেবারেই বাংলার নিজস্ব কনসেপ্ট। বাকি ভারত এই সময় নবরাত্রি পালন করছে নয় দিন দেবীর নয় রূপে, ভাত রুটি, ময়দা, সুজি, পেঁয়াজ , রসুন, লঙ্কা, মশলা পাতি সব বন্ধ। বাংলায় আজ লুচি তো কাল পাঁঠা। রাস্তায় বেরোলে এগ রোল, চাউমিন, বিরিয়ানী, মোগলাই এসব তো আছেই। যদিও আগে নন ভেজ বলতে মূলত দেবীকে বলি দেওয়া পশুর মাংসই মূলত খাওয়া হত। তবে রাজস্থানের রাজপুতরা বা দেশের অন্যান্য অনেক জায়গায় শাক্ত মতে দেবীর সামনে মহিষ অথবা ছাগল বলি দেওয়ার প্রথা আছে। শুরুর দিকে বাংলার সব পুজোতে এটা কিন্তু ছিল। সময়ের সাথে সাথে এই ব্যাপারটা অলমোস্ট বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এখনো শতাব্দী প্রাচীন কিছু পুজোতে এই প্রথা আছে বলে শোনা যায়।
যাই হোক, এখন আমরা ছানা পোনা নিয়ে দেবীর যে রূপ দেখি সেটা খুব সম্ভবত বারো ভূঁইয়ার এক রাজা তাহেরপুরের কংশ নারায়ণ শুরু করেছিলেন। এই তাহেরপুর এখনকার বাংলাদেশের রাজশাহীতে। অন্য দিকে বিষ্ণুপুরের মৃন্ময়ীর যে রূপ আমরা দেখি সেখানেও ছেলে মেয়ে আছে, তবে সিকোয়েন্স আলাদা। লেফট টু রাইট লক্ষী প্রথমে নিচে, গণেশ উপরে, মাঝে দশভুজা দুর্গা, কার্তিক আর ডানদিকে নীচে সরস্বতী। এটা খুব সম্ভবত মল্ল রাজা জগৎ মল্ল শুরু করেছিলেন। এবার যদি আমরা ধরে নেই, এটা জগতমল্ল নয়, বারো ভূঁইয়ার আর এক রাজা বীর হাম্বির শুরু করেছিলেন এই দুর্গা পুজো, যিনি কংশ নারায়ণের সমসাময়িক , তাহলেও মোটামুটি একটা সময়ের আন্দাজ পাওয়া যায়। এছাড়াও এনাদের থেকে কিছু আগে, ফরটিন্থ সেঞ্চুরির রাজা জগৎরাম রায়ের নাম শোনা যায় যিনি নাকি বাংলায় দুর্গোৎসব শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেভাবে কোন ডকুমেন্টেশন না থাকায় এগুলোর কোনটা সত্যি আর কোনটা কেবলই মিথ সেভাবে জানা যায় না।
এই রাজাদের থেকেও পুরোনো একজন দুর্গা উপাসক ছিলেন এই বাংলায় - ইছাই ঘোষ। আজ থেকে মোটামুটি হাজার বছর আগে , এখনকার বর্ধমানে জয়দেব কেন্দুলির পূবদিকে অজয়নদের দক্ষিণতীরে গৌরাঙ্গপুর বলে যে গ্রাম আছে, সেটাই খুব সম্ভবত এক সময় ছিল ঢেক্করী বা ঢেকুর বা ত্রিষষ্ঠীগড়। সেখানে ছিলেন রাজা ঈশ্বর ঘোষ বা ইছাই ঘোষ। তিনি দেবী দুর্গার উপাসক। অজয়ের অপরপারে আছে, লাউসেন তলা। লাউসেন ছিলেন ধর্মঠাকুরের উপাসক। লাউসেন যুদ্ধে কিন্তু ইছাই ঘোষকে হারিয়ে দেন। অর্থাৎ বাংলার নিজের দেবতা ধর্ম, যিনি রাস্তার ধারে গাছের তলায় পাথর রূপে থাকতেন, তিনি কিন্তু লড়াই করে বৈদিক দেবতাকে হারিয়ে দিতেন। মধ্যযুগ পর্যন্ত বাংলায় লোকদেবীর যে প্রাধান্য, ষষ্ঠী, শীতলা, মনসা, ধর্ম সেটা আস্তে আস্তে মেনস্ট্রিমে মিশতে থাকে মঙ্গলকাব্যর সময় থেকে। মুকুন্দরাম, রূপরাম, ঘনরাম, খেলারাম এনারা লেখেন - মনসামঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল। একইভাবে শিবায়নে শিব হয়ে ওঠেন আমাদের নির্ভেজাল বাঙালি ভোলানাথ। উত্তর ভারতীয় শিবের চেহারা আর বাংলায় ভুঁড়িওয়ালা শিবের চেহারায় যে পার্থক্য সহজেই লক্ষ্য করা যায়।
Boiyer Shopping Mall
Amazon : amzn.to/45i0JRY
Sristisukh : sristisukh.com/ss_new/product/digital-safety/
আগেরবার যখন কলকাতা গেলাম, সেবার দেখে এলাম ইনস্টাগ্রামে ট্রেন্ডিং বইয়ের শপিং মল স্টোরি। জায়গাটা আমার বাড়ির কাছেই , সল্টলেক স্টেডিয়ামের কাছে। স্পেসিফিক্যালি বললে, সল্টলেক আমরি থেকে বাইপাসের দিকে যেতে গেলে বাঁ দিকে পড়বে, সাই এর গেটের উল্টো দিকে। এমন নয় যে আগে এই টাইপের বইয়ের দোকান কলকাতায় ছিল না। অক্সফোর্ড, ক্রসওয়ার্ড এগুলো তো ছিলই। কিন্তু একটা উঁচু হলকে কাঠের সিঁড়ি লাগিয়ে তিনতলা চমৎকার একটা ব্যাপার বানানোর আইডিয়াটা দারুন। ইনফ্যাক্ট দশম অবতারের একটা গানে অনির্বাণ আর জয়া আহসানকে ওখানে প্রেম করতেও দেখা গেছে। এবার দশম অবতারের ব্যাকড্রপ যেহেতু এখন থেকে কুড়ি বছর আগে, সেখানে ওনারা টাইম ট্রাভেল করে কি করে গেলেন সেটা নিয়ে দেখলাম ফেসবুকে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সিনেমা আর বাস্তব আলাদা, ওটা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই। তবে পুজোয় কলকাতা থাকছি। সময় সুযোগ পেলে সিনেমাটা দেখার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক, হয় কি না। যদিও এই এপিসোড দশম অবতার নিয়ে নয়। আজ আমার এই পডকাস্ট, সৃজনের পডাবলীতে আমি সৃজন আড্ডা দেব, সাজানো গোছানো, ট্রেন্ডিং এই বইয়ের দোকান নিয়ে।
বইমেলা এপিসোডে বলেছিলাম মনে আছে, বইমেলা একমাত্র এমন একটা জায়গা যেখানে গেলে মনে হয় আমার একটু পয়সাকড়ি থাকলে ভালো হত, অনেক বইপত্তর কিনতে পারতাম, বাকি জাগতিক লোভ লালসা আমার একটু কমের দিকেই। এই দোকানে গিয়েও কিছুটা বইমেলার মতনই অবস্থা। প্রচুর বই , খুব সুন্দর করে সাজানো আছে। সব রকমের বইই আছে মোটামুটি , তবে ইংলিশ বই ই বেশি, বা প্রায় পুরোটা জুড়ে ইংলিশ বই। বাংলা বই, দোতলার এক কোনায়। সংখ্যায় ও কম। তবে ফেলুদা - ব্যোমকেশ টাইপের পপুলার বই আছে দেখলাম। বই ছাড়াও পেন , কফি মগ, নোটপ্যাড এসব ও আছে। বই নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখার জন্য বেশ ভালো জায়গা। যে জিনিসটা অনলাইনে করা যায়না। হাতে একটা বই নিয়ে দেখলে, দু পাতা পড়লে, সেটা কেনার চান্স বোধ হয় বেড়ে যায়। যে জন্য বইমেলায় যত বই বিক্রি হয়, বাকি সময় তত বই খুব সম্ভবত বিক্রি হয় না।
কলেজ স্ট্রিতেও লোকে যখন যায়, আগে থাকতে বইয়ের লিস্ট করেই যায়। সেখানে গিয়ে বইয়ের নাম বলে বইটা কিনে আনে। এভাবে তাক থেকে বই নিয়ে দুপাতা পড়ে বই কেনা হয় কি ? আমি তো করিনি কখনো।
যেদিন স্টোরিতে গেছিলাম, ছেলের জন্য দু তিনটে বই কিনলাম, ওর বয়সের জন্য সুটেবল বই। আমার নিজের জন্য দু চারটে বই হাতে তুলেও নিয়েও শেষ পর্যন্ত রেখে এসেছি। পরের দিন গেলে হয়ত আগে ওগুলো কিনব। বইগুলো রেখে এসেছি কারন, এত গুলো পূজাবার্ষিকী কিনেছি - সেগুলো পড়তে হবে আগে। না হলে বই কিনে পড়েই থাকবে। আনন্দমেলা কিছুটা পড়েছি, অন্তরীপ শুরু করেছি। দেশ , কিশোর ভারতী, শুকতারা , প্রতিদিন পড়ে আছে। শুরু করা হয়নি এখনো।
ও একটা কথা তো বলতেই ভুলে গেছি, স্টোরিতে একটা জিনিস বেশ খারাপ লাগল। ওরা সৃষ্টিসুখের ডিজিটাল সেফটি বইটা রাখেনি। কি কান্ড ভাবুন একবার। তাই বইয়ের শপিং মলে না পেলেও আমাজনে ডিজিটাল সেফটি পেয়ে যাবেন, চাপ নেই। সৃষ্টিসুখের সাইটে তো পাবেনই। এখনো না কিনে থাকলে, কিনে ফেলুন। লিংক ডেস্ক্রিপশনে দেওয়া আছে। না পড়লে বিপদ আপনার, আমার কি! আমার কাজ জানিয়ে দেওয়া, আমি জানিয়ে দিলাম।
ভালো থাকবেন, পুজো আনন্দ করে কাটাবেন , কথা হবে আবার, আজ চলি, টাটা।
Pujor Gandho
Spotify Podcasters Day 2023, Delhi ... My Experience
স্পটিফাইয়ের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা একজন বাংলা পডকাস্টারকে এই অনুষ্ঠানে ডাকার জন্য।
প্রথম থেকেই বলি, ওনারা মেলে লিখেছিলেন যে - চারটে থেকে অনুষ্ঠান শুরু, তাই সাড়ে তিনটের মধ্যে পৌঁছে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে, ভালো কথা। ওদিকে, সাড়ে বারোটায়, আমি যেখানে থাকি, দ্বারকা, সেখানে আকাশ কাঁপিয়ে বৃষ্টি এল। আগেই গুগল ম্যাপে দেখে নিয়েছিলাম রুট। ছত্ত্বরপুর, মানে যেখানে প্রোগ্রামটা হবে, সেটা ওই, ঘন্টা দেড়েকের ডিসট্যান্স। প্রথমে ভেবেছিলাম, দেড়টার দিকে বেরোব, ছুটির দিনের ল্যাদ খেয়ে বেরোতে বেরোতে দুটো বাজল। ততক্ষনে, বৃষ্টি থেমে গেছে। কিন্তু আমার টিপিক্যাল বাঙালীসত্ত্বা বাধ্য করল ছাতা সাথে নিয়ে বেরোতে। আমার বাবাকে সবসময় দেখেছি, কোথাও গেলে ছাতা আর জলের বোতল সাথে থাকবেই। রাস্তায় আর বৃষ্টি পাইনি, যেটা পেয়েছি - দিল্লির কুখ্যাত জ্যাম। আসছি সেটায়। দিল্লীতে আসার পরেই পরেই পরিচিত অফিস কলিগ যারা এখানে আগে থাকতে আছে - তারা বলে দিয়েছিল, পুরোনো দিল্লীর দিকে যেতে হলে, মেট্রোর থেকে ভালো অপশন কিছু নেই আর এখানকার জ্যাম ভয়ানক।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে টোটো করে পালাম মেট্রো স্টেশন, যেটা পড়ে ম্যাজেন্টা লাইনে, পালাম থেকে হজ খস , সেখানে লাইন পাল্টে ইয়েলো লাইন। এই হজ খস এই মুহূর্ত ভারতের ডিপেস্ট মেট্রো স্টেশন। মাটি থেকে পঁচানব্বই ফুট নিচে। যদিও আমাদের হাওড়া মেট্রো স্টেশন চালু হয়ে গেলে সেই স্টেশন হবে আরো ডিপ, মাটির থেকে একশ আট ফুট নিচে। যাই হোক, ইয়েলো লাইন ধরে ছত্ত্বরপুর স্টেশনে নামলাম তিনটের একটু আগে। ওখান থেকে আরো এগারো কিলোমিটার মতন যেতে হবে। নেমে অটোর সাথে দরদাম করে দুশো টাকায় রফা হল। বাকিরা আড়াইশ, তিনশ এরকম রেট হাঁকছিল। কিছুটা যাওয়ার পরেই শুরু হল জ্যাম। অটো নড়েই না। সেই জ্যাম ঠেলে যেতে কুড়ি - পঁচিশ মিনিটের রাস্তা লাগল এক ঘন্টা দশ মিনিট।
গিয়ে পৌঁছে দেখি, তখনো শুরু হয়নি। আমরা মজা করে বাঙালির টাইম বলি বটে, বিদেশী কম্পানিও দেখি খুব একটা ঘড়ি ধরে চলে না। তেইশে সেপ্টেম্বর দুহাজার তেইশে এই অনুষ্ঠান, এর ঠিক এক বছর আগে বাইশে সেপ্টেম্বর, দু হাজার বাইশ এরকমই একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল কলকাতায় - ITC রয়্যাল বেঙ্গলে। সেই অনুষ্ঠানে আলাপ হয়েছিল এরকম দুজনকে দেখতে পেলাম। ধ্রুবাঙ্ক বৈদ্য আর ঋতুরাজ সিং। ধ্রুবাঙ্ক, স্পটিফাই ইন্ডিয়ার পডকাস্ট হেড। চিনতে পারলেন। বললেন - আমি কন্টিনিউ করছি দেখে ভালো লাগছে ওনার। বললাম - শুধু আমি নই আমাদের অনেকেই কন্টিনিউ করছে, খুব ভালো ভালো কাজ হচ্ছে, পার্থ, সায়ন এদের নিয়ে কথা হল। শুধু তাই নয় - পরে যারা শুরু করেছেন তাদের মধ্যেও নতুন নতুন খুব ভালো কাজ। তাদের ও কয়েকজনের কথা হল। নিবেদিতার কথা হল - কিভাবে নিজের চ্যালেঞ্জকে জয় করে পডকাস্ট করছে শুনে খুশি হলেন, ঐশ্বর্য জার্মানিতে থেকে বাংলায় পডকাস্ট করছে এটাও ওনার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগল। গ্লোবালি ধীরে ধীরে বাংলা কন্টেন্ট জনপ্রিয় হচ্ছে এটা বললেন উনি। তবে ক্রাইম, হরর এই জনার খুব বেশি জনপ্রিয় এখনো, কিন্তু নন ফিকশনে সিগনিফিক্যান্ট গ্রোথ শুরু হয়েছে । ঋতুরাজের সাথে খুব একটা কথা বলার সুযোগ হল না। জাস্ট - হাই হ্যালো টাইপ।
পৌনে পাঁচটার দিকে গিয়ে শুরু হল অনুষ্ঠান। প্রথমে কুইজ। মেন্টি ডট কম বলে একটা পোর্টাল খুলতে হবে ফোনে। তাতে একটা কোড দিতে হবে। ৫টা প্রশ্ন, MCQ তার সাথে ফাস্টেস্ট ফিঙ্গার ফার্স্ট। ফোনেই অপশন সিলেক্ট করতে হবে পনের সেকেন্ডের মধ্যে। আমার দুটো না তিনটে ঠিক হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রাইজ পাওয়ার চান্স নেই। এর পর বক্তব্য রাখতে উঠলেন অমরজিৎ বাত্রা - এমডি স্পটিফাই ইন্ডিয়া এবং জিএম - সাউথ এশিয়া, মিডল ইস্ট ও আফ্রিকা। ওনার পর বক্তব্য রাখলেন - ধ্রুবাঙ্ক বৈদ্য। এই অংশ প্রায় পুরোটা আমার ইউটিউব চ্যানেলে দিয়েছি। ভারতে পডকাস্ট মানুষ সব থেকে বেশি শোনে স্পটিফাইতে। ওনারা কি ভাবছেন, কি করবেন, সেটা জানা কিন্তু জরুরী।
এর পরের সেশনটায় ছিলেন চার জন একসাথে - Durga Raghunath, Aryaan Misra, Ankur Warikoo এবং Leeza Mangaldas . দূর্গা মিডিয়ার লোক, গুগল নিউজের হেড অফ পার্টনারশিপ, আরিয়ান মিশ্রার দেশি ক্রাইম পডকাস্ট বিশাল পপুলার, লিজা মঙ্গলদাসের the sex podcast কে তিনি বলছেন - honest, accurate, judgment-free answers to your most asked sex-related questions. আর Ankur Warikoo র প্রোফাইল তো বিশাল বড় - স্টার্ট আপ ফাউন্ডার, মোটিভেশনাল স্পিকার, ইউটিউবার, পডকাস্টার আরো কত কি । তার পরের সেশনে - রাজকুমার রাওয়ের সাথে কথা বললেন বরখা দত্ত। যেমনভাবে এখনকার গেস্ট পডকাস্টগুলো হয় সেরকম ফরম্যাটে।
Tomake Chai ...
চা লাগবে ? আরে চা ছাড়া আমাদের চলে নাকি ? ট্রেনের জার্নি হোক বা অফিসের সিরিয়াস মিটিং, সকালে ঘুম ঘুম ভাব কাটাতেই হোক বা সন্ধেবেলা টিভিতে শাশুড়ি বৌ এর ঝগড়া দেখার সময় - চা লাগবেই, অতিথি এলে তো কথাই নেই এবং এটার জন্য কাউকে কিছু বলতেও হয় না, এতটাই আমাদের অভ্যেসে ঢুকে গেছে। অথচ, আজ ভাবলে অবাক লাগবে, এটা কিন্তু আমাদের acquired taste, চা খাওয়ার অভ্যেস আমাদের বেশ নতুন। ব্রিটিশ সাহেব এবং কিছু দেশি বাবুর বাইরে মাস স্কেলে চা খাওয়া শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে।
এই এপিসোডটা কালীদার চায়ের দোকানে হলে বেশি ভালো হত। দিল্লীতে চায়ের দোকান নেই এমন নয়। যা আছে তার সাথেই মানিয়ে চলছি। চায়ের সাথে একদল মানুষের দুঃখের, কষ্টের একটা গল্প আছে, সেটা বলব আজ, তবে এপিসোড পুরোটা শুনতে হবে। কথা দিচ্ছি - আপনার কাপের চা ঠান্ডা হওয়ার আগেই এপিসোড শেষ হয়ে যাবে।
চা তাড়াতাড়ি শেষ করা নিয়ে একটা মজার জিনিস মনে পড়ল - আমার কলকাতার অফিসের এক সিনিয়র কলিগকে এত দ্রুত গরম চা শেষ করতে দেখেছি, যে একদিন তাকে মজা করে বলেছিলাম, কে কতদিন চাকরি করছে সেটা কে কত তাড়াতাড়ি গরম চা শেষ করছে সেটা দেখে বোঝা যায়। আসলে বাড়িতে চা যতটা আয়েস করে খাওয়া হয়, অফিসে কাজের তাড়ার জন্য সেটা কখনোই হয় না।
এই এপিসোড শুরু হয়েছে ট্রেনে চা বিক্রির সাউন্ড দিয়ে, এর মধ্যে রাজনীতি খুজবেন না প্লিজ, ভারতবর্ষে জনগনের মধ্যে চায়ের জনপ্রিয়তা শুরু হয়েছিল ট্রেন স্টেশনের মধ্যে দিয়েই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ভারতে বড় বড় স্টেশনে চায়ের দোকান লাগানোর ব্যবস্থা হয়েছিল ব্রিটিশ শাসকের তরফে, যাতে ভারতীয়রা চা সম্পর্কে জানতে পারে, চায়ের একটা পপুলারিটি তৈরী হয় । এই কাজে ব্রিটিশরা যে শুধু সফল হয়, তাই নয়, ভারতীয়রা নিজেদের মতন করে চায়ে আদা, এলাচ, গোলমরিচ এই সব ভারতীয় মশলাপাতি দিয়ে জিনিসটাকে অন্য একটা জায়গায় নিয়ে যায়। তবে ভারতের কেউ চা জিনিসটা জানত না এটা বললে ভুল হবে। আসামে দীর্ঘ্যদিন ধরেই চা পাতাকে কিন্তু রান্নার তরকারিতে ব্যবহার হত, তবে এখন যেভাবে চা খাওয়া হয় সেটা হত না। একটু পিছিয়ে যাই, প্রথম থেকেই বলি বরং।
আমাদের আসাম থেকে শুরু করে চীনের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্ত, যেটা ভারতের লাগোয়া, সেখানে বেশ কিছু জায়গাতেই চা পাতা পাওয়া যায় বহু বহু বছর ধরে। তবে চীনের পুঁথি পত্রে লেখা আছে, আজ থেকে হাজার পাঁচেক বছর আগে শেন নাং বলে একজন চীনের কোন এক রাজা ছিলেন। তিনি জল ফুটিয়ে খেতেন। তো তার সেই ফোটানো জলে চা পাতা উড়ে এসে পড়ে। চায়ের সুগন্ধ তাকে মুগ্ধ করে। তিনি রেগুলার চা খেতে শুরু করেন, তার পর চীনের পাবলিকের মধ্যে জনপ্রিয় হয়। এই রাজার গল্পটা রণবীর ব্রার KBC তে বলেছেন, ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীর ফুড কাহিনীতেও এই ব্যাপারটা বলা আছে। পার্সোনালি এটা মানতে আমার একটু আপত্তি আছে কারন, হুট্ করে অচেনা অজানা কোন একটা পাতা এসে জলে পড়ল, আর রাজা সেটা খেয়ে ফেললেন - এই ব্যাপারটা আমার খুব একটা লজিক্যাল লাগে না। সেই সময় রাজাদের অনেক শত্রু থাকত, ফলে - কেউ বিষাক্ত কিছু দিল কিনা এরকম একটা ভয় ও থাকত। তাই রাজা নিজে প্রথমে তিতকুটে একটা পাতা দেওয়া জল খাবেন, সেটা খুব একটা মনে হয় না।
আর একটু এগিয়ে আসি,ষোলশ খ্রিস্টাব্দ, পর্তুগীজ নাবিকরা সারা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের হাত ধরে ইউরোপে পাড়ি দিল - চা। চা বলতে - খুব হাল্কা লিকারের চা, তাতে দুধ চিনি এসব তখনো পড়েনি। আরো কিছু বছর পরে ষোলশ বাষট্টি সালে পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথেরিন ব্রিগান্জার সাথে ইংল্যান্ডের রাজা চার্লস টু র বিয়ের পর ব্রিটেনে পা রাখল চা। রাজপরিবারের বৌমা চা খান, ফলে ব্রিটিশ এলিট ক্লাসে সহজেই জায়গা পেয়ে গেল সে। এরপর ব্রিটিশরা ভারতে এসে ঘাঁটি গাড়ে। এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির ব্যবসার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকত চীন থেকে চা নিয়ে সেটা ইংল্যান্ডে পাঠানো। ততদিনে চা সাহেবদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে এবং ট্রাডিশনাল চায়ের পাশাপাশি দুধ এবং চিনি দেওয়া ও শুরু হয়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে ।
Dillir Biryani, Kolkatar Biryani
নমস্কার আমি সৃজন। আজ সৃজনের পডাবলীর এই বিরিয়ানি স্পেশাল এপিসোডে দিল্লীর বিরিয়ানির নিন্দে করব। সহমত না হলে এপিসোড স্কিপ করতে পারেন।
দিল্লিতে যে বিরিয়ানীটা পাওয়া যায় তার নাম মুরাদাবাদী বিরিয়ানি, এবং এটা কিলোদরে পাওয়া যায়। আপনি চাইলে আড়াইশ গ্রাম, পাঁচশ গ্রাম, এক কিলো এরকম ওজন করে বিরিয়ানি নিতে পারবেন। তাতে তেজ পাতা, ধনে পাতা, কাঁচা লঙ্কা এরকম সমস্ত জিনিস পাওয়া যায়। আমি সিওর, বিরিয়ানি বললে এগুলোর কথা আপনার মাথায় আসবে না। যে কোন বিরিয়ানীরই একটা বিশেষত্ব, আপনার সামনে প্লেটে দিলে, পার্সেল করে আসার পর খুললে, তার গন্ধটা আপনার মন ভরিয়ে দেবে, সেটা মিসিং। খেতেও ঝোল ভাত টাইপের একটা ব্যাপার। এবং এই এপিসোড করার আগে আমি যেখানে থাকি সেখানকার বেশ কিছু ছোট বড় দোকানের বিরিয়ানি যেমন খেয়েছি, তেমনি জামা মসজিদের পাশে করিমসের দোকানের বিরিয়ানি ও খেয়েছি। সব জায়গাতেই equally হতাশ হতে হয়েছে আমাকে। এক বারই গেছি। আল জাওয়াহার এ ট্রাই করা হয়নি, পরের দিন হয়ত করব, কিন্তু খুব ভালো কিছু আশা করব না।
পশ্চিমবঙ্গের বাইরে রিসেন্ট পাস্টে আমার যে বিরিয়ানিটা সব থেকে ভালো লেগেছিল, সেটা হল আরাকু ভ্যালিতে বোরা কেভস দেখে বেরিয়ে যে ব্যাম্বু বিরিয়ানিটা খেয়েছিলাম সেটা। ওহ ব্যাম্বু বিরিয়ানি শুনে ভাববেন না বিরিয়ানিতে বাঁশ দেয়। তা নয়, দেয় চিকেন বা মাটনই। বাঁশের মধ্যে বিরিয়ানির সব কিছু ঢুকিয়ে, মুখ বন্ধ করে, সেটাকে পোড়ানো হয়। ফলে, বাঁশের ভেতর বিরিয়ানিটা দম পেয়ে রান্না হয়। খুবই ভালো। কলকাতা বিরিয়ানির মতনই কম স্পাইসি, কম তেল মশলার । খেতেও ভালো। কলকাতা বিরিয়ানীতে কম তেলের ম্যাজিকটা কে করে বলুন তো ? সেটা করে আলু। আলু রান্নার পুরো ফ্যাটটা absorb করে নেয়। ফলে ভাতটা আপনার হেভি মনে হয়না। একটু বেশি সাঁটানো যায়।
যাই হোক, বিরিয়ানি নিয়ে একদম অন্যরকম একটা ঘটনার কথা বলি, হায়দ্রাবাদের এক ভদ্রলোক বিরিয়ানী খাবেন বলে অনলাইনে অর্ডার করেছেন, বিরিয়ানির বদলে ওনার কাছে পৌঁছায় সাম্বার রাইস। ভদ্রলোক তো রেগে বোম। অনলাইনে দিলেন কমপ্লেন ঠুকে। সাথে সাথে ওনার কাছে কম্পানি থেকে ফোন এল - না না, ভুল হয়ে গেছে, এক্ষুনি রিফান্ড করে দিচ্ছি - একটা QR পাঠাচ্ছি, স্ক্যান করে আপনার UPI পিন দিয়ে approve করে দিন, টাকা সাথে সাথে পেয়ে যাবেন। বাকিটা বুঝতেই পারছেন, QR স্ক্যান করে পিন দিলে একাউন্ট থেকে টাকা যাবেই। এই রকম অনেক ঘটনা আর তার সাথে সাথে, কি কি সতর্কতা মেনে চলতে হবে সেই সব বলা আছে সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত ডিজিটাল সেফটি বইতে। পড়তে পারেন। হয়ত কিছু বিপদ এড়াতে পারবেন। না পড়লে বিপদে আপনি পড়বেন আমার কি , এমনিতেও বইয়ের দাম এক প্লেট বিরিয়ানির থেকে কম।
sristisukh.com/ss_new/product/digital-safety/
amzn.eu/d/ajE2sae
www.peepultree.world/livehistoryindia/story/living-culture/who-put-the-potato-in-the-kolkata-biryani
www.timesnownews.com/business-economy/personal-finance/planning-investing/article/man-loses-half-a-lakh-in-online-fraud-because-of-biryani-know-how/553633
Bhadoro Ashino Mashe Chata Dharo He / Offbeat Purulia / Part 5
নমস্কার, আমি সৃজন। আমার পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর স্পেশাল সেগমেন্ট অফবিট পুরুলিয়ায় আজ আপনার সাথে গল্প করব ছাতা পরব নিয়ে। এমন একটা উৎসব যেটা কেবল বছরের একদিনই হয়, খুব কম জায়গায় হয়। তার মধ্যে যেটা সব থেকে ফেমাস - চাকলতোর, তার কথাই বলব।
স্থানীয় রাজার মাথায় যে ছাতাটি এখানে তোলা হয় সেটির উচ্চতা ২৫ থেকে ৩০ ফুট। রাজা বলতে রাজপরিবারের বংশধর। শালের খুঁটির উপরে বেঁধে সাদা রঙের কাপড় দিয়ে তৈরি হয় ছাতা। আগে পালকিতে চড়ে রাজা রাজপ্রাসাদ থেকে মেলায় আসতেন ছাতা তুলতে। এখন আর পালকির ব্যবহার হয় না যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রাজা আসেন মারুতি বা টাটা সুমোতে চেপে। আগে ছাতা হতো অনেক বড় মাপের। কাপড় লাগত ১৪ গজের মতো। এখন সাইজ অনেক কমেছে তাই কাপড় কম লাগে। ছাতা মেশিনে সেলাই করা হয়। আগে প্রত্যেক বছর নতুন শালের খুঁটি ব্যবহার করা হতো, তা আর এখন হয়ে ওঠে না। এমনিতে কাঠের দাম আকাশছোঁয়া তারপরে শালকাঠ তো আরও রেয়ার। এখন তাই পুরনো কাঠকেই যত্ন করে রাখা হয় পরের বছরের জন্য।
এই পরবের শুরু কোথায় সেটা জানতে গিয়ে ইন্টারনেটে বেশ কিছু ইনফরমেশন পাচ্ছি, যেগুলো একটা অন্যের সাথে যায় না। আনন্দবাজারের একটা রিপোর্টিংয়ে আমি পঞ্চকোট রাজবংশের বর্তমান উত্তরসূরি সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও এর একটা বক্তব্য পাচ্ছি, আমার সেটা সব থেকে বেশি রিলায়েবল ও লজিক্যাল বলে মনে হয়েছে। আনন্দবাজারের লেখাটা থেকে একটু পড়ে শোনাই -
উৎসবের সূচনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পঞ্চকোট রাজবংশের নাম। ওই রাজবংশের অন্যতম উত্তরপুরুষ সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও জানালেন, একদা পঞ্চকোট রাজবংশের এক রাজা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বেশ কিছুদিন কেটে যাওয়ার পরেও রাজার কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজা যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন, না পরাজিত, সে সম্পর্কে প্রজা বা পরিবারের সদস্যেরা ছিলেন অন্ধকারে। তখন দূত মারফত খবর আসত। যেখানে দূতের দেখা মিলছিল, সেখানে খোঁজ নিয়েও রাজার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। সোমেশ্বরবাবুর কথায়, “এই অবস্থায় রাজবাড়ির সকলের সঙ্গে প্রজারাও পড়লেন চিন্তায়। তাহলে কি কোনও দুঃসংবাদ মিলতে চলেছে? দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগে যখন রাতে ঘুম নেই সকলের, সে সময় হঠাৎই একদিন খবর এল, রাজা যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসছেন।” জনশ্রুতি, এর পরেই ঠিক হল রাজা যে যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন, সেই খবর প্রজাদের জানাতে হবে। কিন্তু কী ভাবে প্রজাদের কাছে দ্রুত বিজয় সংবাদ পৌঁছে দেওয়া যাবে? তখন জয়ের প্রতীক হিসাবে ছাতা তুলে বিজয় বার্তা ঘোষণা করে দেওয়া হল।
ভাদ্র সংক্রান্তির এই দিনটিতে সেই বিজয় বার্তা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই থেকে আজও মানভূমে এই বিজয় দিবস ‘ছাতা পরব’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সোমেশ্বরবাবু বলেন, “পঞ্চকোটের রাজারা খুবই প্রজাবৎসল ছিলেন। তাই যখন রাজার বিজয় উৎসবের খবর রাজ্যে পৌঁছল, তখন সকলে মিলে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। আর এই ছাতা সাদা রঙের। আমাদের কুলদেবতা শ্যামরঘুবর। তাঁর ছাতার রংও সাদা। সেই ছাতা তুলেই বিজয়ের খবর পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।”
এই ছিল আনন্দবাজারের লেখা।
আর একটা খুব ইম্পরট্যান্ট রেফারেন্স তরুণদেব ভট্টাচার্যর লেখা পুরুলিয়া - সেখানে ছাতা পরব নিয়ে কি বলা আছে পড়ে শোনাই -

বই থেকে এই টুকুই। ইন্টারনেটে কয়েকটা জায়গায় ছাতা পরবের সাথে ইন্দ্রদেবতার পুজো রিলেট করা হয়েছে। সেটা আমার খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি। ইঁদ পরব বলে আর একটা উৎসব হয় এই সময়, আমার মনে হয়েছে সেটার সাথে নামের মিল থাকায় ইন্দ্রদেবতার কথা চলে এসেছে। ইঁদ পরব নিয়ে অন্য একদিন না হয় বলা যাবে।
এই চাকলতোর যেতে হলে ট্রেনে টামনা স্টেশনে নামতে হবে, পুরুলিয়া থেকে বরাভূম বা চক্রধরপুরের দিকে যে লাইন যাচ্ছে, সেই লাইনে পুরুলিয়ার পরের স্টেশন টামনা, বাসে গেলে পুরুলিয়া থেকে বড়বাজার, অযোধ্যা পাহাড় বা জামশেদপুর যে বাস যাচ্ছে, তাতে করে টামনা মোড় নেমে সেখান থেকে অন্য কোন বাস বা টোটো করে যেতে হবে।
ঘটনাচক্রে আমি গতবছর একটা কাজে ওই দিকে গেছিলাম, তাই আমার দেখার ও জানার সৌভাগ্য হয়েছিল - কি বিশাল আয়োজন হয় ওই মেলায়। তবে আমার রাজাকে বা রাজার মাথায় ছাতা তোলা দেখা হয়নি। সেটা আমি যখন ওখান দিয়ে যাচ্ছি, তার অনেক আগেই হয়ে গেছে। তবে মেলায় বিশাল বিশাল ধামসা মাদল বিক্রি হতে দেখেছি। ছোট ছোট খেলার, যেগুলো রিং ছুড়ে টার্গেটে লাগানো বা লটারি টাইপের ব্যাপার, সেরকম খেলা হতে দেখেছি। এগুলো প্রাইজ হাঁসের ডিম, বা এরকম খুব সিম্পল জিনিসপত্র। দেশি মদ বিক্রি হতে দেখেছি, বিভিন্ন ধরনের খাবার দাবারের স্টল দেখেছি।
Ek Ekke Ek
Pujabarshiki Ananda mela o anyanya
নমস্কার আমি সৃজন, আজ আমার পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এই এপিসোডে ফ্রেন্ডশিপ ডে স্পেশাল নস্টালজিয়া সফর, পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা নিয়ে।
প্রথম কয়েক বছর মা আমাকে গল্প পড়ে শোনাতো, তারপর তো নিজে নিজে কতক্ষণে পড়ব , সেটার জন্য ছটফট করতাম। এখন অডিও বুক এবং অডিও ড্রামা ফরম্যাটে বই বেরোয় , কিন্ত শুয়ে শুয়ে মার গলায় গল্প শোনার আলাদা একটা মজা আছে, সে মজাটা অডিওবুকে কোথায় ? আর এই মজাটা বোধ হয় এখনকার রিলস, শর্টস এর জেনারেশন বুঝতেই পারল না। তখন আকাশবাণী আর দূরদর্শনের লিমিটেড কন্টেন্ট, ফলে বইয়ের খুব একটা কম্পিটিশন ছিল না। এখন বিভিন্ন ওটিটি বা ইউটিউব, স্পটিফাইয়ের মতন অন ডিমান্ড কন্টেন্টের দৌলতে বই পড়ার অভ্যাসটাই হারিয়ে যেতে বসেছে ।
তো, যেটা বলছিলাম, আমার প্রথম পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা 1990 তে। কভারে যে বাচ্চা ছেলের ছবিটা দেখা যাচ্ছে, ওটা আমি, ছবিটা প্রথম আনন্দমেলা পড়ার এক বছর আগে তোলা, 1989 এ । ছবিটা দেখে আমার সেই সময়ের বয়েস খানিকটা আন্দাজ করতে পারছেন আশা করি। সেই পূজাবার্ষিকীর লেখক হিসাবে যাদের কথা মনে পড়ছে - সত্যজিৎ রায়, বিমল কর, সুনীল গাঙ্গুলী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়, দুলেন্দ্র ভৌমিক , মতি নন্দী, শৈলেন ঘোষ এবং সম্ভবত দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যজিৎ এর ওটাই শেষ শঙ্কু উপন্যাস ছিল - স্বর্ণপর্নী। আর সেই সময় আনন্দমেলার যে লোগোটা ব্যবহার হত, যেটা এই পডকাস্ট কভারেও দেওয়া আছে, সেটা কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি। যাইহোক এই একটা বইয়ের হাত ধরে, কিকিরা , কাকাবাবু , পাণ্ডব গোয়েন্দা, অর্জুন এদের সাথে আলাপ হল এবং সেই আলাপ চলল দীর্ঘদিন। তারপর সময়ের সাথে সাথে সুচিপত্র থেকে পুরোনো নাম কমেছে, নতুন নাম যুক্ত হয়েছে বা কলাবতী, দীপ কাকু, মিতিন মাসির মতন চরিত্রদের সাথে পরিচয় হয়েছে।
আমার পড়া প্রথম সেই আনন্দমেলায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস ছিল চক্রপুরের চক্করে। সেই প্রথম আলাপ ওনার সাথে। আর এবার দেখলাম আনন্দমেলায় শেষ সুতোটা ছিড়ে গেল। এখনো হাতে পাইনি যদিও, কলকাতায় গিয়ে কিনব । নাইন্টিসের কথা যখন উঠেছে, কবীর সুমনকে একটু কোট করি - শীর্ষেন্দুর কোনো নতুন নভেলে, হঠাৎ পড়তে বসা আবোল তাবোলে । শীর্ষেন্দুর নতুন নভেল এবার আনন্দমেলায় নেই। তবে, ফেসবুকে দেখলাম দেশে নাকি ওনার অদ্ভুতুড়ে সিরিজ বেরোবে । দেশ, চিরকালই গুরুগম্ভীর ব্যাপার । কিনলেও অনেক সময়েই পড়ব কি পড়ব না ভাবতে ভাবতে সময় কেটেছে। আনন্দমেলা আর শেষ কয়েক বছর কিশোর ভারতী আমার কাছে খুব স্টেপল ফুড বলে মনে হয়েছে। কোন একটা উপন্যাস ধরলাম, একেবারে শেষ করে উঠলাম। দেশ একটু গভীর , জটিল প্লট অনেক সময়েই পড়তে পড়তে রেখে দিয়েছি, পড়ে হয়ত শেষ করেছি, কয়েক সময় সেটাও হয়নি। দেশে অদ্ভুতুড়ে সিরিজ বেশ খানিকটা মিসফিট বলেই মনে হল। খবরটা যদি আদৌ সত্যি হয়। আর ফেসবুকে একটু আগে একটা পোস্টে দেখলাম কিশোর ভারতীতে ওনার লেখা আছে। দেখা যাক কোনটা কেমন হয় ।
আচ্ছা , গত বছর যতগুলো পুজো সংখ্যা কিনেছিলেন, পড়েছিলেন সব গুলো ? আমার তো কোনোটাই পুরো পড়া হয়নি। দু একটা তো একেবারেই পড়া হয়নি ইমপালস বাইয়িং এর পর। এবার হয়ত কম কিনব, কিন্তু পড়ব সব । আপনি কি কি কিনবেন ? আচ্ছা বইয়ের কথা বলায় মনে পড়ল - সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত ডিজিটাল সেফটি কিনেছেন তো ? না কিনলে এখনই কিনে ফেলুন। অনলাইনে কোন ফ্রড হওয়ার মতন কিছু হলে, সেটা ঘটে যাওয়ার আগেই হয়ত বুঝতে পারবেন। বিপদ এড়াতে পারবেন। আমাজনে আর সৃষ্টিসুখের সাইটে পাওয়া যাচ্ছে। ডেস্ক্রিপশনে লিংকে দেওয়া থাকলো। না কিনলে বিপদে আপনি পড়বেন, আমার কি !!
আর হ্যাঁ, এই পডকাস্ট - ফলো সাবস্ক্রাইব না করা থাকলে, করে ফেলুন শিগ্গির। তাহলে পরের এপিসোড এলে মিস হয়ে যাবে না।
সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন। আজ চলি, কথা হবে সামনের সপ্তায়। টাটা।
Book Link -
Amazon : amzn.eu/d/66JQMOR
Sristisukh : sristisukh.com/ss_new/product/digital-safety/
Thank You
Goopy Gyne Bagha Byne : Amar priyo cinema
নমস্কার আমি সৃজন। আজ এরকমই এক জনপ্রিয় টাইম টেস্টেড বাংলা সিনেমার কথা বলব। সিনেমাটা আমি ছোট বেলা থেকে কতবার যে দেখেছি তার হিসেব আর নেই । সিনেমার নাম গুপি গাইন বাঘা বাইন ।
আমার যতদূর মনে পড়ছে, প্রথম দেখেছিলাম কোন এক গরমের ছুটিতে , দুরদর্শনের কলকাতা কেন্দ্র তখন ছুটি ছুটি বলে একটা অনুষ্ঠান করত । সেই সময়, নির্ভেজাল আনন্দ পেয়েছিলাম । ইন ফ্যাক্ট আমি আগে সিনেমা দেখে পড়ে গল্পটা বইতে পড়েছিলাম , এবং অবাক হয়েছিলাম এটা দেখে, যে কয়েকটা নাম ছাড়া ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা গল্পের প্রায় সবই পাল্টে ফেলেছেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তারপর কোন এক আনন্দমেলায় পড়েছিলাম সত্যজিৎ ভারত চীন বা ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের প্রসঙ্গ খুব সুক্ষ ভাবে ছবিতে রেখেছেন। আবার এই গল্পের সাথে এখনকার সময়ের রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ও অদ্ভুত মিল কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখতে পাওয়া যায় । সব থেকে মজার কথা, এই সব জটিল ব্যাপার ইগনোর করলেও ছবিটা দেখার মজা কোথাও একটুও কমে না।
ছবিতে দেখানো হয় গ্রামের সহজ সরল ছেলে গুপী , নিজেকে, ওস্তাদ গাইয়ে বলে মনে করে। কিন্তু গ্রামের বয়স্ক মানুষদের শয়তানীর শিকার হয়ে , জমিদারের আদেশে গাধার পিঠে চেপে গ্রামছাড়া হতে হয়। গুপী রাত আশ্রয় নেয় এক জঙ্গলে। সেখানে নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে আলাপ হয় বাঘার সাথে। তাকেও গ্রামের জমিদার বেসুরো বাজনা বাজানোর জন্য গ্রাম থেকে তাড়িয়েছে । সেই গভীর জঙ্গলে, গুপী আর বাঘা দেখা পায় ভুতের রাজার। সেই ভুতের রাজা ওদের বেসুরো গান শুনে খুশি হয়ে তিনটে বর দেয় - প্ৰথম বরে তারা যা চায় তাই খেতে পাবে। দু নম্বর বরে যেখানে খুশি যেতে পারবে । আর তিন নম্বর বরের প্রভাবে সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতন ওদের গান শুনতে থাকবে । ওরা রাস্তায় এক ওস্তাদের পালকি যেতে দেখে । সেখান থেকে জানতে পারে শুন্ডি রাজ্যের রাজা গানের প্রতিযোগিতা করছেন । অনেক মজার ঘটনার মধ্যে দিয়ে তারা পৌঁছায় শুন্ডি, তাদের গান শুনে রাজা মুগ্ধ হন, গুপী বাঘা কে রেখে দেন রাজ প্রাসাদে । এরপর একদিন খবর আসে হাল্লার রাজা আক্রমন করতে চলেছেন শুন্ডিকে । হাল্লার রাজা আর শুন্ডির রাজা আসলে দুই ভাই । এরপর নানান ঘটনার মধ্যে দিয়ে কিভাবে এই দুজন যুদ্ধ আটকালেন সেটা যারা সিনেমাতে দেখানো হয়েছে ।
বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সেরা সিনেমা শুধু নয়, সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা হিসাবেও এই ছবির নাম একটা লম্বা সময় ধরে ছিল, যে রেকর্ড পরে আর একটা মিউজিক্যাল সিনেমা এসে ভেঙে দেয় । গেস করুন তো কোন সিনেমা ? গুপি গাইন বাঘা বাইনের জনপ্রিয়তার রেকর্ড যে সিনেমা পরে ভেঙেছিল, তার নাম বেদের মেয়ে জোসনা । উনিশশো ঊনসত্তরের আটই মে রিলিজ করেছিল দু ঘন্টার একটু বেশি সময়ের গুপি গাইন বাঘা বাইল। রিলিজের সাথে সাথেই বিপুল জনপ্রিয়তা । টানা একান্ন সপ্তাহ ধরে সিনেমা হলে চলেছিল সেই সময় । শুধু জনগণের ভালবাসাই নয়, সেরা ছবি ও সেরা পরিচালকের রাষ্ট্রপতি পুরস্কার ও জিতে নিয়েছিল সেই বছর ।
পুরোটা জানতে শুনতেই হবে এই এপিসোড
Momo Chitte
যে সময় আমি ভুবনেশ্বরে চাকরি করছি, মানে ওই দু হাজার আট কি নয়ের ঘটনা, সেই সময়ে ইনফোসিটির গেটের কাছে একটা গাড়িতে অল্প বয়েসী কয়েকটা ছেলে মোমো বিক্রি করত। ওরা ওই স্যুপে আদা , রসুন , পেঁয়াজের সাথে ছোট ছোট চিকেনের টুকরো আর ডিম দিত। শুধু সেটার লোভেই বেশ কয়েকদিন ওখানে মোমো খেয়েছিলাম বলে মনে পড়ে। মোমো নিয়ে এরকম স্পেশাল কোন স্মৃতি আছে নাকি আপনার ?
চলুন আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এই এপিসোডে, আপনি আর আমি সৃজন, মোমো নিয়ে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাক।
কলকাতায় ডালহৌসীতে যখন চাকরি করি, তখন অফিসের পিছনেই ছিল চাউমিন, চিলি চিকেন, আর মোমোর একটা দোকান, ওদের মোমোটাও বেশ ভালো ছিল। দোকান যারা চালান, তারা গোর্খা। এনাদের পূর্বপুরুষ সব রাজভবনে চাকরি করতেন কোন এক সময়। ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক হেড অফিসের আশপাশের খাবারের গল্প শুরু করলে, একটা এপিসোড নয়, একটা সিজন হয়ে যাবে। সে রাস্তায় যাচ্ছি না। বরং আমরা যাই তিব্বত থেকে লাসা হয়ে কাটমান্ডুর রাস্তায়। যে রাস্তা ধরে তিব্বতি মোমো ভারতে এলো। নাইনটিন সিক্সটিজে, যখন চীন তিব্বত দখল করছে, তিব্বতিরা বিপুল সংখ্যায় আশ্রয় নিলেন - দার্জিলিং, সিকিম, ধর্মশালা, লাদাখ , দিল্লী এই সব জায়গায়। আর এনাদের সাথে আসা মোমো জায়গা করে নিলো ভারতবাসীর মনে, বলা ভালো, ভারতবাসীর পেটে।
এই মোমোর আবার একটা বড়লোক কাজিন আছে, যার নাম ডিমসাম। তবে আকারে একই রকম হলেও দুজনের অরিজিন কিন্তু আলাদা আলাদা জায়গায়। মোমো তিব্বতে আর ডিমসাম চিনে। আমরা যেমন চায়ের সাথে বিস্কিট ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না , চাইনিজরা নাকি চায়ের সাথে ডিমসাম খান। যারা এটা নিয়ে একটু আধটু জানেন তারা বলেন, সব মোমোই ডিমসাম , কিন্তু সব ডিমসাম মোমো না। ডিমসাম জিনিসটা একটু বড় হোটেলে বা দামী রেষ্ট্যুরেন্টে পাওয়া যায়। বানানোর প্রসেস একটু সফিস্টিকেটেড, বাইরের কভারটা একটু পাতলা, একটু বেশি যত্ন নিয়ে বানানো , পুরের ক্ষেত্রেও অনেক রকম ভ্যারিয়েশন দেখা যায়। আমার দু একটা অফিশিয়াল কনফারেন্সে গিয়ে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল , যদিও তখন অবাক হয়েছিলাম মোমোর এরকম অদ্ভুত নাম লেখা দেখে। তবে ফাইভ স্টারে এরকম একটু অন্য রকম নাম থাকা বেশ নরম্যাল ব্যাপার, তাই ওটা যে মোমো না সেটা তখন বুঝিনি।
ফিরে আসি মোমোতে। কলকাতায় গত বছর গন্ধরাজ মোমো বেশ ভাইরাল হয়েছিল, কলকাতার বাইরে চাকরি করার জন্য এখনো সেটা চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়ে ওঠে নি। তবে দিল্লীতে খেলাম তন্দুরী মোমো, সেই একই দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বাটার মালাই মোমো এবং আরো অনেক ভ্যারিয়েশন। কাঠকয়লায় ভালো করে পুড়িয়ে একটু বাটার ব্রাশ করে দেয় তন্দুরি মোমোতে । আর সাথে থাকে , পুদিনা চাটনি , কাঁচা পেঁয়াজ কুচি, ঝাল সস। আমার কিন্তু বেশ ভালোই লাগল। ট্রেডিশানাল স্টিমড মোমো আর ফ্রায়েড মোমোর পাশাপাশি এইসব লোকাল ইনোভেশন ও কিন্তু বেশ পপুলারিটি পাচ্ছে। তাই যে জিনিসটা, তিব্বতী ব্যবসায়ীরা, বেশ লম্বা সময় সাথে নিয়ে ঘুরতে পারবেন বলে তাদের বাড়ির লোক ঘরোয়া খাবার হিসাবে বানাতো, সেটাই আজ নানান জায়গায় নানান ফ্লেভার পাচ্ছে।
এই এপিসোড শুনে মন টা কি একটু নেচে উঠল ? মোমো খেতে ইচ্ছে করছে কি ? তাহলে অপেক্ষা কেন ? হাতে সময় না থাকলে অনলাইনে অর্ডার করে ফেলুন আর সময় থাকলে দোকানে গিয়ে খেয়ে আসুন। আমাকে জানাবেন কেমন লাগল আজকের মোমো। আর জানাবেন কেমন লাগল আজকের এই এপিসোড।
আর যদি সৃজনের পডাবলী ফলো না করা থাকে, তাহলে সেটা করতে ভুলবেন না, ফলো করা থাকলে নতুন এপিসোড এলে মিস হয়ে যাবে না।
এই এপিসোড ভালো লাগলে এই পডকাস্ট আপনার বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। ফিরব নতুন এপিসোড নিয়ে, সামনের সপ্তায়। ভালো থাকবেন , আজ চলি। টাটা।
Podcast growth hack : পডকাস্ট অন্যদের শোনাবেন কি করে ?
সবার প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি গত দু সপ্তায় কোন এপিসোড করে উঠতে পারিনি, তবে ইউটিউবে আমার উপস্থিতি শূন্য ছিল না। আপনি ভাবছেন আমি তো শুধু স্পটিফাই বা অন্য প্লাটফর্মে আপনার সাথে কথা বলি, সেটাই ইউটিউবে যায়, ফলে আলাদা করে ইউটিউবে আর বেশি কি থাকবে !! আছে ! ইউটিউবে একটা নতুন ব্যাপার শুরু হয়েছে। যেটার নাম দেওয়া হয়েছে গল্প বলার গল্প।
এখানে প্রত্যেক সপ্তায় যারা পডকাস্ট বানান তারা তাদের কথা বলছেন, কিভাবে পডকাস্ট বানান সেটা জানাচ্ছেন, নানা রকম টিপস দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানটা সঞ্চালনা করছেন পারমিতাদি, পারমিতা নাগ দে। প্রথম এপিসোডে আমি বেসিক কিছু টিপস দিয়েছি, তার পরের পর্বে এসেছিলেন পার্থ, পার্থ অরণ্যদেব মুখোপাধ্যায়, লাস্ট উইকে এসেছেন - সায়ন, সায়ন আনন্দ সেনগুপ্ত । সায়নের বা সায়নদের পডকাস্টের নাম প্রতিক্রিয়াশীল, আমার অন্যতম প্রিয় পডকাস্ট। আচ্ছা, প্রতিক্রিয়াশীলের লেটেস্ট এপিসোডটা শুনলেন তো। ওটা না শুনলে কিন্তু বিশাল কিছু মিস করে গেছেন।
যাই হোক, এই সপ্তায় কি নিয়ে পডকাস্ট বানাবো সেটা ঠিক ছিল না - আমাদের "গল্প বলার গল্প" এই লাইভ আড্ডায় সায়ন সাজেস্ট করল, পডকাস্ট কি ভাবে প্রচার করা যায় সেটা নিয়েই একটা এপিসোড করা যেতে পারে। আমি ও ভেবে দেখলাম আপনার সাথে সাথে সৃজনের পডাবলী আর যারা শোনেন, তারা অনেকেই পডকাস্ট বানান বা কেউ কেউ বানাবেন বলে ভাবছেন। এদের অনেকেই ভাবেন, কেউ শুনবে তো , বা কম লোক শুনছে পডকাস্ট - কি করে বেশি লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। তাদের সবার জন্য এই এপিসোড ।
নমস্কার, আমি সৃজন, আমার প্রায় গত এক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে কয়েকটা জিনিস করলে পডকাস্ট হয়ত আরো বেশি লোকের কাছে পৌঁছাবে। আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এই এপিসোডে, এক দুই তিন করে সেগুলোই বলব আপনাকে , আর এটা পডকাস্ট শুধু নয়, যে কোন কন্টেন্ট এর জন্যই কাজে লাগবে বলে আমার বিশ্বাস -
কন্টেন্ট - এটা বোধহয় সব থেকে বেশি দরকারি। মেটিরিয়াল ভালো হতেই হবে , নইলে কিন্তু বেশি লোকে শুনবে না। যদি কোন তথ্য থাকে, সেটা দু চার জায়গায় ক্রস চেক করে নিন। তবে ইনফরমেশন ওভারলোড না করাই ভালো। সব থেকে বড় কথা, যিনি শুনছেন, তার জন্য যেন কিছু value add হয়, কিছু যেন জানতে পারেন বা শুনে যেন কিছু ভাবার বিষয় পান। না হলে তিনি আর পরের এপিসোড শোনার উৎসাহ পাবেন না।
কন্সিস্টেন্সি - প্রত্যেক সপ্তায় , সম্ভব হলে নির্দিষ্ট একটা দিনে যদি এপিসোড গুলো করতে পারেন, স্পটিফাই, গুগল পডকাস্ট, ইউটিউব এরা কিন্তু আপনাকে বেশ পছন্দ করবে আর আপনার পডকাস্টের rank অন্যদের থেকে বেশি ভালো করবে। তাই চেষ্টা করবেন ছোট করে হলেও প্রত্যেক সপ্তায় যেন একটা এপিসোড আসে।
সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন - সার্চ ইঞ্জিন, যেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুগল, তাকে আপনাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করুন। টাইটেল বড় রাখলে দেখতে ভালো নাও লাগতে পারে, কিন্তু ডেসক্রিপশন অধিকাংশ শ্রোতা পড়ে দেখেন না , স্পটিফাই ফর পডকাস্টারে চার হাজার শব্দের ডেসক্রিপশন লেখা যায়। এটা যতটা সম্ভব বড় করুন। পারলে চার হাজার শব্দের লিখুন। লিখতে আলস্য লাগলে পুরো স্ক্রিপ্টটা পেস্ট করে দিন। তাহলে দেখবেন আপনার পডকাস্ট সহজেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।
লজ্জা কম করুন - বন্ধুদের বা আত্মীয় স্বজনদের সাথে এপিসোড শেয়ার করুন , অন্তত প্রথম দশটা এপিসোড, তার পরে দেখবেন দশ বারোজন শ্রোতা তৈরি হয়ে গেছে’, সেটা ধীরে ধীরে বাড়বে, কিন্তু প্রথম কয়েকটা এপিসোড বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করতেই হবে। সেখান থেকে ভালো মন্দ কিছু ফিডব্যাক ও পাবেন , সেটাও কাজে লাগবে। আর বন্ধুরা ইন জেনারেল ভালোই বলবে, একটা মোটিভেশন ও পাবেন।
গেস্ট পডকাস্ট - সব পডকাস্ট নিজে না করে, কিছু পডকাস্টে গেস্টের সাথে কথা বলুন। এতে দুটো সুবিধা হবে - কন্টেন্টটা নিয়ে বেশি খাটতে হবে না আর যিনি গেস্ট তাঁর নিজস্ব একটা নেটওয়ার্ক আছে, সেখানে আপনার পডকাস্ট পৌঁছে যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়া - যিনি আপনার পডকাস্ট শুনবেন, তিনি মোস্ট লাইকলি , সোশ্যাল মিডিয়াতে আছে। ট্যুইটার বা ইনস্টাগ্রামের থেকে ফেসবুক আর ইউটিউবে লোকজনকে সহজে পেয়ে যাবেন। এপিসোডের ছোট ক্লিপ বা পারলে কখনো কখনো পুরো এপিসোড ফেসবুকে ভিডিও করে দিন। দেখবেন পাবলিকের মধ্যে একটা কৌতূহল তৈরী হচ্ছে। হোয়াটস্যাপ এ শেয়ার করলেও দেখবেন অনেকে শুনছে।
কভার আর্ট - এপিসোডের বা পডকাস্টের কভার আর্ট একদম সাদামাটা হলে সেটা দেখে শুনতে যতটা ইচ্ছে হবে, একটু দেখতে সুন্দর হলে, লোকের আগ্রহ আরো বাড়বে। আমি এপিসোড কভার ক্যানভা দিয়ে বানাই। তবে প্লে স্টোরে অনেক app আছে। যেটা পছন্দ সেটা দিয়েই বানাতে পারেন। কিন্তু একটু দেখতে সুন্দর কিছু বানাবেন।
ডিজিটাল সেফটি এবার ছাপার অক্ষরে
এখন তো আপনি কলমি শাক কিনেও UPI দিয়ে টাকা মেটান। UPI শুরু হয়েছিল কি করে বলুন তো ? UPI ব্যবহার করার সময় কি কি সতর্কতা মাথায় রাখতে হবে জানেন ?
ডেবিট কার্ড আর ক্রেডিট কার্ড ! পার্থক্য কি ? কোনটা কখন ব্যবহার করবেন ? ব্যবহারের সময় কি কি সতর্কতা অবলম্বন করবেন ?
আপনার সন্তান সারাদিন মোবাইল নিয়ে পড়ে আছে ? কিভাবে আটকাবেন ?
আপনার একজন বন্ধু একটা গাড়ি কিনেছে, কিনে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেছে, আপনি ছবিটা দেখলেন খানিকক্ষণ ধরে, কিন্তু লাইক কমেন্ট কিছু করলেন না, সোশ্যাল মিডিয়া কম্পানি আপনাকে এবার গাড়ির বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে, কেন বলুন তো ?
হোয়াটসএপ এ সকালবেলা গুড মর্নিং মেসেজ পাঠালে কি কি বিপদ হতে পারে জানেন ?
এই সব প্রশ্নের উত্তর আমি সহজ সরল বাংলা ভাষায় দিয়েছি আমার বই "ডিজিটাল সেফটি"তে। এছাড়াও দীর্ঘদিন পেমেন্ট টেকনোলজি নিয়ে কাজ করার সময়ে দেখেছি ছোট ছোট ভুলের জন্য সাধারণ মানুষের টাকা চোররা কিরকম করে নিয়ে নেয়। সেটা আটকাতে কি কি করা উচিৎ, সেকথা লেখা আছে এই বইয়ের পাতায় পাতায়।
পয়লা জুলাই দু হাজার তেইশ থেকে এই বই পাওয়া যাবে আমাজনে, সৃষ্টিসুখের নিজের ওয়েব সাইটে আর বাংলাদেশে রকমারিতে । ইবুক ফরম্যাটে পাওয়া যাবে কিন্ডল আর গুগল প্লেবুক স্টোরে ।
না পড়লে বিপদ আপনারই । আমার কাজ শুধু আপনাকে সতর্ক করে দেওয়া ।
Man Who Built Victoria Memorial : Sir Rajendranath Mukherjee
সৃজনের পডাবলীর আজকের এই এপিসোড আমি সৃজন কথা বলব বাংলার অন্যতম সফল ব্যবসায়ী স্যার রাজেন মুখার্জিকে নিয়ে, যার জন্মদিন গেল এই তেইশে জুন ।
বসিরহাটে যেটা মার্টিন রোড বলে পরিচিত, যে রাস্তা দিয়ে এক সময় আমি খাঁচা গাড়ি করে আর পরে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতাম, সেটা এক সময় স্যার রাজেন মুখার্জির মার্টিন কম্পানির ট্রেন লাইন ছিল। তবে লাইন ছিল ছোট , ন্যারো গেজ - আড়াই ফুট চওড়া, আর এখন যেটা আছে, বসিরহাট লাইন, সেটা সাড়ে পাঁচ ফুট। বয়স্ক মানুষদের কাছে শুনেছি, চার কি পাঁচ কামরার মার্টিন রেলের ট্রেন চলত হেলে দুলে। কারো তাড়া থাকলে তিনি নাকি পায়ে হেঁটে যাওয়াই প্রেফার করতেন । এমনকি ট্রেনের সমস্যা হলে যাত্রীদের ট্রেন থেকে নেমে একটু ঠেলাঠেলি ও করতে হয়েছে। বিভূতিভূষণ তার স্ত্রী গৌরীদেবীকে নিয়ে এই মার্টিন রেলেই কলকাতা ফিরেছিলেন। মার্টিন রেল, বিশেষ করে বারাসাত - বসিরহাট সেকশন নিয়ে একদিন ডিটেলে কথা বলব, আজ স্যার আর এন মুখার্জি ।
আমরা বাঙালিরা ব্যবসাকে জীবিকার ফার্স্ট চয়েস হিসাবে ভাবি না। এটা বোধহয় সেই ব্রিটিশ পিরিয়ড থেকেই আমাদের মধ্যে ঢুকে গেছে । সেই ব্রিটিশ শাসনকালেও, একজন বাঙালি হিসাবে, একজন ভারতীয় হিসাবে, স্যার রাজেন শুধু সফলভাবে নিজের ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিলেন তাই নয়, সেটা একটা আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং তার কাজের ছাপ রয়ে গেছে কলকাতার আইকনিক জিনিস বলতে আমরা যা যা বুঝি, - ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, হাওড়া ব্রিজ, বেলুড় মঠ, বিধানসভা ভবন, এসপ্ল্যানেড ম্যানশন - সবেতেই । বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এই প্রাক্তনী কিন্তু মাত্র ছ বছর বয়সে নিজের বাবাকে হারিয়েছিলেন । কিন্তু সেটা কোনভাবেই এই দুর্লভ প্রতিভাধর মানুষটির চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
কলকাতা বা সেই আমলের ক্যালকাটায় , ওনার প্রথম চাকরি ছিল পার্ট টাইম টিচারের । পড়ানো থাকত দু - তিন ঘণ্টার । বাকি সময় পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখতেন কলকাতা শহর, ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। সেই সময়েই আলিপুর চিড়িয়াখানায় নজরে পড়েন কলকাতা করপোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ব্র্যাডফোর্ড লেসলির । লেসলি সাহেব আলিপুর চিড়িয়াখানায় দেশি লেবারদের কাজ বোঝাতে পারছিলেন না তাঁর ভাঙা ভাঙা বাংলা ও হিন্দীতে, যুবক রাজেন মুখার্জি খুব সহজেই সেই কাজ করে দেন। দুজনের মধ্যে কথা বার্তা হয়। লেসলি সাহেব যুবক রাজেনকে ভার দেন পলতা জলাধার বানানোর । ডিজাইন থেকে শুরু করে এন্ড টু এন্ড একজিকিউশন , সবই করেছিলেন । সেই পলতা জলাধার থেকে, আজও, কলকাতার একটা বড় অংশ জল পায় । রোজ আড়াই কোটি গ্যালনের বেশি জল এখানে ফিল্টার করা হয় । পলতার এই কাজের পর আর ফিরে তাকাতে হয় নি। যেখানেই হাত দিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছেন । কলকাতা, আগ্রা, মেরঠ, এলাহাবাদ, নৈনিতাল, বেনারস, লখনৌ - শহর জুড়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজ করেছে তার মার্টিন এন্ড কম্পানি। মার্টিন সাহেব ও তিনি দুজনে পার্টনার থাকলেও নিজের নাম কম্পানিতে দেন নি ব্রিটিশ আমলে কাজ পেতে অসুবিধা পারে ভেবে ।
শোনা যায়, একবার, কলকাতা করপোরেশনে ওনাকে ঠেলে ঢুকে যায় এক সাদা চামড়ার সাহেব । পরে সেই বার্ন সাহেবের বার্ন এন্ড কুরি কম্পানিকে কিনে নিজের কম্পানির নামকরন করেছিলেন মার্টিন এন্ড বার্ন কম্পানি । এই বার্ন এন্ড কুরি কম্পানিই কিন্তু অক্টারলোনি মনুমেন্ট বা আজকের শহীদ মিনার বানানোর দ্বায়িত্ব পেয়েছিল । আর বার্ন এর সাথে নিজের কম্পানির মার্জারের অনেক আগেই রাজেন্দ্রনাথ দায়িত্ব পেয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বানানোর। উনিশশো একুশ সালে কমপ্লিট হওয়া, মার্বেল পাথরের সেই প্রাসাদ আজও আমাদের বিস্মিত করে।
হাওড়া ব্রিজের গল্পটাও বেশ ইন্টারেস্টিং। সেটা জানতে পুরো এপিসোড শুনতেই হবে ।
Kolkata Kathi Roll
আজ থেকে বছর কুড়ি পঁচিশ আগেও পশ্চিমবঙ্গে, পাড়ায় পাড়ায় বিরিয়ানির এত দোকান ছিল না। শহর কলকাতাতেও সিরাজ, আমিনিয়া, রয়্যাল এরকম কয়েকটা বড় দোকান ছিল। পাড়ায় পাড়ায় যেটা ছিল, মোগলাই পরোটা , এগরোল এসবের দোকান। মোগলাই পরোটা এখন খুব একটা দেখা যায় না। এগ রোল কিন্তু দিব্বি টিকে আছে। আর সেখানে যে এগ চিকেন রোল পাওয়া যায়, তার নন রেসিডেন্ট বেংগলি কাজিন এই দিল্লীর কলকাতা কাঠি রোল। শুধু দিল্লীই বা বলি কেন । ব্যাঙ্গালোর, মুম্বাই হয়ে বিদেশেও কলকাতা কাঠি রোল নামেই জিনিসটা বিখ্যাত ।
এবার আমার খেতে কেমন লাগল সেটা পরে বলছি , আগে বলি জিনিসটার এই নাম কাঠি রোল সেটা কোথা থেকে এলো । ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীর অখন্ড ফুড কাহিনীতে বলা আছে - আমাদের কলকাতার নিউ মার্কেটের নিজাম এই কাঠি রোলের জন্মদাতা। পরোটার মধ্যে চিকেন শিক কাবাব দিয়ে জিনিসটা বানানো হত । দুটো সম্ভাবনার কথা বলা আছে এই জনপ্রিয় খাবারের শুরুর গল্প হিসাবে । একটা মত হচ্ছে - কোন এক সাহেব হাতে তেল ময়লা না লাগিয়ে কাবাব আর পরোটা খেতে চেয়েছিলেন বলে এখানকার খানসামা বা রাঁধুনি তাঁর জন্য এই পরোটার মধ্যে শিক কাবাব পুরে এই জিনিসটা বানায় । অন্য একটা মত ও আছে এই বইতে। সেটা বলছে - সাহেব না, দেশি লোকের ডিমান্ডেই এই আবিস্কার। লোকের হাতে সময় কম, তাই তাড়াহুড়ো করে নিয়ে রাস্তা দিয়ে খেতে খেতে যাওয়ার সুবিধা করে দেওয়ার জন্য এর সৃষ্টি।
সে যাই হোক - দিল্লীর রোল । শসা এবং কাঁচা লঙ্কা উল্লেখযোগ্য মিসিং জিনিস। চিকেনটা কাবাব না, জাস্ট বোনলেস চিকেন টিক্কা একটু পেঁয়াজ, হাল্কা সস দিয়ে রান্না করে এগরোলে দেওয়া হচ্ছে। কাঁচা পেঁয়াজ একটু দেওয়া হচ্ছে অবশ্য । টমেটো সস, একটু চিলি সসের সাথে আবার মেয়োনিজ ও দেওয়া হয়। খেতে সে জন্য আমার একটু মিষ্টি মিষ্টি লেগেছিল। কিন্তু একেবারে ওয়াক থ্যু নয় । খাওয়া যায় । খাওয়ার পরে বলেছিলাম যে, কলকাতার রোল কিছুটা আলাদা । তাতে রোলের দোকানদার বললেন যে আগে বললে কলকাতা স্টাইলে বানিয়ে দিতেন আমার জন্য। তবে শসা থাকে না ওনার কাছে ।
আগের এপিসোডে আফসোস করছিলাম, বাঙালি নিজের খাবার, সেভাবে, বাইরের লোকের কাছে পপুলার করতে পারলো কই । সেখানে খাঁটি কলকাতার রোল বাইরে জনপ্রিয় হয়েছে , সেটা মন্দ কি ! মেয়োনিজের মতন লোকাল adaptation না হলে সেটা হয়ত হত না, এখানে মোমো ও মেয়োনিজ দিয়েই খায়। তবে এগরোলের ভিতর চাউমিন বা পনির ঢুকিয়ে কিছু একটা বানানো হচ্ছে এই সব দোকানে, সেটা কেমন হবে চেখে দেখার রিস্ক নিলাম না। তবে চকলেট ধোসা ও বিক্রি হতে দেখলাম, সে হিসাবে এই টুকু লোকাল adaptation মেনে নেওয়াই যায় । যায়না কি ? জানান আমাকে ।
আমি কলকাতা থেকে আসার সময় হাতে করে একটাই বই এনেছি - ফুড কাহিনী, সেজন্য পরের এপিসোডেও খাবার নিয়ে কথা হবে। তাই যেখানে এই পডকাস্ট শুনছেন, সেখানে - ফলো, সাবস্ক্রাইব এগুলো করা থাকলে আমার সাথে এই উইকলি আড্ডাটা মিস হবে না। আর স্পটিফাইতে যদি শুনছেন, তাহলে প্লিজ রেটিংটা দিয়ে দেবেন, তাহলে আরো বেশি লোকের কাছে পৌঁছে যাবে। একটা নতুন টপিকে কথা বলার ইচ্ছে একটু মোটিভেশন পাওয়া যাবে, এই আর কি ।
ভালো থাকবেন । সুস্থ থাকবেন। ফিরছি সামনের সপ্তায় । এখন চলি, টাটা ।
Mecha Sandesh, Special Sweet from Beliatore, Bankura
এই মিষ্টি বাংলার অন্যতম প্রাচীন মিষ্টি যা আজও টিকে আছে এবং সগৌরবে আছে। কলকাতায় পাড়ার মিষ্টির দোকানে খুব একটা দেখা না গেলেও বাঁকুড়া এবং তার আশপাশের জেলায় খোঁজ করলে খুব সহজেই পাওয়া যায় । বাংলার মিষ্টি বললেই মাথায় আসে সন্দেশ, রসগোল্লা এই সব । এগুলোর মূল উপাদান চিনি আর ছানা , এই চিনি বা ছানা কোনটাই বাংলায় অনেকদিন ধরে আছে এরকম তো নয় , অন্তত ম্যাচা র ইতিহাস চিনি বা ছানার থেকে বেশি পুরোনো । চিনি আর ছানার গল্প আগের এপিসোডে বলেছি, আর আজকের আড্ডা ম্যাচা নিয়ে।
প্রথমে বলি, এই মিষ্টিটা বানায় কি করে । আমি বেলিয়াতোড়ে শুনেছিলাম, তবে নিজের মেমোরির উপর ভরসা না করে ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীর অখন্ড ফুডকাহিনী থেকে একটু কোট করি - " ম্যাচা সন্দেশ জিনিসটা হচ্ছে, ছোলার ডাল কে গুঁড়ো করা হলো, বা ছোলার ডালের ছাতু বানানো হলো। বা ছোলার ডালের আটা বানানো হলো। সেই জিনিসটাকে ঘি তে ভাজা হলো। ভেজে গাটিয়া তৈরি করা হলো। গাঠিয়া আবার গুঁড়ো করা হলো। সেটাকে ক্ষীর আর চিনি দিয়ে একটা মন্ডতে পরিণত করা হলো। এই মন্ডটাকে আবার ঘি, ছোট এলাচ দিয়ে মেখে ছোট্ট ছোট্ট লাট্টুর মত বানানো হলো । লাড্ডুটাকে চিনির রসে ডুবিয়ে শাল পাতার ওপর শুকিয়ে নিলেই ম্যাচা সন্দেশ তৈরি হয়ে যায়। "
জনাইয়ের মনোহরা আর বেলিয়াতোড়ের ম্যাচা visually similar, দেখতে একই রকম, বাইরের চিনির পরতটা একই। কিন্তু মনোহরার মিস্টির মূল উপাদান ছানা, আর আগের এপিসোডেই বলেছি, ছানা ভারতে খুব একটা পুরোনো নয়।
আমার কাজের জন্যেই বেলিয়াতোড়ে যেতে হয়েছিল বেশ কয়েকবার । সেখানেই শোনা, বিষ্ণুপুর অর্থাৎ সেই সময়ের মল্লভূমের রাজা বীর হাম্বির এর আদেশে নাকি এই মিষ্টির সৃষ্টি। অন্য একটা মত, আরো প্রাচীন কাল থেকে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে বেলিয়াতোড়ে যে ধর্মঠাকুরের মেলা বসে গাজনকে কেন্দ্র করে, সেখানে গুড়ের আস্তরণ দেওয়া ম্যাচা বিক্রি হত। কিন্তু গরমে সেটা বেশি সময় রাখা যেত না, গুড়টা গলে যেত, তাই এক সময় গুড়ের বদলে চিনির আস্তরণ দিয়ে মিষ্টিটা বেশি সময় টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয় । আমাদের পূর্বপুরুষরা নিজেদেরকে নিয়ে লেখার ব্যাপারে প্রচুর ল্যাদ খেতেন, ফলে এই কথা গুলো কতটা সত্যি জানার বিশেষ উপায় নেই ।
বেলিয়াতোড়, এই জায়গাটা দুর্গাপুর আর বাঁকুড়ার মাঝামাঝি। দুর্গাপুর থেকে দামোদর পেরোলেই কিছুটা এগিয়ে বড়জোড়া তার একটু পরেই বেলিয়াতোড় । এখানকার ইলেকট্রিক অফিসের পাশের ম্যাচামহলের ম্যাচা সবথেকে বিখ্যাত তবে আরও অনেক দোকান আছে, সেগুলোও ভালো। দশ টাকায় নর্ম্যালটা আর পনের টাকায় স্পেশাল, গতবছর পর্যন্ত এই দাম ছিল । খেলে মুখে লেগে থাকবে এবং এটা যেহেতু ছানার অন্যান্য সন্দেশ জাতীয় মিষ্টির থেকে আলাদা, তাই এটা আলাদা করে মনে থাকতে বাধ্য । চিনির প্রলেপ দেওয়া এই স্পেসিফিক শেপের জন্য ম্যাচা আর মনোহরা দেখতে অনেকটা এক রকম । তবে ম্যাচার ইতিহাস অনেক পুরোনো । তাই বাঁকুড়ার দিকে গেলে বা বিষ্ণুপুর কিম্বা জয়পুরের জঙ্গলে ঘুরতে গেলে ম্যাচা সন্দেশ মিস করবেন না। আর দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া বা আরো এগিয়ে পুরুলিয়া গেলে বেলিয়াতোড়ে দাঁড়িয়ে ম্যাচা অবশ্যই খেয়ে দেখবেন । মিষ্টি ভালো লাগলে ম্যাচা ভালো লাগতে বাধ্য । তবে আমার একটা বড় আফসোস, মাইসোর পাক বা পেঠার মতন মিষ্টি যতটা মার্কেট করতে পেরেছে, বাংলার মিষ্টি রসগোল্লা ছাড়া বাংলার বাইরে সেভাবে মার্কেট করতে পারলো কই, আর ম্যাচার মতন দারুন জিনিস কলকাতায় কোথাও পাওয়া যায় কি না সেটাই জানি না। বাংলার বাইরের কথা তো আনছিই না।
বাংলার বাইরে এসে দেখলাম বাংলার একটাই স্ট্রিট ফুড ভিন দেশে নিজের জায়গা করে নিয়েছে , কলকাতা কাঠি রোল। সেটা নিয়ে আপনার সাথে আড্ডা হবে পরের এপিসোডে । তাই যেখানে এই পডকাস্ট শুনছেন, সেখানে - ফলো, সাবস্ক্রাইব এগুলো করা থাকলে আমার সাথে এই উইকলি আড্ডাটা মিস হবে না। আর স্পটিফাইতে যদি শুনছেন, তাহলে প্লিজ রেটিংটা দিয়ে দেবেন, তাহলে আরো বেশি লোকের কাছে পৌঁছে যাবে। একটা নতুন টপিকে কথা বলার ইচ্ছে একটু মোটিভেশন পাওয়া যাবে, এই আর কি ।
ভালো থাকবেন । সবাইকে নিয়ে সুস্থ থাকবেন। ফিরছি সামনের সপ্তায় । এখন চলি, টাটা ।
Rasogolla o Ronaldo
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কখনো রসগোল্লা খেয়েছেন কি? মনে তো হয় না । কিন্তু ওনার সাথে রসগোল্লার যে যোগাযোগ, সেটা শুনলে বাংলা আর উড়িষ্যার মধ্যে রসগোল্লা নিয়ে যে মিষ্টি লড়াই, সেটা থেমে গিয়ে পর্তুগাল আর চায়নার মধ্যে ধুন্ধুমার যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতেই পারে। কিন্তু সেটা কেন ? সেই নিয়েই আমি সৃজন, আমার এই পডকাস্ট, সৃজনের পডাবলিতে আড্ডা দেব আপনার সাথে । চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বসুন। আজ রসগোল্লা নিয়ে জমাটি আড্ডা হবে।
বাংলার মিষ্টি বললেই মাথায় আসে সন্দেশ, রসগোল্লা এই সব । এগুলোর মূল উপাদান চিনি আর ছানা , এই চিনি, ছানা, কোনটাই বাংলায় অনেকদিন ধরে আছে, এরকম নয় ।
ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ী অর্থাৎ ফুডকা ওনার অখন্ড ফুড কাহিনী এই বইয়ের একদম ফার্স্ট চ্যাপ্টার চৈনিক ব্রেকফার্স্টে বলছেন - "অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে এক ভাগ্যাহত চীনা ব্যবসায়ী এসে নামেন এই বঙ্গভূমে - টম আছু … বলে রাখা ভালো, কালে কালে এর নামানুসারে এই স্থানের নামকরণ হবে অছিপুর। ব্রিটিশ সাহেবরা ব্যবসাটা নিতান্ত মন্দ বুঝতেন না। আর টম সাহেব তার সঙ্গে যথেষ্ট সদ্ভাব রেখেই চলতেন। ফলে ওয়ারেন হেস্টিংস তাকে কিছুটা জমি দেন চিনির কারখানা স্থাপনের জন্য এবং ভারতবর্ষ মুখ দেখে সুন্দর দানা চিনির। যে মিষ্টির জন্য আমাদের এত অহংকার এই দানা চিনি বা গ্র্যানুলেটেড সুগার কিন্তু তাকে নিয়ে যায় অন্য এক উচ্চতায় । এটাও বলা হয় যে, লোকাল উচ্চারণে চাইনিজ শব্দটি হয়ে যায় চীনা এবং তার থেকে তাদের বানানো বস্তুর নামকরণ হয় চিনি।"
এই গেল চিনির গল্প। এবার আসা যাক ছানায়।
1498, ভাস্কো ডা গামা এসে নামলেন কালিকট বন্দরে । তার মোটামুটি বছর তিরিশেকের মধ্যেই পর্তুগিজ বাহিনী এসে পৌঁছায় বাংলায় । এখানে বাংলা বলতে সেই সময়ের বাংলা কে বুঝতে হবে , মানে পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ ছাড়াও বিহার, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যার এগুলোর ও বড় একটা অংশ । পর্তুগিজরা ঘাঁটি গাড়লো ব্যান্ডেলে । আমি চট্টগ্রাম, সাতগাঁও, হুগলি আরো এই সব বন্দরে পর্তুগিজ activity নিয়ে ডিটেলে যাচ্ছি না। তো এই পর্তুগিজদের সাথে ভারতে, বাংলায় এলো তিন রকমের চিজ - কটেজ চিজ বা আজকের ছানা, ব্যান্ডেল চিজ আর পনির । তার আগে অব্দি ভারতে লোকে বিশ্বাস করত দুধ কেটে গেলে সেটা খারাপ আর আপবিত্র হয়ে যায় , ফলে, সেটা খাওয়া হত না। ইন ফ্যাক্ট দীর্ঘদিন পর্যন্ত ঠাকুরের পুজোয় ও দেওয়া হত না ছানার মিষ্টি, কারন ছানা দুধ কেটে তৈরি হত । এই পর্তুগিজদের আনা ছানার ব্যাপারটা একটু ইন্টারনেট ঘাঁটলেই পেয়ে যাবেন ।
তাই রসগোল্লা নিয়ে এই মিষ্টি লড়াই বাংলা বনাম উড়িষ্যা না হয়ে পর্তুগাল বনাম চীন হলে অনেক বেশি লজিক্যাল হত । তাই নয় কি ? তবে এটাও ঠিক আমরা যা কিছু মহান বরণ করেছি বিনম্র শ্রদ্ধায় । তাই চীনের চিনি আর পর্তুগালের ছানা দিয়ে রসগোল্লা সন্দেশ আর এত রকমের মিষ্টি তৈরি হয়েছে ।
গোল্লা পাকানো ছানা, চিনির রসে ডুবে যে ম্যাজিক তৈরি করে, সেই ম্যাজিকের কথা সারা ভারত জানে, সেটা নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার দরকারই নেই ।
এই এপিসোড মেচা সন্দেশ নিয়ে হওয়ার কথা ছিল। সেটা পরের এপিসোডে। সেটা বেশ ইন্টারেস্টিং একটা এপিসোড হবে কিন্তু । মিস করবেন না।
যেখানে এই পডকাস্ট শুনছেন, সেখানে, ফলো, সাবস্ক্রাইব এগুলো করা থাকলে এই উইকলি আড্ডাটা মিস হবে না। স্পটিফাইতে যদি শুনছেন, তাহলে প্লিজ রেটিংটা দিয়ে দেবেন, তাহলে আরো বেশি লোকের কাছে পৌঁছে যাবে। পডকাস্ট যেহেতু মনিটাইজ হয়না, ফলে এর থেকে দু পয়সা ইনকাম হবে এমন নয়, কিন্তু বেশি লোক শুনলে খাটনিটা একটু দাম পায় । একটা নতুন টপিকে কথা বলার ইচ্ছে জন্মায়, এই আর কি । বেশি চেয়ে ফেললাম কি ?
যাই হোক, ভালো থাকবেন । সবাইকে নিয়ে সুস্থ থাকবেন। ফিরছি সামনের সপ্তায় । এখন চলি, টাটা ।
Kathal, Okhil chandra sen and innocent jackfruit of Netflix
I am arrive by passenger train at Ahmedpur station and my belly is too much swelling with jackfruit. I am therefore went to privy. Just I doing the nuisance the guard making whistle blow for train to go off and I am running with lota (water pot) in one hand and dhoti (clothes) in the next. When I am fall over and expose all my shockings to man and woman on platform. I am got leaved at Ahmedpur station.
This too much bad, if passengers go to make dung, the damn guard not wait train five minutes for him? I am therefore pray your honour to make big fine on that guard for public sake otherwise I am making big report to papers.
Yours faithfull servant
Okhil Chandra Sen
Original letter by Mr Sen
কথায় বলে, গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। কিন্তু গাছে যদি কাঁঠাল টাই না থাকে, তাহলে কি হবে ? সেই নিয়েই সিনেমা - কট হল। বাংলায় কাঁঠাল , নাহ কাঁঠাল বলা ঠিক হবে না, বাংলায় বললে বলতে হবে এঁচোর, যাকে একসময় আদর করে গাছ পাঁঠা বলে ডাকা হত । নেটফলিক্সের এই এঁচোর কি সুস্বাদু হল ? সেই নিয়েই আমি সৃজন, আজ সৃজনের পডাবলিতে আড্ডা দেব আপনার সাথে ।
নেটফলিক্সের কাঁঠাল নিয়ে বলার আগে, একটা দারুন গল্প বলে শুরু করি, গল্প নয়, নির্ভেজাল সত্যি ঘটনা । ঘটনাটা কাঁঠাল নিয়েই, তবে পাকা কাঁঠাল । এবং একটা কাঁঠাল কিভাবে আজকের রেলযাত্রাকে একটু বেশি comfortable করে তুলেছে সেই ঘটনা । সালটা উনিশশো নয়, দোসরা জুলাই , ব্রিটিশ ভারতের ঘটনা । অখিল চন্দ্র সেন, সাহেবগঞ্জ রেল ডিভিশনকে খুব কড়া করে একটা চিঠি লিখলেন । কি লেখা ছিল সেই চিঠিতে ?
সেই চিঠিতে অখিল বাবু জানাচ্ছেন যে আহমেদপুর স্টেশনে ট্রেন আসার পর উনি দেখেন ওনার পেট খুব চাপ দিচ্ছে, কারন, উনি প্রচুর কাঁঠাল খেয়ে এসেছেন। তো উনি নামলেন একটু হাল্কা হতে । উনি যখন ব্যাপারটা সারছেন, সেই সময় গার্ড বাঁশি বাজিয়ে দেয় এবং ট্রেন চলতে শুরু করে । উনি তখন আর কি করবেন, এক হাতে লোটা ও অন্য হাতে ধুতি নিয়ে দৌড় লাগালেন যদি ট্রেনটা ধরা যায়। কিন্তু কপাল খারাপ, পা পিছলে পড়লেন প্ল্যাটফর্মে আর সেখানে থাকা নারী পুরুষের সামনে ওনার কিছু আর গোপন থাকল না। আর সেই ট্রেন চলে গেল ওনাকে আমেদপুর রেখে ।
পরের প্যারায় উনি লিখছেন, কেউ যদি এরকম বিপদে পড়ে, গার্ড কি পাঁচ মিনিট একটু দাঁড়াতে পারে না ? এরকম খারাপ গার্ডের বড়সড় একটা ফাইন হওয়া উচিত । আর গার্ডকে ফাইন না করলে উনি খবরের কাগজে কড়া করে একটা চিঠি লিখবেন বলে ধমকি ও দেন ।
এই চিঠি সরকার বাহাদুরকে রীতিমতো প্রভাবিত করেছিল বলাই যায়, এবং এর ফল স্বরূপ আজ আমরা ট্রেনে টয়লেট দেখতে পাই এবং আমাদের দূর পাল্লার যাত্রা অনেকটাই বেটার হয়েছে । তবে আজকের টপিক টয়লেট নয়, কাঁঠাল ।
গল্পের শুরুতে দেখা যায়, পুলিশ ইন্সপেক্টর সানিয়া মালহোত্রা বুদ্ধি করে, সাহস দেখিয়ে কুখ্যাত এক অপরাধীকে পাকড়াও করেন। কিন্তু ক্রেডিট নিয়ে চলে যান ওপরের পুলিশ কর্তারা। এর পর দেখা যায়, স্থানীয় বিধায়কের আঙ্কেল হং প্রজাতির দুটো এঁচোর চুরি যায়, সেই এঁচোর খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয় সানিয়াকে । সানিয়ার প্রেমিক তার অধীনে কাজ করেন। প্রেমিক উঁচু জাত, সানিয়া নিচু । সে নিয়েও প্রেমিকের বাবার আপত্তি । যাই হোক, কাঁঠাল চুরির প্রথম সন্দেহ পরে বিধায়ক বিজয় রাজের বাগানের মালির উপর । মালির খোঁজ লাগিয়ে পুলিশ সহজে খুঁজে পায় না। মালিকে পাওয়া যায় পুলিশ ফাঁড়িতে যখন সে তার হারিয়ে যাওয়া মেয়ের জন্য রিপোর্ট লেখাতে আসে। মজার ব্যাপার, সে বেশ কয়েকবার এসে ফিরে গেছে আগে।
গল্পে উত্তর ভারতের প্রত্যেকটা ছোট ছোট ইস্যু খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে সেটা নারী পাচার কিম্বা পনপ্রথাই হোক বা জাতপাতের সমস্যাই হোক অথবা পুলিশ বা রাজনীতির অনেক ছোট ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দিক ।
শেষে কি মালির মেয়ে কে পাওয়া গেল ? এঁচোর কি সেই চুরি করেছে ? কি হল চুরি যাওয়া এঁচোরের ? সে সব বললে সিনেমা দেখার মজাটা চলে যাবে। তাই সে সব আর বলছি না , শুধু এটুকুই বলব, যদি পঞ্চায়েত ভালো লেগে থাকে, যদি সহজ সরল জীবনের গল্প দেখার ইচ্ছে থাকে তাহলে এই সুস্বাদু ইঁচোরের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে অনেক দিন। আর রচপাল যাদব, রঘুবীর যাদব, বিজয় রাজ, বিজেন্দ্র কালা, গুরপাল সিং এদের মতন পোড় খাওয়া অভিনেতাদের পাশাপাশি, নতুন রাও খুব বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করেছেন ।
আমি আগেও বলেছি, আমি রিভিউ করি না, তাই কোন রেটিং দেই না, দেব ও না। তবে বলব নেটফ্লিক্স থাকলে এটা দেখে ফেলুন, আমার ওপর ভরসা করে । আমাকে জানাতে ভুলবেন না কেমন লাগল নেটফ্লিক্স এর কাঁঠাল। আর অতি অবশ্যই জানাবেন কেমন লাগল পডাবলীর এই এপিসোড ।
পরের এপিসোড কি নিয়ে সেটা জানতে তো সাবস্ক্রাইব বা ফলো করতেই হবে যেখানে শুনছেন এই পডকাস্ট। না করলে আপনি মিস করবেন, আমার কি !
8K gechi | Atke Gechi | আটকে গেছি
গত সপ্তাতেই বলেছিলাম, জায়গা পাল্টাচ্ছে , সেটা হয়ে গেছে। পুরুলিয়া থেকে চলে এসেছি, দেশের রাজধানী শহর দিল্লীতে, দ্বারকায় । রাজধানীর বিশুদ্ধবাদীরা অবশ্য দ্বারকাকে দিল্লীর বাইরে মনে করে । টেকনিক্যালি অবশ্য তাই ই। কলকাতার যেমন সল্টলেক বা নিউ টাউন, দ্বারকা ও দিল্লীর ক্ষেত্রে সেরকমই ।
সে যাই হোক, এবারের এপিসোডে বিশেষ কিছু বলার নেই । বা অনেক কিছু বলার আছে, আগে একটু গুছিয়ে নিতে হবে নিজেকে । ঘেঁটে আছি । দিল্লীর গল্প শোনাব আপনাকে ।
এই কালীদা… ওহ কালীদা কোথায় এখানে ? একটা অচেনা , অজানা জায়গা । রাস্তায় বেরিয়ে চায়ের দোকান নেই । তবে গাদাখানেক মোমোর দোকান আছে। এখানে আবার মোমোর সাথে মেয়োনিজ দেয়, স্যুপটা দেয় না । খাবারের দোকানের জন্য বেশ অনেকটা দূরে দূরে যেতে হয় । একটু হাঁটা হয়ে যায় । এই এপিসোডটা থেকে যদি কিছু ভ্যালু addition হবে ভাবছেন , বোধহয় ভুল ভাবছেন । কোন টপিক ছাড়া , একদম খালি মাথায় আজ কথা বলতে বসেছি । ছোট্ট একটা এপিসোড ।
ইন ফ্যাক্ট এটা এপিসোডই না । কিন্তু আপনার সাথে নিজের ভাষায় কথা বলার যে আরাম , সেটা মিস করব না বলেই জাস্ট এ সপ্তায় কথা বলতে বসেছি । আজ কিছু বলব না । আজ ঊনিশে মে রাত্রে আমি রেকর্ড করছি এপিসোড । উনিশে মে র গুরুত্ব জানেন ? দুটো এপিসোডের লিংক দিলাম ডেস্ক্রিপশনে । একুশে ফেব্রুয়ারি যতটা মনে করা ঊনিশে মে কে ততটা মনে করা হয় কি ? কলকাতার খবরের কাগজ , টিভিতে কতটা কথা হয় এই নিয়ে ?
ভাবুন একটু । কোক স্টুডিও বাংলার ফার্স্ট সিজনে একটা গান ছিল, ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়, গানটা শুনুন আর ভাবুন একটু ।
সামনের সপ্তায় আশা করছি নিজেকে একটু গুছিয়ে নিতে পারব । কথা হবে । ভালো থাকবেন । টাটা ।
Links -
spoti.fi/3IsnRV1
spoti.fi/42QNA1P
youtu.be/QDQG0wZEPkc
Shabash Feluda Kemon Laglo Amar !!
পঁচিশে বৈশাখ গেল । পঁচিশে বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ নিয়ে বলা উচিত ছিল। ইনফ্যাক্ট আমার বাড়িতে বিশ্বভারতীর ফুল সেট রবীন্দ্ররচনাবলী আছে । কিন্তু আমার কাছে, রবীন্দ্রনাথ, ঠাকুরই থেকে গেছেন । দূর থেকে শ্রদ্ধা করি, দু একটা কবিতা, গান কানে আসলে ভালো লাগে। ব্যাস ওই টুকুই । তাই বলে রবীন্দ্রনাথ কি পুরো পুরো বাদ যাবেন ? সেটা হয় কখনো ? রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কয়েকটা দারুন পডকাস্টের খোঁজ দিলাম। ওনাদের লেটেস্ট এপিসোড শোনার অনুরোধ রইল
রবির আলোয় সাথে স্বাগতা - spoti.fi/3pzY6vk
পারু কথা by পারমিতা - spoti.fi/3LTUSud
ইচ্ছে উড়ান - spoti.fi/3O18A0Y
Rang Tulir Satyajit
লিটল ম্যাগাজিনের লেখা অনবদ্য
কবীর সুমন যখন সত্যজিতের ছবি বলছেন বা আমরাও সত্যজিৎ রায়ের কথা ভাবছি, সবার প্রথমে ওনার ছায়াছবির কথাই মনে পড়ে। তারপর লেখক সত্যজিৎ। কিন্তু ওনার আঁকা দারুন সব ইলাস্ট্রেশন !! সেটা কজনের মনে পড়ে ? আজ রবীন্দ্র পরবর্তী যুগের এই বহুমুখী প্রতিভাধর মানুষটির তুলনামূলক কম আলোচিত দিক নিয়ে আমি সৃজন, আমার এই পডকাস্ট, সৃজনের পডাবলীতে, আড্ডা দেব আপনার সাথে । তবে এই আড্ডা হবে মূলত শ্রী দেবাশীষ দেবের লেখা, সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশিত "রং তুলির সত্যজিৎ" এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে।
সত্যজিৎ রায় নিজের কর্মজীবন কোন পেশায় শুরু করেছিলেন জানেন ? একজন পেশাদার আঁকিয়ে হিসাবে । যদিও পথের পাঁচালির পর চিত্রপরিচালক পরিচয়টা বাকি সব কিছুকে ঢেকে দেয় ।
ছবি আঁকার গুণটা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া । দাদু উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও বাবা সুকুমার দুজনেই পেন্টার এবং ইলাস্ট্রেটর হিসাবে পারদর্শী ছিলেন । 1940 সালে সত্যজিৎ ,শান্তিনিকেতনের কলাভবনে ভর্তি হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইকনমিক্সে গ্র্যাজুয়েশন করার পর। যদিও চার বছরের এই কোর্সের আড়াই বছর যাওয়ার পর ছেড়ে চলে এসেছিলেন কলকাতায় । তার কিছুদিন পরে 1943তে advertising agency ডি.জে কিমারে যোগ দেন জুনিয়র আর্টিস্ট হিসাবে । এই কম্পানির ম্যানেজার দিলীপ কুমার গুপ্ত, যিনি ডি.কে নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি চালু করেন প্রকাশনা সংস্থা - সিগনেট প্রেস। সিগনেটের অনেক অনেক কাজের মধ্যে একটা ছিল "আম আঁটির ভেঁপু" । এই আম আঁটির ভেঁপুর ইলাস্ট্রেশন করতে করতেই মাথায় আসে পথের পাঁচালির । যে ছবি মুক্তি পায় 1955 এ। তারপর তো বাকিটা ইতিহাস। সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই ছেড়ে দিয়েছেন বিজ্ঞাপন সংস্থার চাকরি। 1961 তিনি ফিরিয়ে আনেন বন্ধ হয়ে যাওয়া মাসিক পত্রিকা সন্দেশ । তাই সিনেমার পোস্টার, বুকলেট, টাইটেল কার্ড এসবের পাশাপাশি কভার, ইলাস্ট্রেশন, লোগো, লেটারিং এসবেও তাকে বেশ ভালো ভাবেই পাওয়া গেল ।
রঙ তুলির সত্যজিৎ এই বইতে চারটে চ্যাপ্টার আছে - প্রচ্ছদ, অলঙ্করণ, অক্ষর শিল্প, সিনেমার নেপথ্যে।
সত্যজিতের প্রথম প্রকাশিত ডিজাইন ছিল তার বাবা, সুকুমার রায়ের পাগলা দাশুর প্রচ্ছদ। মনে রাখতে হবে পাগলা দাশু কিন্তু সুকুমারের জীবদ্দশায় প্রকাশ পায়নি। সেটা 1940 সাল । সত্যজিৎ তখন সবে কলা ভবনে ভর্তি হয়েছেন ।
এরপর দিলীপ কুমার গুপ্তর সিগনেট প্রেস এবং তারপরে আরও অনেক প্রকাশনা সংস্থার হয়ে প্রচ্ছদ এবং ইলাস্ট্রেশন । তবে সেরা কাজ গুলো বেশিরভাগই বোধহয় সিগনেটের বইগুলোতে দেখা যায়। আমরা যারা সিগনেটের জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন বা রূপসী বাংলা পড়েছি, কতজন খেয়াল করেছি যে এই কালজয়ী বইগুলোর প্রচ্ছদ সত্যজিতের করা। ইন ফ্যাক্ট , এই দুটো বইয়ের টাইটেল পেজেও তুলির সামান্য আঁচড়ে পুরো একটা বই সম্পর্কে ধারনা করে দেওয়া যায়, সেটা তিনি দেখিয়েছেন । এছাড়াও উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার, লীলা মজুমদার সহ আরো অনেকের বইতেই প্রচ্ছদ তাঁর করা। এর মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য জিম করবেটের লেখার অনুবাদ কুমায়ুনের মানুষখেকো বাঘ । বাঘের গায়ে গুলি লাগলে যেমন হয়, তেমন ভাবে ডোরাকাটার মধ্যে গুলি এক দিক দিয়ে ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বেরিয়েছে এটা প্রচ্ছদে দারুন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তবে একটা সময়ের পরে , যখন সিনেমা আর লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ওনার করা কভার মূলত দেখা যেতে লাগল ওনার নিজের বইগুলোতে - ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু আর সন্দেশ । রঙ তুলির সত্যজিৎ - এই বইতে খুব ডিটেলে বলা আছে এটা নিয়ে ।
বইয়ের পরের চ্যাপ্টার অলঙ্করণ । আমরা যারা ছোট থেকে সত্যজিতের বই পড়ে অভ্যস্ত, আমরা জানি পাতায় পাতায় ওনার আঁকা ছবি, গল্পটা ভিসুয়ালাইজ করতে কতটা সাহায্য করে । সত্যজিৎ নিজেকে পেন্টারের বদলে ইলাস্ট্রেটর হিসাবে ভাবতেই পছন্দ করতেন । সিগনেটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজই ওনার করা। সুকুমার আর উপেন্দ্রকিশোরের বইগুলোতে অনেক সময়েই মূল আকার সাথে সাযুজ্য রেখে নিজের স্বকীয়তা সৃষ্টি করেছেন। আবার যদি জটায়ুকে দেখা যায়, সোনার কেল্লা সিনেমা বানানোর আগের জটায়ু আর পরের জটায়ুর ইলাস্ট্রেশনে পরিবর্তন খুব সহজেই চোখে পড়ে । পরের জটায়ু অনেক বেশি সন্তোষ দত্ত ঘেঁষা । তবে ফেলুদার ইলাস্ট্রেশনে কিন্তু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আদল খুব একটা পাওয়া যায় না। এছাড়াও ওনার আঁকায় , কলমের আঁচড়ের দক্ষতায় , আলো আঁধারি খুব চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে । আনন্দমেলায় শঙ্কুর জন্য অনেক রঙিন ইলাস্ট্রেশন ও করেছেন উনি।
বইয়ের পরের চ্যাপ্টার অক্ষর শিল্প। দেশ পত্রিকা থেকে শুরু করে নন্দন সব লোগোতেই ওনার ক্যালিগ্রাফির দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায় । সন্দেশ বা এক্ষনের মতন পত্রিকাই হোক বা ওনার নিজের গল্পের বই । শান্তিনিকেতনে বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়ের কাছে শেখা ক্যালিগ্রাফির সফল প্রয়োগ করেছেন বারবার । যেগুলো সেই সময়ে ছাপা হওয়া কবিতার বইগুলোকে নিয়ে ...
Bideshi Ganer Banglayan
Transcript -
আমার বেড়ে ওঠা মফস্বল শহর বসিরহাটে । সে সময় এখনকার মতন ইন্টারনেট ছিল না, ফলে, গান বাজনা সম্পর্কে জ্ঞান মূলত বাংলা ও টিভি-সিনেমার দৌলতে হিন্দি এই অব্দিই আটকে ছিল। কলেজে আসার পর, ইংরেজি গান নিয়ে খুব সামান্য ধারনা হয়। অথচ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গান শুনেছি, বাংলা বা হিন্দিতে, যে গুলো মূলত বিদেশি গানের ওপর বেস করে বানানো। আজ সৃজনের পডাবলিতে, আমি সৃজন, আপনার সাথে আড্ডা দেব এরকমই কয়েকটা গান নিয়ে যেগুলো আসলে ইংরেজি বা অন্য ভাষায় গান হলেও, সেই বিদেশি কাঠামোতে যখন বাংলার নরম উর্বর মাটির প্রলেপ পড়েছে, সেগুলো হয়ে উঠেছে বাঙালির নিজের গান ।
চন্দ্রবিন্দুর মৌনমুখরতা আমি আগে শুনেছি, পরে সাউন্ড অফ সাইলেন্স । তার ও পরে শুনছি সুমনের স্তব্ধতার গান । সাইমন - গারফ্যাংকলের sound of silence কালজয়ী একটা গান । শুরু হচ্ছে - হ্যালো ডার্কনেস মাই ওল্ড ফ্রেন্ড , আই হ্যাভ কাম টু টক উইথ এগেইন । সুমন বাংলায় করলেন - আজ আমি ফিরে এসেছি, তোমার পাশে বসেছি । চন্দ্রবিন্দুর ক্ষেত্রে সেটাই হয়ে গেল - ক্ষনিকের এই স্তব্ধতা, দৃষ্টির নিবদ্ধতা ,এলোমেলো হওয়া চুলগুলো, নিয়মিত অবাধ্যতা - শুধু এই টুকু অংশই একটা ছোটগল্প হতে পারে। কবীর সুমন আমার খুব প্রিয় গায়ক । আরো বেশি করে প্রিয় লিরিসিস্ট । কিন্তু এই গানটার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে, সুমন কিছুটা আক্ষরিক অনুবাদের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন । অন্যদিকে সাউন্ড অফ সাইলেন্সের প্রতিশব্দ বাংলায় মৌনমুখরতা আমায় কিন্তু বেশি টেনেছে । in fact, মৌনমুখরতা, মূল গানের ছাঁচের ওপর বসানো চন্দ্রবিন্দুর নিজের একটা গান বলা যেতেই পারে । "হতে পারে এটা অভিনয়, তবু এইটুকু মন্দ নয়" এই একটা লাইন তো জাস্ট বাঁধিয়ে রাখার মতন। বা বলা যায় পুরো গানের কথাগুলোই ।
কদিন আগেই হ্যারি বেলাফন্টে চলে গেলেন । ওনার একটা গান নিয়ে বলি - জামাইকা ফেয়ারওয়েল । পৃথিবী বিখ্যাত গান । সেটার সব থেকে জনপ্রিয় বাংলা ভার্সন - পথের প্রান্তে ওই সুদুর গাঁয় । বেলাফন্টে গাইছেন বিচ্ছেদের, বিষাদের সুর - I am sad to say I am on my way , won't be back for many a day. রঞ্জনপ্রসাদ গাইলেন - কোন সুদূর সেই স্বপ্নপুর, মোর মন যে গায় ঘরে ফেরার সুর । ঘর ছেড়ে চলে যাওয়া আর ঘরে ফেরা দুটো জাস্ট আপোজিট ফিলিং। অথচ একদম এক সুরে কেমন চাকতি চাকতি মিলে যায় । রঞ্জনপ্রসাদ ছাড়াও আরো অনেকে এই গানের ওপর বাংলা কথা বসিয়েছেন নিজের মতন করে, তবে জামাইকা ফেয়ারওয়েলের আমার সব থেকে প্রিয় বাংলা ভার্সন তালপাতার সেপাইয়ের কলকাতা ফেয়ারওয়েল । বেলাফন্টের গান আমাকে যত না কষ্ট দেয়, তার থেকে বেশি কাঁদায় কলকাতা ফেয়ারওয়েল । শুনলেই বুকের ভেতরটা মুচড়ে ওঠে । এমনিতেই এখন বাড়ি থেকে সাড়ে তিনশ কিলোমিটার দূরে আছি, সামনের মাস থেকে সেটা দেড় হাজার কিলোমিটার হতে চলেছে । আপনার সাথে এই আড্ডাটাও অনিয়মিত হতে চলেছে বেশ কিছুদিন, যতদিন না একটু সেটল করে যাচ্ছি । সে সব নিয়ে অন্য একদিন আড্ডা দেব আজ গান নিয়ে বলি।
সাহেবি গানের বাংলায়ন নিয়ে কথা হবে আর সেই এপিসোডে অঞ্জন দত্তের নাম না নিলে অপরাধ হবে । জন ডেনভারের কান্ট্রি রোড টেক মি হোম হয়ে যায় ঘর, ফেরা হয়নি আমার ঘর । লিওনার্ড কোহেনের সিস্টার অফ মার্সি হয়ে যায় অঞ্জনের শুনতে কি চাও , মৌলালির মালা, কলকাতা 16 র anglo ইন্ডিয়ান যার সাহেবি জিন থাকলেও আদ্যোপান্ত বাঙালি।
বাজারে গিয়ে আমি যদি আপনাকে বলি আলু, পেঁয়াজ, টম্যাটো, লঙ্কা এই সব বাঙালির কমন সবজি আসলে বিদেশি এবং শশাঙ্ক ছেড়ে দেই, সিরাজউদদৌলার সময়েও বাংলায় পাওয়া যেত না, আপনি হয়ত অবাক হবেন। অথচ এখন এগুলো সবই পুরো দস্তুর বাঙালি খাবার হয়ে উঠেছে, এগুলো ছাড়া বাঙালি কোন খাবার ভাবাই কঠিন হয়ে যায়। বিদেশি গান ও তেমনি বাংলা লিরিকের সাথে প্রেম করে antony ফিরিঙ্গির মতন, সাহেবিয়ানা ঝেড়ে ফেলে, দিব্বি বাংলা গান হয়ে গেছে । তাই গলা ছেড়ে গাইতেই পারি - আমি যা কিছু মহান বরণ করেছি বিনম্র শ্রদ্ধায়, মেশে তেরো নদী সাত সাগরের জল গঙ্গায় পদ্মায় ।
গান নিয়ে কথা হবে আর রবীন্দ্রনাথ আসবেন না সেটা হয় না । পুরানো সেই দিনের কথা , ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে এরকম কয়েকটা গানে, বিদেশি গানের কাঠামো ব্যবহার হলেও গানগুলো ভীষণভাবেই আমাদের নিজস্ব - বাংলার , বাঙালির।
এপিসোড বড় করব না, অনেক গান বাদ পড়ে গেল। তবে আমি তো আর ডেটাবেস বানাতে বসিনি, আপনার সাথে আড্ডা দিতে বসেছি । আর এই এপিসোডে, যে গান গুলো নিয়ে কথা হল, সেগুলো কেটে কেটে ঢোকানো যেত, কিন্তু কোনটা কপিরাইটের ফাঁদে পড়বে জানা নেই । তাই সে রাস্তায় গেলাম না , সব গুলোই ইউটিউব বা স্পটিফাইতে পাওয়া যাবে। সময় পেলে শুনে দেখতে পারেন।
কেমন লাগল এই এপিসোড ? জানাবেন আমাকে !
The Eken Ruddhaswas Rajasthan kemon dekhlam
Eken Babu title track credit : SVF / Hoichoi / Mayukh Mainak
Original track link : youtu.be/LN1WXzR95FM
Charok, Gajan, Tarakeshwar aar Tero Parboner Itikatha by Jahar Sarkar
Cover pic : Arindam Dutta
Indubala Bhater Hotel
Indubala Bhater Hotel , Indubala Go কুমড়ো ফুলের বড়া বিউলির ডাল ছ্যাচড়া আম তেল মালপোয়া চিংড়ির হলুদ গালা ঝাল চন্দ্রপুলি কচু বাটা
এই হল ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের আটটা চ্যাপ্টার, বইয়ের। আমি বই সাধারণত ফিজিক্যাল বই, হাতে নিয়ে আরাম করে পড়তে পছন্দ করি। ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের এত বেশি সুখ্যাতি দেখেছিলাম ফেসবুকে, হাল্কা একটু সন্দেহ হয়েছিল, তাই আমি কিন্ডল ই-বুক কিনেছিলাম। পরে অবশ্য আপশোস হয়েছিল, মনে হয়েছিল বইটা হার্ড কপি কিনলেই ভালো হত। এবার হইচইতে দেখলাম ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। কি মনে হল, চলুন আজ সেটা নিয়েই আপনার সাথে আড্ডা দেওয়া যাক সৃজনের পডাবলীতে। “ট্যুরিস্ট হয়ে নিজের বাড়ি যেতে ভালো লাগে না” লাস্ট এপিসোডের একটা লাইনে রিভিউ ফিনিশ। এর আগে অব্দি মনে হচ্ছিল, বইতে এটা পড়েছিলাম, দেখালো না কেন, খুলনার লোক ঢাকাই ভাষায় কথা বলছে কেন এরকম। স্পেশালি , ফার্স্ট চারটে এপিসোডের সময়। শেষ চারটে এপিসোডের আগে আমি পাঠান দেখলাম প্রাইমে। তারপর ইন্দুবালার কোন খুঁত এমনিতেই কম মনে হচ্ছিল। ক্লাসের ফার্স্ট বয় যে হয় সে ইতিহাস , বাংলা এই সব সাবজেক্টে ভালো করে বলেই ফার্স্ট হয়। ম্যাথস, সায়েন্সে তো ক্লাসের প্রথম দিকের সবাই কম বেশি ভালোই হয়। ইন্দুবালা ভাতের হোটেল ওয়েব সিরিজ খুব খুব ভালো হওয়া সত্ত্বেও ফার্স্ট গার্ল বলা যাবে না। কেন বলা যাবে না বলি - দু এক দিন আগেই ইন্দুবালা ভাতের হোটেল এই বইয়ের লেখক কল্লোল লাহিড়ীর অন্য একটা বই নিয়ে লেখায় ওনার জার্নি নিয়ে লেখা আছে। সেখানে দুটো জায়গার নাম আছে - শিবহাটি আর আরবেলিয়া, দুটোই বসিরহাট শহরের কাছে, দুটো জায়গাই বসিরহাট মহকুমার পার্ট। বসিরহাট থেকে ঘোজাডাঙ্গা বর্ডার হার্ডলি দশ কিলোমিটার মতন হবে। উনি নিজে খুলনার ভাষা, সংস্কৃতি, ফুড হ্যাবিট ভালোই জানেন। আমার ও কিছুটা জানা আছে, কারন আমার বেড়ে ওঠার শহর - বসিরহাট। স্বাভাবিক ভাবেই, যখন বইতে চুই ঝালের কথা বলা হচ্ছে, ইছামতির কথা বলা হচ্ছে, আমি খুব easily relate করতে পারছি। ওয়েব সিরিজ খুবই ভালো, তবে রিলেট করতে পারলাম না। খুলনা পেলাম না , ছুঁই ঝাল পেলাম না। খুলনার লোকের ডায়লেক্ট আর ঢাকার ডায়লেক্ট এক নয় , সেটা লেখক কেন পরিচালককে বললেন না সেটা ভেবে অবাক হলাম । এই হইচই ই তো এতো এতো বাংলাদেশি কন্টেন্ট প্রোডিউস করছে, এই ডায়লেক্ট নিয়ে সাহায্য, ওনাদের বাংলাদেশ কাউন্টার পার্ট যারা আছেন, তাদের থেকে কি পেতেন না ? কি জানি । কোক স্টুডিওর মুড়ির টিন গানে বাংলাদেশের তিনটে ডায়লেক্ট ব্যবহার হয়েছে । সিলেটি আর চাটগাইয়া কে উপভাষা না বলে ভাষাই বলা যায় । খুলনার টা বোধ হয় ভাষা নয় । সে যেটাই হোক, খুলনার লোকের মুখে খুলনার ভাষা না দিয়ে টিপিক্যাল বাঙাল ভাষা হিসাবে যেটা আমরা জানি সেটার ব্যবহার ওয়েব সিরিজটার একটা বড় দুর্বলতা । আর এই সিরিজের বিরাট বড় সম্পদ - গান গুলো। একটাও জোর করে ঢোকানে বলে মনে হয়নি। তবে গান নিয়ে কিছু বিতর্ক ছিল, হাল্কা স্বজনপোষনের অভিযোগ ছিল। তবে দর্শক হিসাবে , rather শ্রোতা হিসাবে আমার ভিতরের খবরে কি দরকার। ফাইনাল প্রোডাক্ট ভালো হলেই ভালো। গানের পাশাপাশি এডিটিং এর আলাদা করে প্রশংসা করব। পুরো সিরিজ জুড়ে অসংখ্য জাম্পকাট - তাতে গল্পে কোন ঝটকা লাগে নি। আমি যদি বইটা না পড়ে সিরিজটা দেখতাম, আমার বিশ্বাস আরো ভালো লাগত। বইটা পড়তে পড়তে খুব রিলেট করে নিয়েছিলাম। নিজের মনে একটা ছবি আঁকা হয়ে গেছিল, সেটা দেখেছি, অনেক কিছুই মেলেনি। ইন্দুবালার নিজের হাতে লাগানো কুমড়ো শাক রান্না করে হোটেল শুরু করার ব্যাপারটা রাখা যেতে পারত। “চিংড়ির হলুদ গোলা জল” এই গল্পটা পর্দায় খুব খাপছাড়া লেগেছে। গল্পে কিন্তু খুব প্রয়োজনীয় একটা অংশ। খুলনার মানুষের মুখে বাঙাল ভাষা তো কানে লেগেছে, এটা তো আগে বলেইছি। কিন্তু এরকম খুঁতখুঁতানি এড়িয়ে আমি বলব , দেখুন - যদি না ইতিমধ্যে দেখে থাকেন, আর দেখতে ইচ্ছে না করলে করলে বইটা পড়ুন। সাম্প্রতিক অতীতের খুব ভালো কাজ গুলোর একটা। মিস করবেন না। আর একটা খুব ভালো ওয়েব সিরিজ দেখলাম - ডাকঘর, ওটা নিয়েও বলব একদিন । যদি মনে হয় এই এপিসোড আপনার ভালো লেগেছে, তবে আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, whatsapp এ শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর ফলো, সাবস্ক্রাইব এগুলো করে রাখবেন। তাহলে এপিসোড আসলে মিস করবেন না।
Duarsini Bandhdi / Offbeat Purulia / Part 4
লোকেশনটা ঝালদা থেকে কালিমাটি মোড়ের মধ্যে কোথাও , আরো স্পেসিফিক্যালি বললে জারগো আর কালিমাটির মধ্যে , গুগল ম্যাপে ম্যাক্সিমাম zoom করে পাচ্ছি জায়গার নাম বান্ধডি।
দেবী দুয়ারসিনি, অখন্ড মানভূম শুধু নয়, পুরো রাঢ় বাংলাতেই ছড়িয়ে আছেন। দুয়ারসিনি বা দ্বারবাসিনী, প্রচলিত লোক দেবতা। ফিজিক্যাল রূপ সেভাবে পাওয়া যায় না , বাংলার আরো অনেক লোক দেবতার মতন, পাথরেই পুজো হয়। যদিও কোথাও কোথাও দেবী দুয়ারসিনি, দেবী দুর্গার সাথে বা দুর্গার শেপে মিশে গেছেন।
কেমন লাগল আজকের এপিসোড ? ভালো লাগলে এপিসোডের লিংক বন্ধুবান্ধবের সাথে ফেসবুকে , whatsapp এ শেয়ার করতে পারেন। তাহলে আপনার কোন বন্ধু , আত্মীয় বা পরিচিত কেউ, যে ঘুরতে ভালোবাসে, পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে এলে একটা নতুন ঘোরার জায়গা পেয়ে যাবেন।
আর এরকম আরো এপিসোড শুনতে চাইলে, যেখানে শুনছেন এই এপিসোড, সেখানে ফলো, সাবস্ক্রাইব এগুলো করে রাখবেন , তাহলে নতুন এপিসোড এলে মিস হয়ে যাবে না।
Location: goo.gl/maps/5wjCgcKTKXWsEpcY6
Haar Jeet : Story by Rajib Pathak
গল্প পাঠ সৃজন
8th March : International Women's Day , Holi, Shab e Barat - 3 festivals in a single day
Sandhya Bhasha by Paromita | সান্ধ্যভাষা likhechhen Paromita
একদিন তোমার একটা গোটা সন্ধ্যার
নাম হব আমি ।
আমি নেই ।
অথচ ছায়া হয়ে আমি ..
ছেয়ে আছি আমি ।
একটা গোটা সন্ধ্যা সেদিন শুধুই আমিময়।
কারণ আমি নেই ….
ছেড়ে গেছি কোন জ্বলজ্বলে স্মৃতি নয়, কিছু স্তব্ধতা
আর কোন অচেনা সুবাস ।
গোটানো হয়ে গেছে সান্ধ্য আসর ।
তুমি তখন রাজপথে …
অতিন্দ্রীয় অনুভব 'আমি' হয়ে
পায়ে পায়ে হাঁটছি তোমার ।
সেই চপলমতি রাধাভিমানী মেয়েটি ততক্ষণে
লিখে রেখে গেছে ঠিকানায় নিরুদ্দেশ তার ।
তোমার মুখে তখন জীবনানন্দ
''এ পৃথিবী একবার পায় তারে ,পায় না'কো আর।''
অনুভব করলাম ক্রমশঃ
তোমার পরাবাস্তবতার ভাষা হয়ে উঠছি আমি ।
চলে যাবার পর ।
-পারমিতা-
রাতের ডেস্ক
২৬/২/২৩